মহানবী (সা.) যেভাবে কুরবানির গোশত বণ্টন করতেন
প্রকাশ : ২৮ জুন ২০২৩, ১৪:৪৫
মহানবী (সা.) যেভাবে কুরবানির গোশত বণ্টন করতেন
ধর্ম ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কোরবানি করা পশুর মাংস ভাগ করার একটি সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। মহানবী (সা.) কোরবানির পশুর মাংস ভাগ করার নিয়ম সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন। আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) কোরবানির মাংস একভাগ নিজের পরিবারকে খাওয়াতেন, একভাগ গরীব প্রতিবেশীদের দিতেন এবং একভাগ দিতেন গরীব-মিসকিনদের।


আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন- ‘অতঃপর তোমরা উহা হতে আহার কর এবং দুঃস্থ, অভাবগ্রস্থকে আহার করাও। (সূরা হজ্ব-২৮)। রাসূলুল্লাহ (স.) কুরবানির গোশত সম্পর্কে বলেছেন- ‘তোমরা নিজেরা খাও ও অন্যকে আহার করাও এবং সংরক্ষণ কর।’(বোখারি-৫৫৬৯)। ‘আহার করাও’ বাক্য দ্বারা অভাবগ্রস্থকে দান করা ও ধনীদের উপহার হিসেবে দেয়াকে বুঝায়।


তবে কোরআনের আয়াত ও হাদিসে ৩টি ভাগের কথা ইঙ্গিত করা হয়েছে,পরিমাণ নির্দিষ্ট করা হয়নি। রাসুলুল্লাহ (সা.) হতে পরিমাণ নির্দিষ্ট করার কোনো স্পষ্ট আমল পাওয়া যায় না। রাসুলুল্লাহর আমলে তিনি প্রত্যেক কোরবানির পশু হতে কিছু কিছু করে নিয়ে রান্না করতেন, বাকিটা পুরোটাই দান ও বিতরণ করে দিতেন।


তবে আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রা.) হতে একটি আছার (বক্তব্য) পাওয়া যায়, ‘কোরবানির পশু বা হাদি হতে ১/৩ তোমার পরিবারের জন্য, ১/৩ তোমার আত্নীয়-প্রতিবেশীর জন্য, ১/৩ গরিব মিসকিনের জন্য। তাহলে সাহাবাদের আমল থেকে পরিমাণ নির্দিষ্ট করার প্রমাণ পাওয়া যায়।’ যদি প্রয়োজন হয়, গরিব কোরবানি করেছে, পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেশি বা তার চেয়ে অভাবী আশেপাশে আর কেউ নেই তাহলে যদি পুরোটাই নিজেরা খায়, সেটাও জায়েজ। তার চেয়ে সচ্ছলদেরকে বিতরণ করতে হবে, এটা জরুরি নয়। তবে এখলাস থাকতে হবে, নিয়ত শুদ্ধ হতে হবে। সর্বোপরি কোরবানি আল্লাহর সন্তষ্টির উদ্দেশে হতে হবে। অথবা কোনো অংশই না খেয়ে পুরোটাই দান করে দিলে—এটাও জায়েজ।


আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রা.) এর একটি আছার— ‘এটা আল্লাহ পাক হতে অনুগ্রহ; কোরবানির মাংস পুরোটা নিজেরা খাওয়া যাবে, দরিদ্রদের দান করা যাবে বা পুরোটা উপহার হিসেবে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশীদের বিতরণ করা যাবে। এছাড়া ইবন মাসঊদ (রা.) কুরবানীর গোশত তিনভাগ করে একভাগ নিজেরা খেতেন, একভাগ যাকে চাইতেন তাকে খাওয়াতেন এবং একভাগ ফকির-মিসকিনকে দিতেন বলে উল্লেখ রয়েছে। ইসলামের বিভিন্ন ইমামগণও কুরবানির গোশতকে তিনভাগ করাকে মুস্তাহাব বলে উল্লেখ করেছেন।


কোরবানির মাংস আত্মীয় ও গরীবদের মাঝে বিতরণ না করাটা খুবই গর্হিত কাজ। এতে কৃপণতা প্রকাশ পায়। কারণ কোরবানির মাধ্যমে কোরবানিদাতা অহংকার থেকে নিরাপদ থাকেন এবং তার অন্তর পরিশুদ্ধ থাকে।


ইসলামি জ্ঞানে বুৎপত্তি অর্জন করা আলেমগণ বলেন, কোরবানির মাংস নিজে রেখে একা একা খাওয়া কখনোই উচিত নয়। এতে নিজের অন্তরের সীমাবদ্ধতা প্রকাশ পায়।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com