টাঙ্গাইলে সনদ জালিয়াতি, চাকরি হারাচ্ছেন ১২ শিক্ষক
প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৩, ১৭:১১
টাঙ্গাইলে সনদ জালিয়াতি, চাকরি হারাচ্ছেন ১২ শিক্ষক
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলায় সনদ জালিয়াতি করায় চাকরি হারাচ্ছেন ১২ শিক্ষক। একই সঙ্গে সরকারের কাছ থেকে বেতন-ভাতাসহ গৃহিত সব টাকা তাদেরকে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরত দিতে হবে।


জানা যায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা শাখা তদন্ত করে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৬৭৮ জন শিক্ষক জাল সনদ দিয়ে চাকরি করার বিষয়টি ধরা পড়ে। মাউশি’র অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সারা দেশের ৬৭৮ জন শিক্ষককে চাকরিচ্যূত করার পাশাপাশি সরকারের কাছ থেকে নেয়া সব টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়ার সুপারিশ করা হয়।


তাদের মধ্যে টাঙ্গাইলের ১২ শিক্ষকের জন্যও একই সুপারিশ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার সুপারিশও করা হয়েছে।


মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সহকারী সচিব মো. সেলিম সিকদার কর্তৃক গত ১৮ মে তারিখে স্বাক্ষরিত তালিকা থেকে জানা যায়, টাঙ্গাইলের ১২ শিক্ষক জাল সনদ দেয়ার কারণে চাকুরি হারাচ্ছেন।


তারা হচ্ছেন- কালিহাতী উপজেলার কালিহাতী আরএস পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) মো. ইদ্রিস আলী, একই উপজেলার এলেঙ্গাস্থ শামসুল হক ডিগ্রি কলেজের দর্শন বিভাগের প্রভাষক মুহাম্মদ মসলিম উদ্দিন, নাগরপুর যদুনাথপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (গণিত ও বিজ্ঞান) মো. জাহাঙ্গীর আলম, একই উপজেলার আনোয়ারা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) মো. মাসুদ রানা, ঘাটাইলের সন্ধানপুর গণ-উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) মো. মমিনুল ইসলাম, মধুপুরের কালামাঝি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) ইমদাদুল হক, ধনবাড়ীর কদমতলী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) মোছাম্মৎ নুরুন্নাহার, গোপালপুরের নলীন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) মো. মহসিনুজ্জামান খান, ভূঞাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কৃষি) আমিনা আক্তার, মো. রকিবুল হোসেন, মো. তামামুল ইসলাম এবং সখীপুরের রাজাবাড়ী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (ইসলাম ধর্ম) ফরিদা ইয়াসমিন।


সুপারিশ অনুসারে মো. ইদ্রিস আলীর কাছ থেকে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬৬৫ টাকা, মুহাম্মদ মসলিম উদ্দিনের কাছ থেকে ৬ লাখ ২৫ হাজার ৬২৫, জাহাঙ্গীর আলমের কাছ থেকে ৩ লাখ ২৫ হাজার ১৪০, মোছাম্মৎ নুরুন্নাহারের কাছ থেকে ৫ লাখ ১৯ হাজার ৬১০, মো. মহসিনুজ্জামান খানের কাছ থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৬৫০, ফরিদা ইয়াসমিনের কাছ থেকে ৭ লাখ ৯৬ হাজার ও মো. মাসুদ রানার কাছ থেকে ৫ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ টাকা আদায়ের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া বাকি পাঁচজনের কাছ থেকে আদায়যোগ্য শূন্য টাকা দেখানো হয়েছে।


এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ জানান, নিরীক্ষা সময় পর্যন্ত হিসাব ধরা হয়েছে বিধায় শূন্য টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। পরে এমপিওভুক্ত হয়ে গৃহীত টাকাও তাদেরকে ফেরত দেয়া লাগতে পারে।


টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এনটিআরসিএর জাল সনদ দিয়ে চাকরি করায় জেলার ১২ শিক্ষকের বিরুদ্ধে অধিদপ্তর পদক্ষেপ নিয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো কোনো কাগজ তারা হাতে পাননি।


টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মুহাম্মদ আব্দুর রহিম সুজন জানান, মন্ত্রণালয় ও মাউশি’র নিরীক্ষায় বিষয়টি উঠে এসেছে। মাউশি থেকে পত্র পাওয়ার পর জেলা শিক্ষা অফিসারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।


প্রকাশ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ২০১৪-১৭ সালে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম নিরীক্ষা করা হয়। নিরীক্ষায় শিক্ষকদের জাল সনদের বিষয়টি প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট বিভাগ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়।


বিবার্তা/ইমরুল/সউদ/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com