অহেতুক রাজনৈতিক খেলা খেলে মানুষকে কষ্ট দেবেন না, বিএনপিকে হানিফ
প্রকাশ : ০৯ এপ্রিল ২০২৩, ১৩:৪৬
অহেতুক রাজনৈতিক খেলা খেলে মানুষকে কষ্ট দেবেন না, বিএনপিকে হানিফ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

আন্দোলনের নামে অহেতুক রাজনৈতিক খেলা খেলে মানুষকে কষ্ট না দেয়ার জন্য বিএনপি নেতাদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি।


তিনি বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন এই সরকারের অধীনে বর্তমান নির্বাচন কমিশন করবে। আপনারা যদি মনে করেন দেশের মানুষ সরকারকে পছন্দ না করে আপনাদের পছন্দ করে, তাহলে ভোটে আসেন। ভোটের মাধ্যমে জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে কারা সরকারে আসবে। কাদের দ্বারা দেশের জনগণ উপকৃত হয়, কোন সরকারের অধীনে দেশের উন্নয়ন হয় সেটা জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে।


রবিবার (৯ এপ্রিল) বেলা ১১টায় রাজধানীর পল্টন কমিউনিটি সেন্টারে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে পল্টন থানা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ইফতার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


বিদেশিদের কাছে ধরণা দিয়ে কোনো লাভ হবে না উল্লেখ করে মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, জনগণের প্রতি তাদের (বিএনপি) আস্থা নেই। জনগণের সাথে তাদের সম্পর্ক নেই। এদের আস্থা বিদেশি প্রভুদের ওপর। তারা বিদেশিদের কাছে ধরণা দেয়। তাই বিদেশি দূতাবাসগুলোতে দৌঁড়ঝাপ করে।


তিনি বলেন, ২০১২ সালে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা শুরু হয়েছিল তখন থেকে আন্দোলন করে যাচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যখন হলো তখন থেকে আন্দোলন করছে। আন্দোলন করে লাভ কোনো হয়নি। বিএনপি-জামায়াত আন্দোলন করে সরকারের পতন ঘটাতে পারবে না। এটা বিএনপিও জানে। আর এজন্য এখন তারা বিদেশিদের কাছে দৌঁড়ঝাপ করে বেড়াচ্ছে।


বিএনপি-জামায়াতের লক্ষ্য একটাই, শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটনো। কিন্তু তারা সরকারের ক্ষতি করতে গিয়ে রাষ্ট্র ও জনগণের ক্ষতি করছে- বলেন তিনি।


তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা পৃথিবীতে মন্দাভাব চলছে, অর্থনীতি দুরবস্থার মধ্যে আছে। সেই ধাক্কা বাংলাদেশেও লেগেছে। এ মন্দাভাব কাটিয়ে ওঠার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার ধাক্কা আমাদের দেশেও লেগেছে তারপরও আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। এই চরম দরিদ্র দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করতে পেরেছেন।


আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, এই সময়ে বিশেষ করে রমজান মাসে যাতে মানুষের কষ্ট না হয় সেজন্য ইফতার অনুষ্ঠান না করে মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইউনিয়ন, ওয়ার্ড এমনকি প্রত্যেকটি গ্রাম পর্যায়ে মানুষের কাছে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার এই সিদ্ধান্ত আবারো প্রমাণ করেছে তিনি গণমানুষের নেত্রী।


আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর দুস্থ ভাতা, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতাসহ ৪৪ ধরনের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। দরিদ্র মানুষের যাতে কষ্ট না হয় সেটা নিশ্চিত করেছেন। কেউ যেন খাওয়ার কষ্ট না পায়, একবেলা অনাহারে না থাকে সেই ব্যবস্থা করছেন। তিনি যে মাটি মানুষের নেতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা তার কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তিনি সেটা প্রমাণ করেছেন।


বিএনপি সরকারের শাসনামলের সাথে বর্তমান সময়ের তুলনা করে হানিফ বলেন, আগে মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ৫০০ ডলারের নিচে। আজ মাথাপিছু আয় ২৯০০ ডলার ছাড়িয়েছে। আজকে অনেকে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি নিয়ে কটাক্ষ করে বলে রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট হয়েছে কিন্তু দ্রব্যমূল্য নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের সাথে না মিশে ঢালাওভাবে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার জন্য তারা এসব বলেন। দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির কারণে সরকারের বিরুদ্ধে বলতে পারেন না তাই এখন দ্রব্যমূল্যের কথা বলেন।


দ্রব্যমূল্য নিয়ে সরকারের সমালোচনা করার আগে অতীত স্মরণ করার জন্য বিএনপি নেতাদেরকে আহবান জানিয়ে হানিফ বলেন, দ্রব্যমূল্য কোন সময়ে বৃদ্ধি হয়নি? বিএনপি নেতারা সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করেন। বিএনপি ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে ক্ষমতায় ছিল। তখন কি দাম বাড়েনি? আপনারা আগের টেলিভিশনের ফুটেজ দেখেন। আপনাদের নেতা তারেক রহমান সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন দ্রব্যমূল্য বাড়া স্বাভাবিক। তখন মানুষের দৈনিক মজুরি ছিল ৬০ টাকা। পরে মানুষের মজুরি বাড়লে উনি বললেন- ৬০ টাকা মজুরি ১০০টাকা হয়েছে জিনিসপত্রের দাম তো বাড়বেই।



বিএনপির শাসনামলের চেয়ে বর্তমান বাংলাদেশের মানুষ ভালো আছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখন মানুষের দৈনিক মজুরি ৭০০ থেকে ১০০০ টাকায় পৌঁছেছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। বিএনপির সময়ে মানুষ কষ্টে ছিল। এখন দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি পেলেও মানুষ ওই রকম কষ্টে নেই।


বিএনপি-জামায়াত দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে চায়-এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা ১৪ বছরে বাংলাদেশের মানুষ উন্নয়ন, অগ্রগতিতে বিশ্বের বুকে মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটা তাদের ভালো লাগে না। কারণ ক্ষমতায় থাকতে তারা মানুষের জন্য কিছু করতে পারেনি। এই কারণে তাদের গাত্রদাহ হয়। আর এখন তারা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে।


অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী এবং বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। সভাপতিত্ব করেন পল্টন থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এনামুল হক আবুল।


বিবার্তা/সোহেল/কেআর

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com