আগামী নির্বাচন; আওয়ামী লীগের চ্যালেঞ্জ আমি লীগ!
প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২৩, ২০:১৮
আগামী নির্বাচন; আওয়ামী লীগের চ্যালেঞ্জ আমি লীগ!
এফ এম শাহীন
প্রিন্ট অ-অ+

আগামী বছরের শুরুতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আসন্ন নির্বাচনে দলের জয়লাভ নিশ্চিতের অগ্নিপরীক্ষার পথ পাড়ি দিতে হবে আওয়ামী লীগকে। এই নির্বাচন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং চ্যালেঞ্জের। বিরোধী দলের আন্দোলন, অভিযোগ ও প্রপাগান্ডা মোকাবিলা, বিদ্যমান সংকট উত্তরণ, বাজেট বাস্তবায়ন, অর্থনীতির চাকা সচল রাখা, দলীয় কোন্দল নিরসন করে নির্বাচনের প্রার্থী ঠিক করাসহ নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে দলটিকে। ৭৪ বছরের পুরাতন দল আওয়ামী লীগ এবার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেছে।


গত নির্বাচনে ঘোষিত ইশতেহারে অবশিষ্ট কাজও এ বছরের মধ্যেই সম্পন্ন করতে হবে আওয়ামী লীগকে। নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষিত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হলে নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে দলটিকে। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে দলীয় কোন্দল মিটিয়ে আগামী নির্বাচনের প্রার্থী ঠিক করা এবং বিজয় নিশ্চিত করা।


টানা ১৪ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ দৃশ্যত এখনই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ক্ষমতাহীন আওয়ামী লীগের দূরত্ব আজ সারাদেশে, দলের সকল পর্যায়ে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ক্ষমতাবান আওয়ামী লীগের পাশাপাশি নব্য আওয়ামী লীগ নেতাদের অন্যায়, অত্যাচার, অনিয়ম ও দুর্ব্যবহার দলকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে। নানা সময়ে, নানা সংবাদে উঠে এসেছে- স্বাধীনতাবিরোধী ভিন্ন আদর্শের লোকদের দলে জায়গা করে দেয়ার বিষয়। অর্থ কিংবা নানা অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে দেয়া হয়েছে দলের নমিনেশন। আর এই কাজটি করেছে দলের মধ্যে গড়ে ওঠা এক মহাশক্তিশালী সিন্ডিকেট।


বর্তমানে একদিকে যেমন রাজপথ উত্তপ্ত করার পথে এগোচ্ছে বিরোধী শিবির, অন্যদিকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সঙ্কট ও কূটনৈতিক ব্যর্থতায় সরকারকে ফেলেছে চাপে। এতসব চ্যালেঞ্জ মাথায় নিয়ে আগামী নির্বাচনের পরিকল্পনা করতে হবে আওয়ামী লীগকে। যুক্তরাষ্ট্রের এক ভিসা নীতি নিয়ে যে এলোমেলো বক্তব্য শোনা যাচ্ছে তাতে পরিস্কার যে, সরকারের বিভিন্ন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ও নেতাদের মধ্যে সমন্বয় নেই- যে যার মত করে বলে যাচ্ছে। যার এই বিষয়ে কোন ধারণা নেই, এমন সব নেতারাও রসিয়ে রসিয়ে জনসভায় বক্তব্য রাখছে গলা ফাটিয়ে। তাছাড়া দল ও সরকারে এমন কিছু মানুষকে এমন জায়গায় বসানো হয়েছে- তাদের জনসম্পৃক্ততা ও জনভিত্তি নিয়ে তৃণমূল আওয়ামী লীগে বহুদিনের প্রশ্ন উত্তরের ক্ষণ গুনছে। কেন্দ্রের বহু নেতা আজ আমি লীগ প্রতিষ্ঠায় ব্যস্ত। দেশ গোল্লায় যাক, তাতে তাদের কী?


অথচ যে কূটনৈতিক ব্যর্থতায় আজ র‌্যাব ও আমেরিকার ভিসা নীতি সেই কথা কেউ বলছেই না। কোন কোটা বা যোগ্যতায় ইউরোপ-আমেরিকার কূটনৈতিক ঠিক করা হয়, সেটিও বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে সর্বজনে। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ যখন বিরাট ভূরাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছে, তখন বহির্বিশ্বে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে শুধু ব্যক্তি বা আমলাদের পছন্দের লোক হলেই সে যোগ্য হয়ে ওঠে না।


আওয়ামী লীগ এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব জায়গায় আজ আমি লীগ প্রতিষ্ঠিত। দেশের বা দলের অর্জনে আমিত্ব ভর করে বক্তব্য রাখা নেতারা ভুলে যান, এই দেশের সকল উন্নয়ন করতে তাঁরা দায়িত্বপ্রাপ্ত। তাঁরা এখানে সেবা দিতে এসেছেন। জনগণের টাকায় এই উন্নয়ন। এখানে দল বা দেশের অর্জন কোন ব্যক্তির অর্জন হতে পারে না। তাছাড়া এনিয়ে বারবার বললে সাধারণ মানুষও ভালোভাবে নেয় না। তারপরও একই কাজ করে চলেছেন সকল পর্যায়ের নেতারা। আমি লীগের নেতাদের কারণে আজ বিভক্তির করুণ সুর তৃণমূলের সকল জায়গায়। ত্যাগী ও যোগ্য নেতা-কর্মীদের দূরে রেখে আওয়ামী লীগকে আগামী নির্বাচনে বিরোধীদের আন্দোলন ও নানা অশুভ তৎপরতার সাথে নব্য আমি লীগ মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে যাবে।


লেখক: প্রধান সম্পাদক, জাগরণ টিভি ও
সাধারণ সম্পাদক, গৌরব ’৭১


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com