টিউশনির টাকায় অনুশীলনে জেলায় যেতেন মেহেদী, স্বপ্ন এখন জাতীয় দলের
প্রকাশ : ১৮ জুলাই ২০২৩, ১৮:২০
টিউশনির টাকায় অনুশীলনে জেলায় যেতেন মেহেদী, স্বপ্ন এখন জাতীয় দলের
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

পরিবারের অভাব অনটনের কারণে টিউশনি করিয়ে প্রতিদিন ৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ক্রিকেট অনুশীলন করতে মেহেদী যেতেন জেলা স্টেডিয়ামে। অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর পরিশ্রমের ফলে এ বছর সুযোগ হয়েছে ঢাকা প্রথম বিভাগ ক্রিকেট দলে।


মেহেদী হাসানের বাড়ি কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায়। তিনি রমনা মডেল ইউনিয়নের জোড়গাছ মণ্ডলপাড়া এলাকার মো. নুর ইসলামের ছেলে। বাবা ছিলেন ব্যবসায়ী, চালের ব্যবসা করতেন। অসুস্থ হওয়ার পর থেকে বাড়িতেই আছেন।


মেহেদী ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট অনুরাগী ছিলেন। এসএসসি পরীক্ষার পর ক্রিকেটেই হয়ে ওঠে তার ধ্যান-জ্ঞান-স্বপ্ন। তারপর শুরু করেন গভীর অনুশীলন। তবে পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় তার স্বপ্নপূরণের পথটা ছিল ভিন্ন।


অদম্য এই ক্রিকেটার ২০১৭ সালে রংপুর রাইডার্স পেসার হান্টে এক হাজার জনের মধ্যে ৫ম হয়ে কুড়িগ্রাম জেলা দলে অনূর্ধ্ব ১৮তে সুযোগ পান। এরপরই তার অক্লান্ত পরিশ্রমে শুরু হয় নতুন এক ক্যারিয়ার। জেলায় ভালো পারফামেন্স করে জায়গা করে নেন রংপুর বিভাগে। এরপর বিভাগীয় পর্যায়ে ৫ ম্যাচ খেলে তুলে নেন ১৪ উইকেট। সেসময়টা বিভাগীয় দলে ছিল বেশ আলোচনায়। তারপর তাকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ক্যারিয়ার পরের অর্জন ছিল জাতীয় পর্যায়ে অনুর্ধ্ব-১৯ এ।


পরবর্তীতে গেল বছরে ঢাকা লীগে শুলশান ক্রিকেট ক্লাবে সুযোগ হয় খেলার। ওই লীগে দুর্দান্ত খেলেন তিনি।


মেহেদী ক্যারিয়ারে গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে ১৬ ম্যাচ খেলে ৪৩ উইকেট শিকার এবং ব্যাট হাতে ১৫৬ রান করেন। টানা ৮ খেলায় ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন। যা ঢাকা লীগে খুবই বিরল। এ বছর ঢাকা প্রথম বিভাগের হয়ে খেলবেন এই তারকা।


মেহেদী হাসান বিবার্তাকে বলেন, ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট খেলার প্রতি ছিল আগ্রহ। এরপর থেকেই গ্রামের মাঠে প্রতিদিন ক্রিকেট খেলতেন। তবে এসএসসি পরীক্ষার পর পুরোদমে খেলায় মনোযোগী হন। তারপর থেকেই ক্রিকেট খেলায় ক্যারিয়ার শুরু হয়।


তিনি আরও বলেন, আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে ক্রিকেট খেলাটা ছিল অনেক কষ্টের। বাবার ছিল ছোট ব্যবসা, যা দিয়ে কোনোমতে সংসার চলত। কিন্তু ক্রিকেট অনুশীলন করতে যেতে হত জেলায়। প্রতিদিন যাতায়াত খরচ বহনও প্রায় অসম্ভব ছিল। এরপর আমি টিউশনি করে যাতায়াতের খরচ যুগিয়েছি। প্রতিদিন ৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ক্রিকেট অনুশীলন করতে জেলা স্টেডিয়াম মাঠে যেতে হত। এ বছর ঢাকা প্রথম বিভাগের হয়ে খেলব।


বিবার্তা/রাফি/রোমেল/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com