শিরোনাম
চীনা ইপিজেডে চাকরি হবে ৫৩ হাজার লোকের
প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০১৬, ১১:০৬
চীনা ইপিজেডে চাকরি হবে ৫৩ হাজার লোকের
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় চীনা ইপিডেডে কর্মসংস্থান হবে ৫৩ হাজার লোকের। এটার দাপ্তরিক নাম ‘চাইনিজ ইকোনমিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন’। আগামী ১৪ অক্টোবর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এটা উদ্বোধন করবেন। জি টু জি পদ্ধতিতে আনোয়ারায় ৭৭৪ একর জমিতে প্রস্তাবিত এই প্রকল্পে ১৬ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চায় চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। একই দিন তিনি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেলেরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।



জানা গেছে, চীনা ইপিজেডে ৩৭১ শিল্প-কারখানায় কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে ৫৩ হাজারের বেশি মানুষের। আনোয়ারা-কর্ণফুলী এলাকার সাংসদ ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, আনোয়ারা-কর্ণফুলী এলাকা ঘিরে শিল্পায়নের নতুন দ্বার উন্মোচিত হচ্ছে। টানেল ও বিশেষ শিল্পাঞ্চল পাল্টে দেবে পুরো এলাকার চেহারা। সমৃদ্ধ হবে দেশের অর্থনীতি।



বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) একজন কর্মকর্তা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিংয়ের উপস্থিতিতে শিগগিরই এই প্রকল্পের ভিত্তি স্থাপন হবে। এ কারণে প্রকল্প এলাকায় দ্রুততার সাথে সংযোগ সড়কের কাজ করা হচ্ছে। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর মূল কাজ শুরু হবে। তবে এর মধ্যে ভৃমি অধিগ্রহণ শেষে অধিগ্রহণ বাবদ জমির মূল্য পরিশোধের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।



দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরকে ঘিরে আনোয়ারার বেলচূড়া, হাজিগাঁও ,বটতলী বৈরাগ ও গহিরা এলাকার ৭৭৪ একর জমির উপর নির্মাণাধীন এই বিশেষ শিল্পাঞ্চলের কাছেই কোরিয়ান ইপিজেড। কাছাকাছি এলাকায় কর্ণফুলী তলদেশে টানেলের কাজও শুরু হচ্ছে। সব মিলিযে চট্টগ্রাম অঞ্চলে এটিই শিল্পোৎপাদনের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।



সূত্র জানায়, আনোয়ারার চীনা শিল্পাঞ্চলে চীনের শতভাগ বিনিয়োগ থাকবে। সেখানে সরকারের ৩০ শতাংশ আর চীনা বিনিয়োগকারীদের ৭০ শতাংশ অংশীদারিত্ব থাকবে। এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে তৈরি পোশাক, রাসায়নিক, ফার্মাসিউটিক্যালস, টেলিযোগাযোগ, কৃষিনির্ভর শিল্প কারখানা, যন্ত্রপাতি, ইলেক্ট্রনিকস, টেলিভিশন, মনিটর, চিকিৎসা ও অপারেশনের যন্ত্র, প্লাস্টিক, আইটি ও আইটি সম্পর্কিত কারখানা গড়ে উঠবে।



জানা গেছে, এই প্রকল্পে ২৯১ একর খাসজমি ইতিমধ্যে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) হস্তান্তর করেছে জেলা প্রশাসন। আরও ৪৮৪ একর জমি অধিগ্রহণের কাজও প্রায় শেষ। অধিগ্রহণের জন্য ৪২০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।



চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, আনোয়ারায় চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় ২৯০ দশমিক ৮৭৫ একর সরকারি খাসজমি বেজার অনুকূলে বন্দোবস্ত দেয়া হয়। এগুলো হল উপজেলার বেলচূড়া মৌজায় ৫ দশমিক ৯১ একর, হাজিগাঁও মৌজায় ৩৮ দশমিক ১৬ একর, বটতলী মৌজায় ১০০ দশমিক ৮০ একর এবং বৈরাগ মৌজায় ১৪৬ একর। তিনশ ৮২ কোটি ৬৮ লাখ ১২ হাজার ৭৭ টাকা মূল্যের জমি বন্দোবস্ত দেয়া হয়। সরকার প্রতি মৌজা এক লাখ এক টাকা হারে সেলামি মূল্যে বেজার কাছে হস্তান্তর করেছে। এছাড়া গহিরায়ও ৬১১ দশমিক ৪৭ একর জমির অর্থনৈতিক অঞ্চল সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। সমুদ্রবন্দরের সাথে সরাসরি যোগাযোগ থাকায় এটি জাহাজ নির্মাণ শিল্পের কেন্দ্রভূমি হবে বলে বেজার ওয়েবসাইটে উল্লেখ রয়েছে।



বেজা সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৯ কিলোমিটার, শহর থেকে ২৮ কিলোমিটার এবং শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে ৪৬ কিলোমিটার দূরত্বে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল। জাহাজ নির্মাণ শিল্প, ইলেকট্রিক, ফার্নেস ও সিমেন্ট শিল্পকে প্রাধান্য দিয়ে এ বিশেষ অথনৈতিক অঞ্চলটি গড়ে তোলা হবে।



এই অর্থনৈতিক জোনের কাজ ২০১৭ থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ২০২০ সালে। আনোয়ারায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে ৩৭১টি শিল্প-কারখানা। এরমধ্যে ২৫০টিই জাহাজ নির্মাণ শিল্পের জন্য বরাদ্দ থাকবে। অবকাঠামো উন্নয়নসহ প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ করার জন্য সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।


বিবার্তা/জিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com