রমজান মাসের জন্য যেসব প্রস্তুতি এখন থেকেই নিতে হবে
প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৩, ১০:৩৭
রমজান মাসের জন্য যেসব প্রস্তুতি এখন থেকেই নিতে হবে
ধর্ম ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বৃহস্পতি কিংবা শুক্রবার রমজানের রোজা শুরু হবে। রমজান এমন একটি মাস, যার রয়েছে এত এত বৈশিষ্ট্য, এত এত মাহাত্ম্য।


রমজানের মর্যাদা অন্য সব মাসের চেয়ে বেশি। এ মাসে আল্লাহ তাআলা মানুষের সর্বোত্তম জীবন ব্যবস্থা পবিত্র কোরআনুল কারিম দান করেছেন। যাতে মানুষ এ কোরআনের আলোকে জীবন পরিচালনা করতে পারে। কেননা কোরআনের আলোকে জীবন গড়ার মাস রমজান। এ মাসে রোজাদারের জন্য অনেক নির্দেশনা রয়েছে। রমজানের প্রস্তুতিতে এ নির্দেশনাগুলো মেনে চলা আবশ্যক। তাহলো-


১. কোরআন তেলাওয়াত


অল্প সময় কিংবা অল্প পরিমাণে হলেও রমজানে প্রতিদিন পবিত্র কোরআনুল কারিম তেলাওয়াত করা। কোরআন তেলাওয়াতের সময় অবশ্যই তা বিশুদ্ধভাবে তারতিলের সঙ্গে তেলাওয়াত করা। যেটুকু পরিমাণ তেলাওয়াত করবেন তার অর্থ ও ব্যাখ্যা জেনে নেয়াও উত্তম।


২. তারাবির তেলাওয়াত


যারা খতম তারাবি পড়বেন, তাদের জন্য প্রতিদিনের কোরআন তেলাওয়াতের নির্ধারিত অংশ দেখে নেওয়া উত্তম। এতে নামাজে মনোযোগ বাড়বে।


৩. জামাতে নামাজ পড়া


এখন থেকেই প্রতিদিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা। যদিও সবসময়ই জামাতে নামাজ আদায় করা গুরুত্বপূর্ণ। ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় রমজানে মানুষের মাঝে জামাতে নামাজ পড়ার চেতনা উজ্জীবিত হয়। তাই এ সময়টিতে জামাতে নামাজের প্রতি মনোযোগী হওয়া।


৪. তারাবিহ পড়া


রমজানে নিয়মিত তারাবিহ নামাজ আদায় করা। এ নামাজের প্রসঙ্গে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের নিয়তে রমজানের রাতের (তারাবিহ) নামাজ পড়বে, তার বিগত জীবনের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ এ হাদিস থেকেই তারাবিহ নামাজের গুরুত্ব সুস্পষ্ট হয়ে যায়।


৫. রাত জেগে ইবাদত


তারাবিহ নামাজ যদিও গভীর রাতের লম্বা ক্বেরাতের ইবাদত। কিন্তু তা বিভিন্ন কারণে গভীর রাতে কিংবা দীর্ঘ সময়ে আদায় করা হয় না। তাই একাকি হলেও রমজানজুড়ে রাত জাগরণ করে জিকির-আজকার, নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত ও তওবা-ইসতেগফারে রাত অতিবাহিত করার প্রস্তুতি নেওয়া উত্তম।


৬.গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা


রমজানের নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে সব ধরনের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা জরুরি। যারা কবিরা গুনাহে অভ্যস্ত কিংবা যে কোনো গুনাহে অভ্যস্ত তারা সব ধরনের গুনাহ থেকে নিজেদের বিরত রাখার প্রস্তুতি এখন থেকে নেওয়াই জরুরি।


৭. অন্যকে ইফতার করানো


প্রতিদিন সাধ্য মোতাবেক কাউকে ইফতার করানোর প্রস্তুতি নেওয়া। রমজানে অন্যকে ইফতার করানোর ফজিলত ও সওয়াব অনেক বেশি। হাদিসে এসেছে-


হজরত যায়েদ ইবনে জুহানি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রোজাদারকে ইফতার করাল, তারও রোজাদারের ন্যায় সাওয়াব হবে; তবে (এ কারণে) রোজাদারের সাওয়াব বা নেকি বিন্দুমাত্র কমানো হবে না। (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, নাসাঈ)


রোজাদারকে ইফতার করালে তার প্রতিদান আল্লাহ তাআলা নিজের পক্ষ থেকে প্রদান করবেন, রোজাদারের পক্ষ থেকে নয়। এ কারণেই রোজাদারের কোনো নেকি হ্রাস করা হবে না। এটা বান্দার প্রতি মহান আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহ।


সুতরাং সামান্য পানি বা খাবার দিয়ে হলেও অন্যকে ইফতারে শরিক করা। অসহায়, গরিব, মুসাফির, আলিম, আত্মীয়স্বজন, পাড়া-পড়শিদের মধ্য থেকে কাউকে না কাউকে নিয়মিত ইফতার করানোর প্রস্তুতি নেওয়া।


৮. মন্দ ত্যাগ করে ভালো অভ্যাস গঠন করা


রমজানজুড়ে অন্যকে গালিগালাজ কিংবা সমালোচনা বন্ধ করে দেওয়া। হিংসা-বিদ্বেষ ও হানাহানি থেকে দূরে থাকা। অধীনস্ত কর্মচারী, ছাত্র-ছাত্রী, সন্তান-সন্ততি কিংবা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের প্রতি সদয় হওয়া। নিজেদের মধ্যে ক্ষমার অভ্যাস গড়ে তোলার প্রস্তুতি নেওয়া।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com