খালেদা জিয়াকে হত্যা করার পরিকল্পনায় লিপ্ত রয়েছেন শেখ হাসিনা: রিজভী
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ১৭:৩৮
খালেদা জিয়াকে হত্যা করার পরিকল্পনায় লিপ্ত রয়েছেন শেখ হাসিনা: রিজভী
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

নারায়ণগঞ্জের গডফাদারের সাথে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কোনো পার্থক্য নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।


তিনি বলেন,'কয়েকদিন আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি আন্দোলন করলে তাদের হাত পুড়িয়ে দেয়া হবে। ওবায়দুল কাদের আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি করেছেন আপনার শিক্ষার আলো আছে বলে মনে করতাম এখন তো দেখছি নারায়ণগঞ্জের গডফাদারের সাথে আপনার তো কোন পার্থক্য নেই। আপনাকে কি গোটা জাতির অভিভাবক বানানো হয়েছে নাকি? এ সমস্ত কথাবার্তা তো গডফাদাররা বলে।


৫ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।


রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশের ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রীর লন্ডনের বক্তব্য সারা দুনিয়ায় জঘন্যতম দুর্গন্ধযুক্ত নর্দমার সমতুল্য। একজন রাজনীতিবিদের এহেন বক্তব্য সারা পৃথিবীতে নজীর নেই। কোন প্রকাশ্য সভায় একজন ব্যক্তির এহেন বক্তব্য অশ্রাব্য, কুশ্রী হতে পারে তা কখনো বিশ্বাস করার মতো নয়। কিন্তু শেখ হাসিনা লন্ডনে সকল রীতিনীতি, শিষ্টাচার ও সভ্যতাকে তোয়াক্কা না করে নিকৃষ্টতম ইতর ভাষায় বক্তব্য রেখেছেন।’


তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার বয়স ৭৮ বছর, আর শেখ হাসিনার বয়স ১ বছর কম অর্থাৎ ৭৭। কিন্তু দেশনেত্রীর বয়স ৮০ বছর বানিয়েছেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার বয়স যদি ৭৭ হয়, তাহলে ৮০ বছর থেকে কয় বছর কম হয়? অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কি নিজেকে কিশোরী মনে করেন? শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে বলেছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার ৮০ বছর বয়স হয়ে গেছে, তাই আর বেঁচে থাকার দরকার কি। শেখ হাসিনার বহুরৈখিক দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে আবর্তিত হয় বেগম খালেদা জিয়ার প্রাণনাশের প্রচেষ্টা। শেখ হাসিনার লন্ডনের বক্তব্যে সরাসরি তিনি স্বীকার করে নিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যা করার পরিকল্পনায় লিপ্ত রয়েছেন। গণতন্ত্রকামী মানুষের মধ্যে ভীতি তৈরি করার লক্ষ্য নিয়েই বক্তব্য দিয়েছেন শেখ হাসিনা।’


বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘শেখ হাসিনা বলেছেন, “আর রোজই শুনি এই মরে মরে, এই যায় যায়। বয়সতো ৮০’র উপরে। সময় হয়ে গেছে। তার মধ্যে অসুস্থ। এখানে এতো কান্নাকাটি করে লাভ নাই।” আল্লাহ ছাড়া কি কেউ জানে কে কখন পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবে? শেখ হাসিনা কীভাবে জানলেন “সময় হয়ে গেছে”? তার মানে তিনি দেশনেত্রীকে হত্যা করার প্রস্তুতি নিয়ে ১৮ দিন আমেরিকা—ব্রিটেনে ভ্রমণ করে দেশে ফিরেছেন। কারণ উনি তো জানেন কাকে কখন দুনিয়া থেকে সরাতে হয়, এর জন্যই তো উনি এত গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারেন। বেগম খালেদা জিয়াকে শেখ হাসিনা যে হত্যা করবেন তা আগেভাগে ঘোষণা দিলেন। যে কারণে মিথ্যা আইনি ব্যাখ্যা দিয়ে তাকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে দিচ্ছেন না। ভয়াবহ কষ্ট দিয়ে তিলে তিলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। তাঁর কিছু হলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী সরকারকে পৃথিবীর কোন শক্তি রক্ষা করতে পারবে না। দেশের জনগণ গণভবনের প্রতিটা ইট খুলে প্রলয় সৃষ্টি করবে। তাঁর এই বক্তব্য উস্কানিদানকারী রাজনীতির ময়দানকে অনিষ্টকর ও বিপজ্জনক পরিণামের দিকেই ঠেলে দিবে।’


রিজভী বলেন, ‘দেশে গাঢ় অন্ধকার সময় চলছে। এত খারাপ সময়ে বাংলাদেশ আগে কখনও নিপতিত হয়নি। গত ১৫ বছর জনগণের মাথার ওপর বসে আছে চরম প্রতিহিংসাপরায়ণ, নিষ্ঠুর, বিকারগ্রস্ত, ধিক্কৃত কথন ও বিকৃত রুচির এক স্বৈরশাসক।’


তিনি বলেন, ‘সামনে নিশ্চিত পতনের করুণ পরিণতির আতঙ্কে শেখ হাসিনার সাথে তার লুটেরা এবং গেস্টাপো বাহিনী চোখে শর্ষে ফুল দেখছে। তাদের সভ্য বচন উবে গেছে। এখন বিকারগ্রস্তের মতো প্রলাপ বকছে। দেশের জনগণ তাদের হিংস্র, উদ্ভট, বেসামাল, নির্জলা মিথ্যা কথাবার্তা শুনতে শুনতে ত্যক্তবিরক্ত। শেখ হাসিনা এবং তার দল চরম অস্তিত্ব সংকটে নিপতিত হয়েছে। এমন দেউলিয়া হয়ে গেছে যে, ওবায়দুল কাদের বলেছেন, “দিল্লি আছে আমরাও আছি। দুই সেলফিতেই বাজিমাত, তলে তলে আপস হয়ে গেছে। এক সেলফি দিল্লিতে আর এক সেলফি নিউইয়র্কে।” তার মানে তো পরিষ্কার ভোটের আর দরকার নাই। বাংলাদেশের মানুষের আর দরকার নাই। অন্যের কাঁধে চড়ে বিনা ভোটে ক্ষমতায় থাকতে চান। এই কাপালিক স্বৈরাচারী নিশিরাতের ভোটের সরকার জনগণের শত্রু। সবকিছু জেনে শুনে কেউ এই জালিম বাংলাদেশে নিপীড়ক ফ্যাসিবাদকে গোপনে সহযোগিতা করবেন না। এরা গণতান্ত্রিক বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন।


আওয়ামীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এর উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনার মনে রাখা দরকার তলে তলে গোপনে আপস হয় না, হয় ষড়যন্ত্র। পরনির্ভরশীল, কাপুরুষ ও ভীরুরাই তলে তলে আপস করে।’


সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম- মহাসচিব হাবিবুন নবী খান সোহেল, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামিমুর রহমান শামীম, সহ অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


বিবার্তা/এমই/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com