বিসিক মেলায় টাকা ছাড়া মেলে না স্টল, মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন উদ্যোক্তারা
প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২৩, ১৫:০৩
বিসিক মেলায় টাকা ছাড়া মেলে না স্টল, মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন উদ্যোক্তারা
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের হাতের নকশা জরি-পুথি বসানো কাপড় পাটজাতসহ নানান রকম পণ্য ক্রয় বিক্রয়ের প্রসার করাতে জেলা স্কুল বড়মাঠে মেলার আয়োজন করে ঠাকুরগাঁওয়ের শিল্প সহায়ক কেন্দ্র বিসিক। কিন্তু স্থানীয় উদ্যোক্তাদের ব্যবসা প্রসারে বিসিকের যে আয়োজন, সেই ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মেলায় স্থানীয় উদ্যোক্তাদের পণ্যের প্রদর্শন নেই।


শনিবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে (জেলা স্কুল বড়মাঠ) শুরু হয় বিসিক আয়োজিত দশ দিনব্যাপী ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মেলা। এ মেলা চলবে আগামী ২০মার্চ পর্যন্ত। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মাহাবুবুর রহমান। মেলা উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন।


জেলার পাঁচ উপজেলার বেশকিছু উদ্যোক্তা তাদের উৎপাদিত বাহারি পোশাক প্রসাধনী ও পণ্য নজর কারা কালেকশন বিক্রয়ে এবং ক্রেতার সাথে  সমন্বয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে স্টল বরাদ্দ নেন।  তবে ২,০০০ হাজার থেকে ৬,০০০ টাকায় স্টল বরাদ্দের কারণেই অনেকেই মেলা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে অর্থের বিনিময়ে ব্যবসায়ীরা স্টল বরাদ্দ নিয়ে বাজারের রকমারি পণ্য সামগ্রী বিক্রি করছেন মেলায় আসা দর্শনার্থীদের কাছে। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উদ্যোক্তারা। দাবী তুলেছেন সহযোগিতার।


গতকাল বিকেলে মেলায় গিয়ে দেখা যায়, দর্শক-ক্রেতাদের স্বাগত জানাতে তৈরি করা হয়েছে তোরণ। মাঠের চারদিক ঘিরে রয়েছে সারি সারি অর্ধশত স্টল। স্টলে রয়েছে চারটি তৈরি পোশাক, অঙ্গসজ্জা ও গৃহস্থালির পণ্য, গহনা, মেয়েদের ব্যাগ, খেলনা, আচার ও খাবারের পণ্য। কোনো কোনো স্টল এখনো ফাঁকা রয়েছে। স্টলগুলোতে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের পণ্য বলতে অনন্যা হস্তশিল্পের তৈরি পোশাক ও খাবার, পাটের ব্যাগ ছাড়া তেমন কোনো পণ্য দেখা যায়নি।


উদ্যোক্তা সুবর্ণ আর্ক বলেন, আমাদের জন্য একটা স্টলে ৬,০০০ টাকা ফি দিয়ে নেওয়া এবং একটি পণ্য বিক্রি করে লাভ উঠানো খুবই কস্টসাধ্য। আরেক উদ্যোক্তা প্রিয়াংকা বলেন, আমাদের দেশীয় পণ্য গুলো হাতের কাজের পণ্যগুলো মেলায় তুলে ধরেছি। আবার অনেকেই এসে ক্রয়ও করছেন। তাদের কাছে আমাদের পণ্যগুলো তুলে ধরতে পাছি বলে খুবই ভালো লাগছে। সোহেল খান নামে আরেক উদ্যোক্তা বলেন, বিসিক বা সরকারী কোন সহযোগিতা পেলে আমরা আরো কর্মসংস্থান বাড়াতে পারবো।


মাহাবুব হাসান নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘এসব মেলা স্থানীয় উদ্যোক্তাদের পণ্যের প্রচার, প্রসার ও বিপণনে সহায়তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু বিসিক আয়োজিত এ মেলায় স্থানীয় উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য না থাকায় তাঁরা এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।


মজিবর রহমান খান নামে এক দর্শনার্থী জানায়, বিসিকের মেলায় ঢাকার পণ্য দেখছি। বাণিজ্য মেলা আর এ মেলার মধ্যে আমি কোন তফাৎ খুঁজে পাচ্ছি না।


আদায়কৃত অর্থ বিসিক প্রধান কার্যালয় প্রদানের কারণেই অর্থের বিনিমের স্টল বরাদ্দের কথা স্বীকার করলেন ঠাকুরগাঁও বিসিক শিল্প নগরীর উপ-ব্যবস্থাপন নুরেল হক। তিনি জানান, বিসিকের অর্থায়নে মেলাটি হচ্ছে। আমাদের নির্দেশনায় আছে ফি নিয়ে আবার ফি টা প্রেরণ করতে হবে। যারা বিসিক থেকে নিবন্ধিত তারা ৪,৫০০ হাজার টাকা আর অনিবন্ধিত তাদের জন্য ৬,০০০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এখানে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করার জন্য আমরা ফি টা কমিয়ে দিয়েছি।


ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মেলবন্ধনেই এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে জানান জেলা প্রশাসক (ডিসি) মাহাবুবুর রহমান। তিনি বলেন, এ মেলার মাধ্যমে নিজেকে চেনানো এবং তার যে ক্রেতা তাকে চেনানো। ক্রেতা এবং বিক্রেতা যে মেইলবন্ধনের জায়গাটা সেটি তৈরী করা মূলত এ উদ্যোক্তা মেলার কাজ।


সরকার আরো দশ বছর সময় পেলে ব্যবসা-বানিজ্যের প্রসারে পূর্ণতা পাবে বলে মনে করেন ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন। তিনি বলেন, আমাদের সরকার উন্নায়নের সরকার। আর যদি দশটি বছর জনগণ আমাদের দেয় আমি লিখিত দিচ্ছি বাংলাদেশ উন্নত দেশের মধ্যে এক নম্বরে আসবে। আমাদের ফসল উৎপাদক করতে সময় লাগে না। গাছ লাগাতে সময় লাগে না। দু'তিন বছরের মধ্যে ফল পাওয়া যায়। এটা পৃথিবীর কোথাও নেই।


বিবার্তা/মিলন/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com