‘যারা লোভ-লালসা থেকে বেঁচে থাকে তারাই সফলকাম’
প্রকাশ : ২৪ আগস্ট ২০২৩, ১১:৫৭
‘যারা লোভ-লালসা থেকে বেঁচে থাকে তারাই সফলকাম’
ধর্ম ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘যারা লোভ-লালসা থেকে বেঁচে থাকে তারাই সফলকাম।’ (সূরা হাশর, আয়াত, ৯)


রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা লোভ-লালসা থেকে বেঁচে থাকো, কেননা এ জিনিসই তোমাদের পূর্ববর্তীদের ধ্বংস করেছে এবং পরস্পরকে রক্তপাত ঘটানোর ব্যাপারে উসকিয়ে দিয়েছে। লোভ-লালসার কারণেই তারা হারামকে হালাল সাব্যস্ত করেছে।’ (মুসলিম)।


অধিক লাভের আশায় মানুষ লোভ করে থাকে। তবে লোভ-লালসার কারণে প্রাপ্তির থেকে হারানোর তালিকাই দীর্ঘ হয়ে থাকে। মানুষকে বিপদের মুখোমুখি করে লোভ। লোভের কারণে মানুষ এমন সব সমস্যার সম্মুখীন হয় যার কোনও ক্ষতি পূরণ হয় না। তাই লোভ থেকে দূরে থাকতে হবে।


লোভ-লালসা থেকে বেঁচে থাকার অন্যতম পদ্ধতি হতে পারে অল্পে তুষ্টি। অল্পে তুষ্টির গুণ অর্জন করতে পারলে মানুষ নিজের যতটুকু সম্বল রয়েছে, এতেই সন্তুষ্ট ও তৃপ্তি খোঁজার চেষ্টা করেন। অধিক প্রাপ্তি অথবা কোনও কিছু না পাওয়ার না থাকার গ্লানি তাকে ছুঁতে পারে না।


আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা তোমাদেরকে ভুলিয়ে রেখেছে।’ (সূরা আত-তাকাসুর : ১)


আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তির জীবনে আখিরাত অর্জন করাই বড় উদ্দেশ্য হয়ে থাকে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার অন্তরকে অভাব মুক্ত করে দেন। তার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার সম্পদকে সহজ করে দেন। আর দুনিয়া তার কাছে অপমান অপদস্থ হয়ে আসতে থাকে। আর যে ব্যক্তির জীবনে দুনিয়া অর্জন করাই বড় উদ্দেশ্য হয়ে থাকে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন দরিদ্রতা ও অভাব তার চোখের সামনে তুলে ধরেন এবং তার ওপর বিশৃঙ্খলা চাপিয়ে দেন। সে যতই চেষ্টা করুক না কেন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার ভাগ্যে যতটুকু দুনিয়া লিপিবদ্ধ করেছেন, তার বাইরে সে দুনিয়া হাসিল করতে পারবে না।’ (তিরমিজি)


লোভ-লালসা থেকে মুক্ত থাকার আরেকটি উপায় হলো আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করা এবং তাকওয়া অবলম্বন করা। কেউ আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করলে আল্লাহ তায়ালা তাকে এমন জীবন দান করবেন এমনভাবে রিজিক দেবেন, এতে তার আর কোনও টেনশন ভয় থাকবে না। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘কেউ যদি আল্লাহকে ভয় করে তাহলে তিনি তার জন্যে কোনো পথ তৈরি করে দেবেন এবং তাকে তিনি এমন স্থান থেকে রিজিক দেবেন, যা সে কল্পনাও করতে পারে না। -(সূরা তালাক (৬৫), আয়াত, ২-৩)


অন্য আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, ‘ যে ব্যক্তি মর্যাদা লাভ করতে চায়, (সে জেনে রাখুক-) সমস্ত মর্যাদা আল্লাহরই হাতে। -(সূরা ফাতির, (৩৫), আয়াত, ১০)


হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, কিয়ামতের দিন আদম সন্তানকে পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে এক কদমও নিজের জায়গা থেকে সামনে নড়তে দেওয়া হবে না। তা হলো-


১) তার জীবনকাল কিভাবে অতিবাহিত করেছে,


২) যৌবনের সময়টা কিভাবে ব্যয় করেছে, ৩) ধন সম্পদ কিভাবে উপার্জন করেছে,


৪) এবং তা কিভাবে ব্যয় করেছে,


৫) সে দ্বীনের (ইসলাম) যতটুকু জ্ঞান অর্জন করেছে সেই অনুযায়ী আমল করেছে কিনা বা কতটুকু করেছে। (তিরমিজি, হাদিস : ২৪১৬)


পৃথিবীতে মানুষ যা কিছুই করে, আল্লাহ তায়ালার কাছে এসবের জবাবদিহীতা করতে হবে, এই বিশ্বাস অন্তরে রাখতে হবে। হিসাব দিবসের কথা সবসময় অন্তরে থাকলে মানুষের উচ্চাকাঙ্খা কমে যাবে।


বিবার্তা/এসবি


সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com