কোটাবিরোধীদের নতুন কর্মসূচি: দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ
প্রকাশ : ১১ জুলাই ২০২৪, ২২:৩৩
কোটাবিরোধীদের নতুন কর্মসূচি: দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিতে বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। নতুন কর্মসূচি অনুযায়ী শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেল ৪টায় সব ক্যম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করবে তারা। একইসাথে কোটাব্যবস্থা সংস্কার করে সংসদে আইন পাস না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে তারা।


১১ জুলাই, বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে শাহবাগে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।


নাহিদ হাসান বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ হামলা চালিয়েছে। কোটা সংস্কারের দাবির পাশাপাশি এই হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল বিকেল ৪টায় সব ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হবে।


তিনি আরো বলেন, আমরা সব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাবো, নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব কিন্তু আপনাদের। আপনারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। আমাদের ওপর হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনুন। আমাদের ওপর যে হামলা হয়েছে তার প্রতিবাদে আগামীকাল আমরা সারাদেশের সব ক্যাম্পাসে বিকেল ৪টায় বিক্ষোভ মিছিল করব।


তিনি আরো বলেন, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই তাদের প্রতি যারা বিভিন্ন জায়গায় আমাদের ওপর হামলা করেছেন। সাধুবাদ জানাই তাদের যারা শত বাধা বিপত্তির মুখেও আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে থেকেছেন, যোগ দিয়েছেন। আমাদেরকে বার বার বলা হচ্ছে হাইকোর্টের রায়ের পর আমরা কেন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। আবারও পরিষ্কার করে বলতে চাই হাইকোর্টের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নাই। হাইকোর্টের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু দাবিটা হাইকোর্টের কাছে নয়, নির্বাহী বিভাগের কাছে। সরকারি সিদ্ধান্তই পারে এর যৌক্তিক সমাধান করতে। কারণ একটি দেশে কোটা কতটা থাকবে, কি পরিমাণ থাকবে তা নির্ধারণ করবে নির্বাহী বিভাগ। আমরা মনে করি সরকারই আদালত অবমাননা করছে। যা তারা করতে পারতো তার দায় হাইকোর্টের ওপর চাপানো হচ্ছে।


আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, হাইকোর্টের আংশিক রায়ে একটি বিষয় পরিষ্কার হয়েছে। হাইকোর্টের আংশিক রায়ে বলা হয়েছে, সরকার চাইলে কোটার সংস্কার করতে পারে। এ বিষয়টিই আজ স্পষ্ট হয়েছে। যদি তাই হয়, তাহলে শেকৃবিতে কেন লাঠিচার্জ করা হলো? শাবিপ্রবিতে হামলা করা হয়েছে, চবিতে নারী শিক্ষার্থীদের ওপর নারী পুলিশ হামলা করেছে, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা হয়েছে, রাবিতে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। মাভাবিপ্রবিসহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা করা হয়েছে। যারা হামলা করেছে তারা অতি উৎসাহী। সেই পুলিশদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা মনে করি, এতে সরকারেরই ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। আপনারা এতদিন আমাদের বলেছেন, আদালতের প্রতি ভরসা রাখতে। এখন আদালত আপনাদের দায়িত্ব দিয়েছে সেটি আপনারা পালন করুন।


এর আগে বিকেল ৫টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর একটি মিছিল ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে শাহবাগে যায় এবং শাহবাগ অবরোধ করে। কারও হাতে প্লেকার্ড, কারও মুখে কোটাবিরোধী স্লোগান। এভাবেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে আসেন শিক্ষার্থীরা। শাহবাগের কাছাকাছি আসতেই বাধা দেয় পুলিশ। কিন্তু পুলিশের লোহার ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগ দখলে নেয় শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে আন্দোলন থামাতে পুলিশের আনা সাঁজোয়া যান ঘিরে ফেলেন শিক্ষার্থীরা। সে সময় সবকিছু গুটিয়ে নিয়ে সরে দাঁড়ায় পুলিশ।


এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও কিছু প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে যুক্ত হওয়ায় শাহবাগে অন্যদিনের চেয়েও বেশি আন্দোলনকারীর উপস্থিতি দেখা যায়।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com