শিরোনাম
ভয়াল ৫ মে - মনে পড়ে বাংলাদেশ!!
প্রকাশ : ০৫ মে ২০২০, ১৪:৪৮
ভয়াল ৫ মে - মনে পড়ে বাংলাদেশ!!
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ভয়াল সেই রাত! ঢাকার বুকে একে দিল ইতিহাসের নিকৃষ্টতম ক্ষত চিহ্ন। ২০১৩ সালের এই দিনে রাজধানীর মতিঝিলে অবস্থান নিয়ে নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছিল হেফাজতে ইসলাম। ধর্মের নামে এত জঘন্য ভয়াবহ তাণ্ডব, মানুষ খুন, বাঙালি জাতি আর কখনো দেখেনি! বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের ভিতরে আগুন দিল, মুসলিমদের হাজার হাজার পবিত্র গ্রন্থ কোরআন পুড়িয়ে দিল। মতিঝিল শাপলা চত্বর হয়ে উঠলো রণক্ষেত্র।


বাংলাদেশকে তালেবান রাষ্ট্র বানানোর স্বপ্নে এতদিন যারা বিভোর ছিল, সেদিন তারা আনন্দে আত্মহারা! শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চেও আক্রমণ করা হলো, কিন্তু জাগরণ যোদ্ধারা সেই হামলা প্রতিহত করে দিল। ছাত্রলীগ ২৬ মার্চের পর থেকে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মসূচি না আসলেও ঐ দিন সবার আগে তারাই প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ছাত্রলীগের যোদ্ধারা মৎস্য ভবনের সামনের প্রতিরোধ গড়ে তুললে খুব বেশি হেফাজত শাহবাগে আক্রমণ করতে পারেনি।


তারপরও জামায়াত-হেফাজতে ইসলামের বেশ কিছু ক্যাডার রমনার ভিতর দিয়ে গণজাগরণ মঞ্চের দিকে আসতে চাইলে আমাদের সহযোদ্ধারা জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে তাদের প্রতিহত করে। এই দিনে একাত্তর পরবর্তী প্রজন্ম দেখেছি ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের শক্তি। এই দিনে দেখেছি জাতির সংকটে মহান নেতা সৈয়দ আশরাফের হুংকার আর হুশিয়ারি।


১৩ দফা দাবিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকা অবরোধ করে এবং রাজধানীতে ব্যাপক তাণ্ডব চালান হেফাজতের কর্মীরা। তারা মতিঝিল, পল্টন ও আশপাশের এলাকায় ফুটপাতের শত শত দোকান ভাংচুর অগ্নিসংযোগ করে। তাণ্ডবের শিকার হয় আশপাশের অনেক সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা। পরদিনও দেশের বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডব চলে। ওই তাণ্ডবের ঘটনায় করা সারা দেশে যে ৮৩টি মামলা হয়েছে, তার মধ্যে ৬২টির তদন্ত থেমে আছে গত ৭ বছরে।


মামলার এজাহারের বিবরণ ও হিসাব অনুযায়ী, সমাবেশের নামে ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের তাণ্ডবে ভস্মীভূত হয়েছে ৫ হাজারেরও বেশি দোকান, ব্যাংক, একাধিক ব্যাংকের এটিএম বুথ, সরকারি গাড়ি, বাস, মোটরসাইকেল, পিকআপসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অর্ধশতাধিক কোটি টাকা। হাজার হাজার বই ও পবিত্র কোরআন-হাদিসেও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। কেটে ফেলা হয়েছিল রাস্তার সৌন্দর্য বর্ধনকারী শত শত গাছ। ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচির নামে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নেমে আসে অরাজক পরিস্থিতি।


তাণ্ডবের নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারীদের অনেককে চিহ্নিত করা গেছে বলে পুলিশ দাবি করলেও তাণ্ডবকারীদের সবাইকে এখনো চিহ্নিত এবং আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি ৭ বছরেও! যেভাবে তারা দেশের মানুষকে ভীতসন্ত্রস্ত করেছে, সম্পদের ক্ষতি করেছে, আর্থিক ক্ষতি ঘটিয়েছে তাতে বিচার না হলে এই রাষ্ট্রই অনিরাপদ হবে।


আমরা কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতি, সুপ্রিম কোর্ট থেকে ভাস্কর্য অপসারণের ঘোষণা আসার পর হেফাজতের বিরুদ্ধে মামলাগুলোর অগ্রগতি নিয়ে সংশয়ী হয়ে উঠেছিলাম। আজ সেই সংশয় কাটার কোন লক্ষণই বোঝা যাচ্ছে না। বরং মৌলবাদী ধর্মান্ধ শক্তিকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রশ্রয়ে এদেশের জঙ্গিবাদের শেকড় গড়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। যা আগামীতে প্রতিনিয়ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ ও ত্রিশ লাখ শহিদের রক্তে অর্জিত লাল সবুজ পতাকাকে ক্ষতবিক্ষত করবে।


লেখক - এফ এম শাহীন
সাধারণ সম্পাদক গৌরব '৭১
সংগঠক, গণজাগরণ মঞ্চ


বিবার্তা/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com