পৃথিবীর সবচেয়ে গভীর সমুদ্রখাতের গভীরতম বিন্দুতে নেমে রেকর্ড করলেন যুক্তরাষ্ট্রের অভিযাত্রী ভিক্টর ভেসকোভো। অজানা প্রাণ আবিষ্কারের আনন্দ তো ছিলই, কিন্তু তাকে সবচেয়ে বেশি যা অবাক করেছে তা হলো, প্লাস্টিক বর্জ্য!
প্রশান্ত মহাসাগরের মারিয়ানা ট্রেঞ্চের এই গভীরতম বিন্দুকে ‘চ্যালেঞ্জার্স ডিপ’ বলেই চেনেন অভিযাত্রীরা। গত তিন সপ্তাহে অন্তত চারবার সাবমেরিনে করে সেখানে ডুব দিয়েছিলেন ভেসকোভো। উদ্দেশ্য ছিল অজানা জল-জীবনকে জানা এবং সমুদ্র-তলদেশে পাথরের নমুনা সংগ্রহ করা।
চারবারের চেষ্টায় তিনি পৌঁছন সমুদ্রের প্রায় ১০,৯২৮ মিটার গভীরে। নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ভেসকোভোর দাবি, যেখানে এখনো মানুষের পা পড়েনি, সেখানেও ঠিকই পৌঁছেছে প্লাস্টিক।
চারবারের অভিযানে একবার টানা চার ঘণ্টা সমুদ্র তলদেশে কাটান ভেসকোভো। তিনি বলেন, সেবার লম্বা লম্বা পায়ের চিংড়ি জাতীয় এক ধরনের অদ্ভুত প্রাণী দেখেছেন। প্রায় স্বচ্ছ দেখতে সমুদ্র শসা জাতীয় প্রাণীও দেখেছেন। আরো বেশ কয়েকটি অদ্ভুত প্রাণী নজরে এসেছে তার। তবে বিষণ্ণ করেছে, এত গভীরতায় ভাঙা ধাতব খণ্ড আর প্লাস্টিকের টুকরোর উপস্থিতি।
সম্প্রতি সর্বোচ্চ শিখর মাউন্ট এভারেস্টে টন টন জঞ্জাল সরানোর খবর প্রকাশ্যে এসেছিল। তার দায় বর্তায় অভিযাত্রীদের উপরেই। কিন্তু ‘চ্যালেঞ্জার্স ডিপ’? ভেসকোভোর আগে মাত্র দু’বার এর কাছাকাছি গভীরতায় নামার সাহস দেখিয়েছে মানুষ। ১৯৬০ সালে প্রথম বার সাবমেরিন পৌঁছয় ১০,৯১২ মিটার গভীরে। সৌজন্যে মার্কিন নৌবাহিনী।
তারপরে ২০১২ সালে। সেবার কানাডার চিত্র পরিচালক জেমস ক্যামেরন ১০,৯০৮ মিটার নেমে প্রায় কাছাকাছি পৌঁছান।
জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণ, এই মুহূর্তে সাত সাগরের তলদেশে জমা জঞ্জালের পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি টন। সমুদ্র-দূষণের মাত্রা এতটাই বেশি যে গভীর সমুদ্রে ঘুরে বেড়ানো তিমি-জাতীয় প্রাণীর পেটেও মাইক্রো-প্লাস্টিক মিলছে।
ভেসকোভোর মতে, এবার মারিয়ানা ট্রেঞ্চে প্লাস্টিকের উপস্থিতি সচেতনতা বাড়াবে। মহাসমুদ্রগুলো যে ময়লা ফেলার জায়গা নয়, তা বুঝতে হবে। সমুদ্র বাঁচাতে আরো কড়া নীতি প্রণয়ন করতে হবে। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
বিবার্তা/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]