
দেশের তিস্তা সেচ প্রকল্পের সংস্কার ও সম্প্রসারণের নামে অন্তত চার লাখ গাছ কাটছে বন বিভাগ। সংস্কারের নামে এমন কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানিয়ে এবং গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মন্তব্য করেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে দেশ এখন বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। এমন বাস্তবতায় প্রকল্প সম্প্রসারণের নামে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত অন্যায়, আত্মঘাতী ও ক্ষমার অযোগ্য। সারা দেশের তাপ প্রবাহ এ বছর ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এই পরিস্থিতিতে যখন গাছ কাটা শুধুমাত্র একটা নির্মমতা।
১৩ মে, সোমবার গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, সারা দেশের তাপপ্রবাহ এ বছর ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এ পরিস্থিতিতে এত গাছ একসঙ্গে কাটা অন্যায়। সেচ খাল সংস্কার ও সম্প্রসারণের নামে এক হাজার চারশত কোটি টাকার যে প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার, এর কোনো প্রয়োজন নাই। অপ্রয়োজনে বিপুল অর্থের অপচয় হচ্ছে। এটা কোনো কাজেই আসবে না। এজন্য আবার গাছগুলো কাটা হচ্ছে। গাছগুলো না কাটলে অর্থের অপচয় করতে পারত না।
নেতৃদ্বয় আরো বলেন, রক্ষকই যখন ভক্ষকে পরিণত হয়, তখন আর কিছুই করা যায় না। যেখানে বন বিভাগের উচিত গাছ লাগানো। সেখানে বনবিভাগ পুরো ক্যানেলকে এখন গাছশূন্য করে দুর্নীতিবাজ আমলা আর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পকেট ভরছে। সামাজিক বনায়ন প্রকল্প অনুসারে, গাছ পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হওয়ার পর কাটার কথা। আর নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করে ৫৫ শতাংশ অর্থ পাওয়ার কথা পরিচর্যাকারীদের, ২০ শতাংশ পাবে পাউবো, বাকি ২৫ শতাংশ যাবে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও খাতে। তিস্তা সেচ প্রকল্পের জন্য গাছ কাটা হলেও যারা পরিচর্যা করেছেন, তারা কিছুই জানে না। বরং জানা যায় পরিচর্যাকারীরা গাছগুলো পরিচর্যা করে বড় করলেও এখন পর্যন্ত তারা তাদের বেতনের কোনো টাকা পায়নি। গাছ বিক্রির টাকা আদৌ তারা পাবে বলে বিশ্বাস করে না। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে পুরো দেশই আজ লুটেরাদের লুটের বস্তুতে পরিণত হয়েছে।
তারা বলেন, ইতোমধ্যেই দিনাজপুর, নীলফামারী সদর, ডিমলায় বহু গাছ কাটা হয়েছে। ওই এলাকায় এর আগেও গাছ কাটা হলেও নতুন করে বনায়ন করা হয়নি। এর ফলে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটেছে এবং বিরূপ প্রভাবে তিস্তার অনেকাংশ মরুভূমি হতে চলছে। যেখানে প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে পরিবেশ রক্ষার বিষয়সমূহ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা স্বাভাবিক নিয়মের মধ্যেই অর্ন্তভুক্ত। সেখানে প্রকল্প বাস্তবায়নে এত বিপুল সংখ্যক গাছ কাটা কাদের স্বার্থে, কাদের পকেট ভারি করার স্বার্থে ? জনমনে প্রশ্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ অর্থ উপার্জনের জন্যই কি এই গাছ কাটার আয়োজন ? গাছ কাটা ও বিক্রির মাধ্যমে কাদের পকেট ভারি হচ্ছে ? কারা এভাবে পরিবেশ বিপর্যয় ঘটিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিল করছে সরকারের উচিত তদন্ত করে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা।
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপর্যয় রোধে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশ ও পরিবেশের বিরুদ্ধে কাদের স্বার্থে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
বিবার্তা/জবা
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]