মাসুম আহমেদ। তিনি রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। করোনাভাইরাস আতঙ্ক নিয়েই আজ তিনি অফিসে যান। কিন্তু বিকেলে সরকারের পক্ষ থেকে সাধারণ ছুটির ঘোষণায় আতঙ্ক অনেকটা কেটে যায় তার। পরে ভয়কে জয় করেই বাসায় ফিরেন তিনি।
সোমবার (২৩ মার্চ) বিকেলে তিনি বিবার্তাকে বলেন, সরকার সময় উপযোগি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে এখন আমরা সাধারণ মানুষদের সচেতন হতে হবে। তা হলেই করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
মুকিত রহমানী নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, করোনা নিয়ে সরকারের উদ্যোগ ও কার্যক্রম প্রশংসনীয়। তবে হাসপাতাল-ক্লিনিকে অসুস্থ ও চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সেবা নিশ্চিতে নজর রাখতে হবে।
শুধু মাসুম ও মুকিত রহমানী নয়, আগামী ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় সাধারণ মানুষের মধ্যেও স্বস্তি ফিরেছে।
সোমবার (২৩ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর বিভিত্ত এলাকা ঘুরে এমন বিভিন্ন শ্রেণী পেশা মানুষের সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে। রাজধানীর কাওরান বাজার, ফার্মগেট, শাহবাগ, পল্টন, মতিঝিল, বাংলামটর, মালিবাগ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কর্মজীবী লোকজন কাজ শেষে বাসায় ফিরছেন। তাদের মধ্যে অনেককেই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে নিতেও দেখা গেছে।
সোমবার রাত ৮টায় মখলিস আহমদ নামের এক বাস চালক বিবার্তাকে বলেন, গত দুই দিন থেকেই বাসে যাত্রী কম। কিন্তু আজ সকাল থেকে যাত্রীর সংখ্যা একটু বেশি ছিল। আজ বিকাল পর্যন্ত যাত্রী থাকলেও সন্ধ্যা পর থেকে যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে।
তিনি আরো বলেন, সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণার খবর যাত্রীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। কর্মস্থল থেকে অনেক যাত্রীদের হাসি মুখে বাসায় ফিরতে দেখেছি।
এর আগে সোমবার (২৩ মার্চ) বিকেলে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার পর কিছু সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। আগামী ২৬ মার্চ যে সাধারণ ছুটি আছে, তার সঙ্গে সরকার ২৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। ৩ ও ৪ এপ্রিলের সাপ্তাহিক ছুটিও এর সঙ্গে যুক্ত হবে।
তিনি আরো জানান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও কাঁচাবাজার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল এবং জরুরি সেবা চালু থাকবে। করোনাভাইরাসের বিস্তৃতি ঠেকাতে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জনসাধারণকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে, তারা যেন এসময় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হয়।
জরুরি কোনো কাজ থাকলে অফিস ও আদালত অনলাইনে করার আহ্বান জানান তিনি। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গণপরিবহন পরিচালনা ও ব্যাংকের কাজ সীমিত রাখতে হবে।
তিনি আরো বলেন, নিম্ন আয়ের যে কোনো ব্যক্তিকে সহায়তা করবে সরকার। যদি তাদের কেউ আক্রান্ত হন, তাহলে ‘ঘরে ফেরো প্রকল্পে’ ব্যবস্থা নিতে পারবে।
উল্লেখ্য, দেশে নভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে আরো একজন মারা গেছেন।নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ছয়জন। এদের মধ্যে তিনজন নারী, তিনজন পুরুষ। সোমবার (২৪ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ড. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা অ্যাপসের মাধ্যমে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
মীরজাদী ফ্লোরা বলেন, দেশে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩। মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। এর মধ্যে সবশেষ যিনি মারা গেছেন তার বয়স ৬০ বছরের বেশি। এই তিনজনের মধ্যে দুই জনের ট্রাভেল হিস্ট্রি রয়েছে। একজন এসেছিলেন ভারত থেকে অপরজন এসেছিলেন বাহরাইন থেকে।
বিবার্তা/খলিল/আবদাল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]