শিরোনাম
‘করোনার টিকা নিবন্ধনের অ্যাপ নিয়ে প্রচারিত খবর ভিত্তিহীন’
প্রকাশ : ১২ জানুয়ারি ২০২১, ২০:০০
‘করোনার টিকা নিবন্ধনের অ্যাপ নিয়ে প্রচারিত খবর ভিত্তিহীন’
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

‘২৫ জানুয়ারির মধ্যে আসতে পারে করোনার টিকা, নিবন্ধন অ্যাপে’ শীর্ষক প্রকাশিত সংবাদের প্রতি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। সংবাদে আরো বলা হয়েছে এ অ্যাপ তৈরিতে প্রায় ৯০ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে।


প্রকাশিত সংবাদটি সর্বৈব মিথ্যা, উদ্দেশ্যমূলক, ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক বিধায় জনগণের বিভ্রান্তি নিরসনকল্পে আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং প্রকৃত তথ্য নিম্নে তুলে ধরা হলো।


স্বাস্থ্য অধিদফতর কর্তৃক ভ্যাকসিনের সুষ্ঠু বিতরণ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম “সুরক্ষা”সফটওয়্যার ও অ্যাপটি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতরের নিজ জনবল দিয়ে তৈরি (In house Development) করা হচ্ছে। যেহেতু তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতরের নিজস্ব জনবল দিয়ে এই অ্যাপ তৈরি হচ্ছে সেহেতু এই সফটওয়ার ও অ্যাপ তৈরিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ কিংবা স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোনো অর্থ খরচ হবে না। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ সফটওয়ারটি তৈরি করে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে স্বাস্থ্য অধিদফতরকে ব্যবহারের জন্য সরবরাহ করবে সুতরাং “সুরক্ষা”সফটওয়ার ও অ্যাপ তৈরিতে কোনো সরকারি খরচ নেই এবং এ বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ কারো নিকট কোনো টাকাও দাবি করেনি।


উল্লেখ্য যে, এতে করে সরকারি জনবল ও সম্পদের সঠিক সমন্বয়ে সরকারি অর্থের সাশ্রয় হচ্ছে। আরো উল্লেখ থাকে যে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতর কর্তৃক ইত:পূর্বে Central Aid Management System (CAMS) নিজস্ব জনবল দিয়ে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে তৈরি করা হয়েছিল। CAMS সফটওয়ারটি বিনামূল্যে তৈরি করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে ব্যবহারের জন্য সরবরাহ করা হয়। এ সফটওয়ারটি ব্যবহারে অন্যান্য মন্ত্রণালয়/বিভাগের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।


তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ প্রসংঙ্গে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ভ্যাকসিন বিষয়ক অ্যাপ তৈরিতে এক টাকাও খরচ হচ্ছে না। করোনা টিকাগ্রহীতাদের জন্য ডাটাবেজ তৈরিতে যে অ্যাপ তৈরি করা হচ্ছে তার জন্য টাকা খরচের খবরটি সঠিক নয়।


তিনি বলেন, আইসিটি বিভাগে একটি ডাটাবেজ সফটওয়্যার আগে থেকেই তৈরি আছে। সেই ডাটাবেজের ওপর ‘সুরক্ষা প্ল্যাটফর্ম’ তৈরি করা হবে। ওটাই হবে সেই অ্যাপ। আইসিটি বিভাগে কর্মরত প্রোগ্রামাররাই (ইনহাউজ প্রোগ্রামার) অ্যাপটি তৈরি করবেন। নিজেদের জনবল, অফিস, রিসোর্স ব্যবহার করে কাজটি করা হবে। ফলে এর জন্য কোনো টাকাই খরচ হবে না। কারণ কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে অ্যাপটি তৈরির জন্য আইসিটি বিভাগ হতে কার্যাদেশ দেয়া হয়নি।


তিনি বলেন, তার দফতরের কেউই এমন তথ্য প্রকাশ করেনি মর্মে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন। তিনি মনে করেন, একটি শুভ উদ্যোগকে (ভ্যাকসিনেশন) বাধাগ্রস্ত করতে এমন সংবাদ প্রচার করা হয়েছে।


আইসিটি বিভাগের সেন্ট্রাল এইড ম্যানেজমেন্ট (ক্যামস) নামের একটি সফটওয়্যার রয়েছে। সফটওয়্যারটি আইসিটি বিভাগের প্রোগ্রামারদের একটি দল তৈরি করেছে। ওই সফটওয়্যারের মাধ্যমে করোনাকালে দেশের ৫০ লাখ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এই ক্যামস সফটওয়্যার ব্যাকএন্ডে থেকে কাজ করেছে। টাকা সুবিধাভোগীরা নগদ, বিকাশ ইত্যাদি মোবাইল আর্থিক সেবার মাধ্যমে পেয়েছেন। সেই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেই অ্যাপটি তৈরি করা হবে। যত দ্রুত সম্ভব অ্যাপটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে।


জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আইসিটি বিভাগকে বলা হয়েছে যেহেতু একটা ডাটাবেজ রেডি আছে এবং সেটা পরীক্ষিত। ফলে ওই ডাটাবেজটি ব্যবহার করে সুরক্ষা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে।


তিনি বলেন, ভ্যাকসিন দিতে হলে গ্রহীতার বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত (নাম, ঠিকানা, বয়স ইত্যাদি) থাকতে হবে। অনেক তথ্য ক্রস চেক করতে হবে। ফলে প্ল্যাটফর্ম একটা প্রয়োজন হবেই। এরই ধারাবাহিকতায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতরের তরুণ ও মেধাবী কর্মকর্তাগণ করোনা ভ্যাকসিন সুষ্ঠু বিতরণের লক্ষ্যে তাদের শতভাগ ডেডিকেশন, মেধা, সময় দিয়ে “সুরক্ষা”সফটওয়ারটি তৈরি করেছেন; যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। সংশ্লিষ্ট সকলের অনুপ্রেরণা পেলে তারা এ ধরনের উদ্ভাবনী কাজ আরো করতে উৎসাহিত হবেন। তবে এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচার করা হলে তরুণ মেধাবী কর্মকর্তারা নিরুৎসাহিত হতে পারেন এবং দেশের কল্যাণে নিত্যনতুন Innovation ও Digital Service কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে। অধিকন্তু, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদফতরের মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তাগণ কর্তৃক কারিগরি সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে হতাশার সঞ্চার করতে পারে।


এছাড়া এই অ্যাপ তৈরির জন্য আইসিটি বিভাগ অর্থ বিভাগ, স্বাস্থ্য অধিদফতর কারো কাছে টাকা চায়নি। ফলে অ্যাপ তৈরিতে ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ের বিষয়টি পুরোটাই মনগড়া।


বিবার্তা/গমেজ/জাই


সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com