দুর্গাপুরে ব্রিজের বেহাল অবস্থা, দুর্ভোগে ২৩ গ্রামের মানুষ
প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২৩, ১৭:১৯
দুর্গাপুরে ব্রিজের বেহাল অবস্থা, দুর্ভোগে ২৩ গ্রামের মানুষ
দুর্গাপুর (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

নেত্রকোনার দুর্গাপুরস্থ বিরিশিরি ইউনিয়নের হারিয়াউন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন খালে সেতুটি প্রায় ৯ বছর ধরে মুখ থুবড়ে পরে আছে। এতে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন দুই ইউনিয়নের অন্তত ২৩ গ্রামের মানুষ। শুষ্ক মৌসুমে এ পথে সেতুর স্থানটিতে ধান ক্ষেত দিয়ে ঘুরে যাওয়া গেলেও বর্ষা মৌসুমে যাতায়াতকারীদের চার কিলোমিটার পথ ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে।


এছাড়াও নারী-পুরুষ,বয়স্ক মানুষ ও রোগীসহ স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এ নিয়ে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় বাসিন্দারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার দাবি জানালেও এত দিনেও সেতুটি সংস্কার বা পুনঃনির্মাণের ব্যবস্থা করেনি কর্তৃপক্ষ।


স্থানীয়রা জানান, ২০১৪ সালে বন্যার পানির তোড়ে আশপাশের ২৩ গ্রামের যাতায়াতের একমাত্র সেতুটি ধসে পড়ে। এরপর ২০২০ সালের বন্যায় সড়ক থেকে বিছিন্ন হয়ে যায় সেতুটি। ফলে গ্রামীণ জনপদের লোকজন ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে ঐ ধসে পড়া সেতুটি বছরের পর বছর পার হলেও নির্মাণের এখনও কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি বলে জানান স্থানীয়রা।


এতে দক্ষিন জাগিরপাড়া, নাওদাড়া, জাঙ্গালিয়া কান্দা, ভাদুয়া, মুন্সিপাড়া, নন্দেরছটি, পূর্বনন্দেরছটি, বন্ধউসান, গৌরাখালী, শাহাপুর, কৃষ্ণপুর, আটলা, নিশ্চিন্তপুর, বারই পাড়া, হারিয়াউন্দসহ প্রায় ২৩টি গ্রামের মানুষের ভোগান্তি চরম আকারে ধারণ করেছে। প্রায় ৯ বছর ধরে এভাবে পড়ে থাকা সেতুটি কবে নির্মিত হবে এমন প্রশ্ন ভুক্তভোগীদের।


সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ধসে পড়া সেতুটি সংস্কার বা পূণঃনির্মাণ না হওয়ায় জনমনে দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ। অপরদিকে ধসে পড়া সেতু ও রাস্তা-ঘাটের অবস্থা খারাপ থাকার কারণে যানবাহন ঢুকতে না পারায় এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্যও অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে।


জাগিরপাড়া গ্রামের মফিজুল ইসলাম বলেন, ছেলেমেয়েদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অসুস্থ রোগীকে চিকিৎসার জন্য শহরে নেয়া খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই দ্রুত সেতু নির্মাণ করা হলে আর ভোগান্তি থাকবে না।


কৃষক আব্দুল মতিন জানান, এখানে সেতু না থাকায় তাঁদের মতো কৃষকদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তারা কৃষিপণ্য শহরে সহজে নিয়ে যেতে পারেন না। এছাড়া কৃষিপণ্য গ্রামেই বিক্রি করতে হচ্ছে আর তাতে ভালো মূল্যও মিলছে না।


শিক্ষার্থী মোমেন আহাম্মেদ বলেন, এ সড়কে প্রতিদিন কয়েকশত ছাত্রছাত্রী স্কুল-কলেজে যাতায়াত করে। শুষ্ক মৌসুমে বেশি অসুবিধা না হলেও বর্ষা মৌসমে এদিক দিয়ে আমরা কলেজে যেতে পারি না। অন্য সড়ক হয়ে অনেক ঘুরে যেতে বাড়তি ভাড়াও গুনতে হয়। সঠিক সময়ে কলেজে যেতে হলে সময়ের অনেক আগেই বাড়ি থেকে বের হতে হয়।


এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য হাতেম আলী বলেন, সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় এলাকার মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। বিষয়টি আমরা কর্তৃপক্ষকে অনেকবার জানিয়েছি এরপরও কোন সুরাহা মেলেনি।


স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রুহু বলেন, ওই সেতুর ওপর দিয়ে শহরে যেতে মানুষ চলাচল করত। সেতু ভাঙা থাকার কারণে এলাকার লোকজন দুর্ভোগে পড়েছে। আমি অনেকবার সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে জানিয়েছি, ইঞ্জিনিয়ার বলেছেন ব্রিজ সেনশন হয়েছে।


উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ খোয়াজুর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, এই সেতুটি আমাদের না। সেতুটি (এলজিইডি) করেনি। ওই এলাকার সড়কটি এলজিইডি'র আইডিভুক্ত না, তাহলে সেখানে সেতু নির্মাণ কিভাবে করবে। তবে ওই সড়কটি (এলজিইডি) আইডিভুক্ত করার প্রস্তাবনা দিয়েছি এবং উল্টে থাকা ব্রিজটির জায়গায় একটি তিন ব্যাল্ড কালভার্ট তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে।


বিবার্তা/রফিক/এসএ



সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com