শিরোনাম
হোয়াটসঅ্যাপে ত্রুটি, দূর থেকে নজরদারি করেছে হ্যাকাররা
প্রকাশ : ১৪ মে ২০১৯, ১৫:৫৭
হোয়াটসঅ্যাপে ত্রুটি, দূর থেকে নজরদারি করেছে হ্যাকাররা
প্রযুক্তি ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ সম্প্রতি হ্যাকারদের একটি হামলার কথা জানিয়ে ব্যবহারকারীদের সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।


ফিনান্সিয়াল টাইমের এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, হোয়াটসঅ্যাপে হামলার এই প্রযুক্তিটি তৈরি করেছে একটি ইসরাইলি নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা এনএসও গ্রুপ।


হোয়াটসঅ্যাপের স্বত্বাধিকারী সংস্থা ফেসবুক বলছে, হ্যাকাররা মেসেজিং অ্যাপটির একটি গুরুত্বপূর্ণ ত্রুটি খুঁজে পেয়েছে। সেই ত্রুটি ব্যবহার করে হ্যাকাররা দূর থেকে কিছু মোবাইল ফোনে বিশেষ নজরদারি সফটওয়ার ইন্সটল করেছে।


নির্দিষ্ট কিছু মোবাইল ফোনের হোয়াটসঅ্যাপকেই টার্গেট করা হয়েছিল। তবুও আরো নতুন সম্ভাব্য আক্রমণ প্রতিহত করতে এর একটি সমাধান ইতোমধ্যে বাজারে ছাড়া হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপের ১৫০ কোটি ব্যবহারকারীকে সাবধানতা হিসেবে দ্রুত অ্যাপটি আপডেট করে নিতে বলা হয়েছে।


আক্রমণকারী হ্যাকারদের খুব দক্ষ এবং অগ্রসর একটি গোষ্ঠী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।


এ মাসের শুরুতে এই আক্রমণ সম্পর্কে জানতে পেরেছে হোয়াটসঅ্যাপ। হ্যাকাররা এক্ষেত্রে হোয়াটসঅ্যাপের ভয়েসকল অপশন ব্যবহার করেছে।


মোবাইল ডিভাইসে ভয়েসকলের রিং বাজার পর সেটি যদি কেউ নাও উত্তর দেয় তবুও নজরদারি সফটওয়ারটি তারা ইন্সটল করতে সক্ষম হয়েছে। এমনকি অ্যাপটির ভয়েসকলের তালিকা থেকে কলটির ইতিহাস পর্যন্ত মুছে দিতে পারে তারা।


বিবিসিকে সংস্থাটি জানিয়েছে, তাদের নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মীরা প্রথম এই আক্রমণের বিষয়টি শনাক্ত করে এবং তার পরপরই বিষয়টি নিয়ে মার্কিন বিচার বিভাগ, কিছু নির্দিষ্ট নিরাপত্তা সংস্থা ও মানবাধিকার সংস্থাকে এই আক্রমণ সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে।


সংস্থাটি সাংবাদিকদের দেয়া এক লিখিত বক্তব্যে জানিয়েছে, এটি যে কোনো সরকারের সাথে কাজ করা বেসরকারি কোম্পানির কাজ, তা বোঝার মতো স্পষ্ট লক্ষণ রয়েছে এই আক্রমণে। যাদের কাজ ছিল স্পাইওয়ার বসিয়ে দূর থেকে মোবাইল ফোনের অপারেটিং সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণ নেয়া।


এনএসও গ্রুপ একটি ইসরাইলি কোম্পানি, যাদের এর আগে সাইবার অস্ত্র ডিলার বলে আখ্যা দেয়া হয়েছে। এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়ার হল পেগাসাস। এই সফটওয়ারটি কোনো মোবাইল ডিভাইস থেকে তথ্য সংগ্রহ করার ক্ষমতা রাখে। এমনকি মোবাইল ফোনটির মাইক্রোফোন ও ক্যামেরার তথ্য নিতে পারে। ফোনটির অবস্থান সম্পর্কেও তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।


এনএসও গ্রুপ এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে বিবৃতিতে বলেছে, এনএসও'র প্রযুক্তি সরকারি সংস্থা থেকে লাইসেন্স প্রাপ্ত। যার একমাত্র কাজই হল সন্ত্রাস ও অপরাধ প্রতিহত করা।


সংস্থাটি আরো জানিয়েছে, কোম্পানিটি সরাসরি প্রযুক্তিটি ব্যবহার করে না। জনগণের নিরাপত্তায় এই প্রযুক্তি কিভাবে ব্যবহার হবে সে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয় গোয়েন্দা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। এর অপব্যবহারের সকল অভিযোগ আমরা তদন্ত করি এবং ব্যবস্থা নেই। কাদের উপর এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে তাতে কোনভাবেই এনএসও'র কোন হাত নেই। এনএসও নিজে কাউকে টার্গেট করে না।


হোয়াটসঅ্যাপ বলছে, কতজন ব্যবহারকারীর উপর এই হামলা চালানো হয়েছে সেটি এখনই তারা জানাতে পারছে না।


তবে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, তারা আগেও এনএসও গ্রুপ দ্বারা আক্রমণের শিকার হয়েছে।


অ্যামনেস্টির প্রযুক্তি বিষয়ক কর্মকর্তা ডেনা ইংগলটন বলেছেন, কোনো সরকার কর্তৃক গুরুত্বপূর্ণ অ্যাক্টিভিষ্ট ও সাংবাদিকদের উপর নজরদারি করার জন্য এই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে এমন প্রচুর প্রমাণ রয়েছে।


অ্যামনেস্টি এই মুহূর্তে এনএসও গ্রুপের লাইসেন্স প্রত্যাহারের জন্য ইসরাইলে একটি আইনি লড়াই করছে। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার তেলআবিবে আদালতে একটি রিটের শুনানি রয়েছে। সূত্র: বিবিসি


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com