আসন্ন হজ মৌসুম নিয়ে নিজেদের পূর্ণ পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে সৌদি আরব। ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনা মহামারির পর এবারই সবচেয়ে বড় পরিসরে হজের পরিকল্পনা সাজিয়েছে দেশটি।
বৃহস্পতিবার এই পরিকল্পনার উদ্বোধন করেন মক্কা ও মদিনার পবিত্র দুই মসজিদের পরিচালনা পর্ষদের প্রধান শায়খ ড. আবদুর রহমান আল-সুদাইস। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রী ড. তাওফিক বিন ফাওজান আল-রবিয়াহ।
শায়খ আল-সুদাইস বলেন, ‘জেনারেল প্রেসিডেন্সি এবার হজ মৌসুমের সর্ববৃহৎ কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।
করোনা মহামারির সমাপ্তি ও হজযাত্রীদের স্বাভাবিক অংশগ্রহণের ঘোষণার পর সমন্বিত ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ মানের সেবা নিশ্চিত করতে কাজ করছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। ভিশন ২০৩০-এর সঙ্গে মিল রেখে অতীতের সাফল্য ও অভিজ্ঞতার আলোকে সৌদি সরকারের ২০২৪ সালের কৌশলগত লক্ষ্য বাস্তবায়নে এবারের কর্মপরিকল্পনাটি প্রস্তুত করা হয়।’
পবিত্র মসজিদুল হারামের প্রধান ইমাম বলেন, ১৪ হাজার কর্মীর পাশাপাশি এবার জেনারেল প্রেসিডেন্সির আওতায় হজের মৌসুমে আট হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী কাজ করবে। তারা পবিত্র দুই মসজিদের ১০টি ক্ষেত্রে দুই লাখের বেশি কর্মঘণ্টা সেবায় নিয়োজিত থাকবে।
মক্কা ও মদিনায় হজযাত্রীদের ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক ভ্রমণের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জেনারেল প্রেসিডেন্সির আওতায় ৪৯টি স্টেশনের মাধ্যমে বিশ্বের ৫১ ভাষায় হজযাত্রীদের অনুবাদসেবা দেওয়া হবে। তা ছাড়া মসজিদে থাকবে কোরআন পাঠ, মুখস্থ ও শিক্ষাবিষয়ক প্রগ্রামের ব্যবস্থা। সৌদির শীর্ষ আলেমদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ৩৫ হাজার ঘণ্টার প্রগ্রাম ১০ ভাষায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
** হাজিরা যেন নির্বিঘ্নে হজ সম্পন্ন করতে পারেন সেজন্য এবার রেকর্ড সংখ্যক ১৪ হাজার কর্মী মোতায়েন করবে সৌদি। এসব কর্মীর সঙ্গে থাকবেন আরও ৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক।
** সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী, এ বছর হজের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হতে পারে ২৬ জুন।
** এবারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, মক্কার হারাম শরীফ এবং মদিনার মসজিদে নববীতে বিনামূল্যে ৩ লাখ পবিত্র কোরআন বিতরণ করা হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত হাজিদের সুবিধার্থে ৫১টি ভাষায় অনুবাদক এবং গাইডের ব্যবস্থা রাখা হবে।
** কোরআন তেলাওয়াত এবং হিফজের ওপর বিভিন্ন কর্মশালা থাকবে।
** এছাড়া মক্কা ও মদিনায় ৩০ হাজার বিতরণ কেন্দ্রের মাধ্যমে— প্রতিদিন অন্তত ২ মিলিয়ন লিটার, আর সব মিলিয়ে ৪০ মিলিয়ন লিটার জমজমের পানি বিতরণ করা হবে।
** হাজিদের সুবিধার্থে মোবাইল অ্যাপস, রোবটসহ বিভিন্ন ডিজিটাল সুবিধা থাকবে।
** সবকিছুই করা হবে দুই পবিত্র মসজিদ সম্পর্কিত জেনারেল প্রেসিডেন্সির মাধ্যমে।
নিজেদের পরিকল্পনা সম্পর্কে ড. আল-সুদাইস এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘রাজ নেতৃত্বের বিজ্ঞ নেতৃবৃন্দের সমন্বিত প্রস্তুতকৃত সেবা অনুযায়ী— করোনা মহামারির শেষে এবং কয়েক লাখ হাজি ফেরানোর ঘোষণা দেওয়ার পর— এবারই হজ মৌসুমের সবচেয়ে বড় পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে।’
বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাব কমে যাওয়ায়, এ বছর হজের ক্ষেত্রে সব ধরনের বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে সৌদি আরব। ধারণা করা হচ্ছে এবার বিশ্বের ২৬ লাখ মুসল্লির ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত হবে কাবা প্রাঙ্গণ।
সূত্র: আল আরাবিয়া
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]