দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন
রাজশাহীর ৬টি আসনে ১৭ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল, ৭ জনের স্থগিত
প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬:২১
রাজশাহীর ৬টি আসনে ১৭ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল, ৭ জনের স্থগিত
রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

রাজশাহীর ৬টি সংসদীয় আসনে ১৭ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। আর ৭ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্রের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি। অন্য ৩৬ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।


৩ ডিসেম্বর, রবিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়।


রাজশাহীর রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানান, রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ১১ জন। এরমধ্যে ৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা হলেন- স্বতন্ত্র প্রার্থী চিত্রনায়িকা শারমিন আক্তার নিপা মাহিয়া ওরফে মাহি, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী আয়েশা আখতার ডালিয়া, মো. আখতারুজ্জামান ও গোলাম রাব্বানী। এই ৪ জনই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। মনোনয়ন না পেয়ে তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন।


এ আসনে মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে বর্তমান এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী (আওয়ামী লীগ) মো. শামসুজ্জোহা (বিএনএম), মো. আল-সাআদ (বিএনএফ), জামাল খান দুদু (তৃণমূল বিএনপি), নুরুন্নেসা (এনপিপি), বশির আহমেদ (মুক্তিজোট) ও মো. শামসুদ্দীনের (জাতীয় পার্টি)।


রাজশাহী-২ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুর রহমান বাদশা, রেজাউন নবী আল মামুন ও আবু রায়হান মাসুদ, গণফ্রন্টের প্রার্থী মো. মনিরুজ্জামান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা মো. শাহাবুদ্দিনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল (আওয়ামী লীগ), ফজলে হোসেন বাদশা (বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি), আব্দুল্লাহ আল মাসুদ শিবলী (জাসদ), সাইফুল ইসলাম স্বপন (জাতীয় পার্টি), কামরুল হাসান (বিএনএম), ইয়াসির আলিফ বিন হাবিব (মুক্তিজোট) ও মারুফ শাহরিয়ারের (বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টি) মনোনয়নপত্র। তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মো. শামীমের মনোনয়নপত্রের সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।



রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে ৩ জনের। এরা হলেন- গণফ্রন্টের মো. মনিরুজ্জামান, স্বতন্ত্র নিপু হোসেন এবং আরেক স্বতন্ত্র জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা মো. শাহাবুদ্দিন। সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি এনপিপির প্রার্থী সইবুর রহমান ও মুক্তিজোটের প্রার্থী এনামুল হকের মনোনয়নপত্রের ব্যাপারে। বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে আসাদুজ্জামান আসাদ (আওয়ামী লীগ), বর্তমান এমপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আয়েন উদ্দিন, সোলাইমান হোসেন (জাতীয় পার্টি), বজলুর রহমান (বিএনএফ), আবদুস সালাম খান (জাতীয় পার্টি) ও মতিউর রহমান মন্টুর (বিএনএম) মনোনয়নপত্র।


রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী বাবুল হোসেনের। আর সিদ্ধান্ত আসেনি ৩ জনের। তারা হলেন- জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না (এনপিপি), মতিউর রহমান (বিএনএফ) ও আবু তালেব প্রামানিকের (জাতীয় পার্টি) মনোনয়পত্রের ব্যাপারে। আর বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে আবুল কালাম আজাদ (আওয়ামী লীগ), বর্তমান এমপি ও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হক এবং সাইফুল ইসলাম রায়হানের (বিএনএম) মনোনয়নপত্র।


রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে দুজনের। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী আহসানুল হক মাসুদ ও ওবায়দুর রহমান। বিএসপির প্রার্থী আলতাফ হোসেন মোল্লার মনোনয়নপত্রের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসেনি। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুল ওয়াদুদ দারা, আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান এমপি মনসুর রহমান, গণফ্রন্টের মখলেসুর রহমান, জাকের পার্টির শফিকুল ইসলাম, বিএনএমের শরিফুল ইসলাম ও জাতীয় পার্টির আবুল হোসেনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।


রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ছাত্রদল নেতা খাইরুল ইসলাম ও আওয়ামী লীগ কর্মী ইসরাফিল ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। বৈধ হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী রায়হানুল হক, জাসদের জুলফিকার মান্নান জামী, এনপিপির মহসিন আলী, জাকের পার্টির রিপন আলী, জাতীয় পার্টির শামসুদ্দিন রিন্টু ও বিএনএমের আবদুস সামাদের মনোনয়নপত্র।


রাজশাহীর রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানান, আগে কখনও নির্বাচিত হননি, আবার দলীয় প্রার্থীও নন এমন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সমর্থনের প্রমাণ হিসেবে নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর জমা দিতে হয়। তারা প্রার্থীদের দেওয়া এই স্বাক্ষর থেকে ১০ জন করে ভোটারের তথ্য যাচাই করেছেন। এতে কারও কারও তালিকায় গড়মিল পাওয়া গেছে। আবার কারও মামলা কিংবা ঋণসংক্রান্ত সমস্যা আছে। সেই কারণে ১৭ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। ৭ জনের ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। অন্য ৩৬টি মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।


মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় অধিকাংশ প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন।


তফসিল অনুযায়ী, সোমবার পর্যন্ত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করা যাবে ৬ থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আপিল নিষ্পত্তি করা হবে ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বৈধ প্রার্থীরা ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন। প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৮ ডিসেম্বর।


বিবার্তা/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com