শিরোনাম
অক্টোবরেই আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলতে চায় বিএনপি
প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৩৪
অক্টোবরেই আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলতে চায় বিএনপি
মোহাম্মদ ইলিয়াস
প্রিন্ট অ-অ+

সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিরোধী রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোকে নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। দীর্ঘদিনের এই আন্দোলনের ফসল অক্টোবরেই ঘরে তুলতে চায় বিএনপি।


চূড়ান্ত আন্দোলনে যাওয়ার পূর্বে প্রস্তুতিমূলক বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তৃণমূলকে চাঙ্গা রাখতে চান দলটির হাই কমান্ড। এরই অংশ হিসেবে রোড মার্চ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিএনপির তিন সংগঠন। এছাড়া জেলা পর্যায়ে সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণার কথাও ভাবছেন তারা।


সূত্র বলছে, আগামী নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন। তফসিল ঘোষণার আগেই চলমান এক দফার আন্দোলনকে চূড়ান্তের দিকে নিয়ে যেতে চায় বিএনপি। তাই অক্টোবর মাসে রাজপথে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে লাগাতার কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দাবি আদায় করতে চায় দলটি।



চূড়ান্ত কর্মসূচির ফসল ঘরে তোলার জন্য যা যা করা দরকার তার সবকিছুই করার সাংগঠনিক প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব।



দলীয় সূত্র জানায়, লাগাতার আন্দোলনে যাওয়ার পূর্বে কর্মসূচি নির্ধারণে দফায় দফায় বৈঠক করছে বিএনপির হাইকমান্ড। এজন্য চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে তিন দিন সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরামের বৈঠক করেছে দলটি।


দলটির কয়েকজন স্থায়ী কমিটির সদস্য চিকিৎসা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজে বিদেশে অবস্থান করছেন। স্থায়ী কমিটির যে সকল সদস্য দেশে রয়েছেন তারা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় গুলশান কার্যালয় তিন দফায় বৈঠক করেছেন।


বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের এক বৈঠকে তাদের আলোচনার ভিত্তিতে চলতি মাসে জেলায় জেলায় রোডমার্চ কিংবা ঢাকাসহ বৃহত্তর ১৯ জেলায় জনসভা আয়োজনের বিষয়টি উঠে আসে। বিষয়টি প্রস্তাব আকারে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি স্থায়ী কমিটির সঙ্গে ফের বৈঠক করে কিংবা এককভাবে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবেন। তার অনুমোদন পাওয়ার পর যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র জোট ও দলগুলোর সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করবে বিএনপি।


বিএনপি সূত্র জানায়, চলমান আন্দোলন দ্রুত সফলতার দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রতিদিনই বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন। এছাড়া জেলা পর্যায়ে নেতাদের সাথেও কথা বলছেন তিনি। জেলা পর্যায়ের নেতাদের কাছে আন্দোলন সম্পর্কে জানতে চান তিনি। জেলা পর্যায়ে নেতাদের সাথে আলাপকালে আন্দোলন নিয়ে যে সকল পরামর্শ আসে তা গ্রহণ করছেন তারেক রহমান।


একদফা দাবিতে আপাতত দুদিনের রোডমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর রংপুর থেকে দিনাজপুর, ১৭ সেপ্টেম্বর বগুড়া থেকে রাজশাহীতে রোডমার্চ কর্মসূচি পালন করা হবে।

জানা গেছে, ২১ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার হয়ে সিলেট, ২৬ সেপ্টেম্বর ঝিনাইদহ থেকে যশোর হয়ে খুলনা এবং ৩০ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা, ফেনী হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রোডমার্চ করার কথা রয়েছে, যা পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে। দ্বিতীয় দফায় বরিশাল, ফরিদপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে রোডমার্চ হবে। রোডমার্চ নিয়ে দেশের তৃণমূল নেতাকর্মীদের রাজধানীতে আসার নির্দেশনা দেওয়া হবে। এরপর রাজধানীতে মহাসমাবেশ করবে বিএনপি। এ সমাবেশে ব্যাপক লোক সমাগম করার প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটির নেতাকর্মীরা।


বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বিবার্তাকে বলেন, চূড়ান্ত আন্দোলন কখন কিভাবে হবে সেটা কেউ বলতে পারে না। এটা হঠাৎ করে বিস্ফোরণের মতো জ্বলে ওঠে। আমাদের আন্দোলন তো চলছে। এখন চূড়ান্ত আন্দোলন কখন হবে সেটা সময় বলে দেবে। নিয়মিতই আমাদের কর্মসূচি চলছে। আন্দোলন সব সময় একই গতিতে চলবে এরকম তো কোনো কথা নেই। কখনো উঁচু, কখনো নিচু একেক সময় একেক রকম হয়।


বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বিবার্তাকে বলেন, আমাদের চূড়ান্ত আন্দোলন হচ্ছে জনগণকে রাস্তায় নামানো। গণঅভ্যুত্থানের পরিস্থিতি তৈরি করা। সরকারের ভূমিকার উপরে এই প্রতিক্রিয়াটা হবে। আমাদের প্রস্তুতি একেবারে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। জনগণ রাস্তায় নেমে গেছে। এখন গণঅভ্যুত্থানের জন্য চূড়ান্ত মুহূর্ত তৈরি করা। যখনই বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা করছে তার অধিকাংশই সফল হয়েছে।


বিএনপি'র যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বিবার্তাকে বলেন, আমাদের প্রস্তুতি প্রথম থেকেই ঠিক মতো রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছি। আর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের মতো স্বৈরাচার একটি দল ক্ষমতায় রয়েছে। যেটা আর কোন দল এর আগের কখনো থাকেনি। সময়ের প্রয়োজনে সময়টা বেশি লাগছে, অন্য কোন কারণে নয়। কারণ পাঁচ বছর পর পর জনগণ একটি সুযোগ পেত আগে, সেটা এই ১৫ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। সেখানে তো একটু সময় লাগবেই। চূড়ান্ত বলতে আমরা যেটা বুঝি সেটা নির্ভর করছে সরকারের আচার-আচরণের উপর। সরকার কতটুকু আগ্রাসী মনোভাব নেয় সেটার উপর নির্ভর করছে চূড়ান্ত আন্দোলন। সেটার গতি কখন আসবে তা সময় বলে দেবে। তাদের আচরণ বলে দেবে। আমরা কর্মসূচির মধ্যে রয়েছি, সামনেও নিয়মিত কর্মসূচির মধ্যেই থাকবো।


বিবার্তা/এমই/এসবি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com