"যদি রাত পোহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই" এই শক্তি জাগানিয়া গান যেন আজ সত্যি হলো। ওয়াই এবং জেড জেনারেশনের সন্তানেরা যেন ফিরে পেল জাতির জনককে নতুন রূপে। আজ মনে হচ্ছে বঙ্গবন্ধু সত্যি সত্যি আলো হয়ে আমাদের সবার জীবনকে আলোকিত করতে প্রত্যাবর্তন করলেন।
এ এক দারুণ উজ্জীবনী শক্তি, এ এক দারুণ শিহরণ কিশোরদের জন্য, তরুণদের জন্য। কিশোর, তরুণ সমাজ আজ যেন সেই ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারিতে ফিরে গিয়েছে। সবাই দেখছে জীবন্ত কিংবদন্তি আলোকিত বঙ্গবন্ধু তাদের সামনে দাঁড়িয়ে। সবাইকে যেন বলছেন আসো, সবাই আসো আমরা সবাই মিলে সোনার বাংলাদেশ গড়ি; তোমরা সবাই তো এক একজন কারিগর, এক একজন আর্কিটেক্ট।
মুজিববর্ষ মানুষের জীবনে বিশেষ করে কিশোর-তরুণদের জীবনে দারুন প্রভাব ফেলবে বলে মনে করি। আমরা যারা বঙ্গবন্ধুকে দেখি নাই, মুক্তিযুদ্ধ দেখি নাই তাদের জন্য মুজিববর্ষ দেশপ্রেমের এক নতুন বার্তা বয়ে নিয়ে আসবে। মনে হচ্ছে বঙ্গবন্ধু সশরীরে এসে আমাদেরকে এক নতুন মন্ত্র দিচ্ছেন। এসো কিশোর নবীন দেশপ্রেমে কিভাবে নিজেকে উৎসর্গ করতে হয় দেখে যাও। আজ নতুন করে মানুষের মধ্যে জনগণের প্রতি ভালোবাসার, দায়বদ্ধতার বীজ বপন হলো। রাজনীতি মানেই তো শ্রেষ্ঠ নীতি নিয়ে কাজ করা জনমানুষের জন্য।
বঙ্গবন্ধু এমন একটি নাম যেই নামের মধ্যেই লুকিয়ে আছে মানুষের জন্য ভালোবাসা, আত্মত্যাগ, এবং দেশপ্রেমের প্রতিচ্ছবি। এ যেন দেশপ্রেম এবং মানুষের প্রতি ভালোবাসার এক অবিনশ্বর প্রতীক। বঙ্গবন্ধু মানেই দেশপ্রেম, বঙ্গবন্ধু মানেই আত্মত্যাগ, বঙ্গবন্ধু মানেই ভালোবাসা। বঙ্গবন্ধু আজ নতুন করে তরুণদের, কিশোরদের শিখিয়ে দিয়ে গেলেন যে সোনার বাংলাদেশ গড়তে হলে তোমাদের মত সোনার ছেলেমেয়েদেরকে দরকার।
যাদের মধ্যে এখনো খাদ আছে, সেই সব খাদ দূর করে নিখাদ হওয়ার যেন এক অনন্য আহ্বান। যাদের মধ্যে এখনো ভেজাল আছে সেই ভেজাল দূর করে নির্ভেজাল মানুষ হিসাবে মানুষের কল্যাণে, দেশের তরে নিজেদেরকে নিয়োজিত করার যেন এক উদ্দীপ্ত আহ্বান। যাদের মধ্যে এখনো বিশ্বাসঘাতকতার নষ্ট বীজ আছে সেগুলো উপড়ে ফেলে নতুনভাবে নিজেকে জন্ম দেয়ার যেন এক বলিষ্ঠ আহ্বান।
"আলোকিত মুজিব" তো কখনো অন্ধকারের বার্তা শোনাতে পারে না। এই "আলোকিত বঙ্গবন্ধু" তারই সৃষ্ট বাংলাদেশের প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে, তার প্রতিটি সন্তানের হৃদয়ে নবরূপে পরিশুদ্ধ ভাবে স্থান করে নিবে। এই আলোকিত বঙ্গবন্ধুর নতুন করে কিশোর-তরুণদের হৃদয়ে আসার খুবই প্রয়োজন ছিল।
যারা কিনা বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শের বাইরে চলে গিয়েছে তাদের বুঝতে হবে আমরা বাঙালি (বাঙ্গালী সে তো বঙ্গবন্ধুর কল্যাণেই) অনেক বেশি সৌভাগ্যবান। কারণ বঙ্গবন্ধু এই বাংলাদেশে জন্মে ছিলেন বলেই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল, বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল বলেই আমরা আজ বাঙালি, আমরা স্বাধীন, আমরা আজ মুক্ত। আর জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা এই দেশের হাল ধরেছিলেন বলেই বাংলাদেশ আজ শুধু বাংলাদেশ নয় বাংলাদেশ আজ এক "অনুকরণীয় বাংলাদেশ" , বাংলাদেশ আজ এক "মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো দেশ"।
আমার বাবা শতবর্ষী আওয়ামী লীগ কর্মী ইসাহাক আলী মাস্টার যথার্থই বলেন "বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনাকে শুধু বাংলাদেশের জন্যই বেঁচে থাকতে হবে, বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্যই বেঁচে থাকতে হবে তা নয় বরং বাংলাদেশের পারিপার্শ্বিক যে দেশগুলো আছে সেই দেশগুলোর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি লাভের জন্যও দেশরত্ন শেখ হাসিনার সুস্থ থাকা, দীর্ঘজীবী হওয়া এবং দলের নেতৃত্বে থাকা অত্যন্ত জরুরী। কারণ বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশ এখন অন্য দেশকে উন্নয়ন শিক্ষা দেয়। যে উন্নয়ন মানুষ স্বপ্নেও ভাবে নাই তা এখন চোখের সামনে দেখছে শুধুমাত্র বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনার বদৌলতে"।
দেশের ইতিহাসের ঘৃণ্যতম কালো অধ্যায়ের পরে জরাজীর্ণ বাংলাদেশের দায়িত্ব নিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা।সেই জরাজীর্ণ, তলাবিহীন বাংলাদেশ আজ অনেক বেশি পরিপূর্ণ ,অনেক বেশি স্বাবলম্বী। তবে এই উন্নয়নশীল বাংলাদেশ কে "উন্নত বাংলাদেশে" রূপান্তর করা পর্যন্ত মানবতার নেত্রী শেখ হাসিনাকে অনেক বেশি প্রয়োজন হবে। আমাদের আলফা জেনারেশনের সন্তানেরা যেন একটা উন্নত বাংলাদেশ পায় সেই লক্ষ্যে আমাদের প্রিয় নেত্রী অবিরত কাজ করে যাচ্ছেন। কৃতজ্ঞতা প্রিয় নেত্রী।
আলোময় বঙ্গবন্ধু যেন আমাদের সবার ভেতরের ময়লা আবর্জনা দূর করে দেন। আমাদেরকে নতুনভাবে তৈরি করেন। যেখানে অন্ধকারের কোন জায়গা থাকবে না। মানুষ জন্ম নিবে, মানুষ মৃত্যুবরণ করবে কিন্তু তার অন্তবর্তীকালীন সময়টা যেন মানুষ অর্থবহ করে তোলে আজ আমরা নতুন করে আলোকিত বঙ্গবন্ধুর আগমনের মধ্য দিয়ে সেই দীক্ষা নিতে চাই!
বঙ্গবন্ধুর নতুন এই আলোকবর্তিকাময় আগমন আমাদেরকে নবরূপে শিক্ষা দেবে, নতুনভাবে আলোর পথে পরিচালিত করবে। বিশেষভাবে আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনৈতিক কর্মী তারা আজকে যেন কিংবদন্তির ছোঁয়া পেলাম, কিংবদন্তির ছায়া দেখলাম। অনন্য অনুভুতি ছুয়ে যাচ্ছে হৃদয় মনে। একজন রাজনৈতিক কর্মীর জীবন সে তো মানুষের কল্যাণের জন্য নিবেদিত জীবন, একজন রাজনৈতিক কর্মীর জীবন সে তো জাতির জনকের নীতি আদর্শ বুকে ধারণ করে তার দেখানো পথে নিজেদেরকে পরিচালিত করার জীবন, একজন রাজনৈতিক কর্মীর জীবন সে তো পিতার শেখানো মন্ত্রে নিজেদেরকে দীক্ষিত করে সেই অনুযায়ী কার্য পরিচালনা করার জীবন।
আমরা যারা বঙ্গবন্ধুকে দেখি নাই আজ যেন মনে হচ্ছে কী এক ঐশ্বরিক শক্তি বলে বঙ্গবন্ধু জীবন্ত অবস্থায় আমাদের মাঝে আসছেন। আজ যে অনুভূতির সৃষ্টি হয়েছে এ অনুভূতি আমাদেরকে অদম্য করে তুলবে, এই অনুভূতি আমাদেরকে শক্তি জোগাবে, এই অনুভূতি আমাদেরকে নতুনভাবে জন্ম দিবে।
বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে "আলোকিত বঙ্গবন্ধু" হিসেবে ফিরে এসেছেন। আমরা এখন থেকে হৃদয়ে আমাদের আলোকিত বঙ্গবন্ধুকে ধারণ করব। যেখানে কোন মন্দের জায়গা থাকবেনা, যেখানে কোন দুর্নীতির জায়গা থাকবেনা, যেখানে কোন ভেজালের জায়গা থাকবেনা, যেখানে কোন লালসার জায়গা থাকবেনা, যেখানে কোন মাদকের জায়গা থাকবেনা, যেখানে কোন জঙ্গিবাদের জায়গা থাকবে না, যেখানে কোন অত্যাচারের জায়গা থাকবে না, যেখানে কোন বিশ্বাসঘাতকতার জায়গা থাকবে না।
এই মুজিব বর্ষে "আলোকিত বঙ্গবন্ধু" আমাদের সবার হৃদয়ে জায়গা করে নিক এবং সবাই আমরা কিংবদন্তির স্বপ্ন পূরণে তারই সুযোগ্য কন্যা দেশরত্নের নির্দেশনায় কাজ করে যাই। লক্ষ্য একটাই উন্নত বাংলাদেশ, সোনার বাংলাদেশ। মুজিব বর্ষ সবাইকে ছুঁয়ে যাক। মুজিব বর্ষ সবার জীবনে আলো বয়ে আনুক, আরো কল্যাণ বয়ে আনুক। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
লেখক : শিক্ষানবিস আইনজীবী, কুষ্টিয়া জজ কোট
বিবার্তা/আবদাল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]