দেশে সাংবাদমাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতা আছে : হানিফ
প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৫:৪০
দেশে সাংবাদমাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতা আছে : হানিফ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

দেশে সাংবাদমাধ্যমের পূর্ণ স্বাধীনতা আছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, গণমাধ্যমকর্মীরা যাতে নিবিঘ্নে কাজ করতে পারে সেজন্য আওয়ামী লীগ সরকার আন্তরিক। এই সরকারের সময়ে সাংবাদিক নিগ্রহের শিকার হয়েছে এমন নজির নেই। কেউ আইনগত অপরাধ করলে তার শাস্তি হয়েছে।


মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের ৫৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও নতুন কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, গণমাধ্যম অত্যন্ত শক্তিশালী মাধ্যম। তাই গণমাধ্যমকর্মীদেরও অত্যন্ত দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। একটা সময় বাংলাদেশে গণমাধ্যমকর্মীরা তাদের কাজকর্ম ঠিকমতো চালিয়ে যেতে পারেনি। বহু সাংবাদিক হয়রানি, নিপীড়নের শিকার হয়েছে। ২০০৪ সালে কুষ্টিয়ায় মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের এলাকা ছাড়া করা হয়েছিল, হামলা করা হয়েছিল। আজকে আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে পারি বর্তমান সরকার সাংবাদিকবান্ধব সরকার। শেখ হাসিনার সরকার যেমন জনগণবান্ধব, ঠিক তেমনি গণমাধ্যমবান্ধব।


তিনি বলেন, গণমাধ্যম হলো সমাজের দর্পণ। কারণ সমাজের চিত্র গণমাধ্যমে উঠে আসে। সমাজের সঠিক চিত্র জাতির সামনে উঠে আসে। গণমাধ্যমের মাধ্যমে সরকারের কাজ, পরিকল্পনা সম্পর্কে জাতি সুস্পষ্টভাবে জানতে পারে। পাশাপাশি সরকারের ব্যর্থতা, অনিয়ম তুলে ধরে মানুষকে সচেতন করা যায়। যার মাধ্যমে জনমত গড়ে ওঠে।



আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সাংবাদিকরা ইচ্ছেমতো বলতে পারেন, লিখতে পারেন। কিন্তু সেই লেখার আগে জানা উচিত। তিনি যে তথ্য দিচ্ছেন সেটা যাচাই-বাছাই করা উচিত। আমার মনে হয়েছে গণমাধ্যমে হলুদ সাংবাদিকতার চেয়ে জ্ঞানের কিছুটা ঘাটতি আছে।


তিনি আরো বলেন, দেশে যখন নিরাপদ সড়কের জন্য ছাত্রদের আন্দোলন চলছিল সেই সময়ে সাংবাদিক শহিদুল আলম আল জাজিরাকে সাক্ষাৎকার দিয়ে বললেন, ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ অফিসে চারজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আর দু'জন মেয়েকে হ্যারাস করা হয়েছে। আল জাজিরার রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে দেশের প্রথম সারির পত্রিকায়ও রিপোর্ট ছাপা হলো। অথচ আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা পার্টি অফিস এসে দেখেছে এরকম কিছুই হয়নি।



হানিফ বলেন বলেন, ওই ঘটনায় (রিপোর্টে) সরকারের ইমেজ নষ্ট, পার্টির ইমেজ নষ্ট, আমাদের ইমেজ নষ্ট। এটা ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে। এটা হলুদ সাংবাদিকতা। এ ধরনের ক্রাইম যারা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া সাংবাদিক নির্যাতনের মধ্যে পড়ে না। এটা ক্রিমিনাল অফেন্স। যারা ক্রিমিনাল অফেন্স করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ক্রিমিনাল অফেন্স করলে তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। এটা ভাবার কোনো কারণ নেই ক্রিমিনাল অফেন্স করার পর তার জন্য সাত খুন মাফ। রাজনীতিবিদ, সরকারি কর্মকর্তাসহ কেউ আইনগত অপরাধ করলে তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে।


সাংবাদিকদের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে হানিফ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণমাধ্যমকর্মীদের সব ধরনের সাপোর্ট দিচ্ছেন।



গত ১২ বছর সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট হওয়ার পর ১৩ হাজার ৬৯৬ জন সাংবাদিককে ৪১ কোটি ৪২ লাখ ৭০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। আমার মনে হয় মহান স্বাধীনতার এই ৫২ বছরের মধ্যে গত ১২ বছর বাদ দিলে ৪০ বছরেও সবমিলিয়ে সাংবাদিকদের এত আর্থিক সহায়তা করা হয়নি, শেখ হাসিনা একা যা করেছেন। এরপরও সুযোগ পেলে যদি লেখেন সাংবাদিকদের হয়রানি ইত্যাদি লিখেন তখন আমাদের কষ্ট হয়।


তিনি বলেন, গত ১০ বছরে চেষ্টা করেছি কখনো কোনো সাংবাদিক যাতে হয়রানির শিকার না হন। আজ পর্যন্ত আমাকে নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছি। আমি কোনো কথাই বলিনি। কাউকে কখনো ধমকও দেইনি, মামলাও করিনি। অজ্ঞতার কারণে ভুল তথ্য আসতে পারে। কিন্তু ইয়েলো জার্নালিজমকে আমরা হেট করি। এছাড়া পেশাগত কারণে কোনো সাংবাদিক হয়রানির শিকার হলে আমাদের জানালে আমরা সহায়তা করবো। কিন্তু পারিবারিকভাবে, সামাজিকভাবে কেউ মামলায় আসামি হন সেই দায়ভার তো নেয়া যায় না।


মানুষের মধ্যে নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশনে খুব বেশি লাভ হয় না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, বরং ইতিবাচক সংবাদ পরিবেশনে যে ভালো কাজ করে সে উৎসাহিত হয়। তাই ছিদ্র খুঁজে না বেড়িয়ে ভালো কাজের ব্যাপারে লেখা হয় তাহলে সমাজের অনেক কল্যাণ ও উপকার হয়।



হানিফ বলেন, সাংবাদিকরা সমাজের অংশ। আমরা মিলেমিশে সকলে দেশকে এগিয়ে নিতে চাই। দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার জন্য সাংবাদিকদের ইতিবাচক দায়িত্ব পালনের আহবান জানাচ্ছি।


উল্লেখ্য, কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাব সভাপতি রাশেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া-১ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম সারোয়ার জাহান বাদশা, কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক, বিএফইউজে মহাসচিব দীপ আজাদ, সহ সভাপতি আফরোজা আক্তার ডিউ, কোষাধ্যক্ষ খায়রুজ্জামান কামাল, কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা ও বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ বাদল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদকসোহেলরানা।


বিবার্তা/সোহেল/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com