
দেশের কৃষক পর্যায় থেকে শুরু করে প্রতিটি পদে পদে অতি মুনাফার বিষয়টি ছড়িয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
শুক্রবার (১০ মে) বিকেলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ বিষয়ক এক সেমিনারে তিনি এই মন্তব্য করেন।
অধিদপ্তরের সহযোগিতায় এই সেমিনারের আয়োজন করে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
সফিকুজ্জামান বলেন, আমাদের ওপর মানুষের অনেক প্রত্যাশা থাকে। আমরা হয়ত অনেক কিছু করতে পারিনি। আজকে সকালে টিভির নিউজে দেখলাম পেঁপের কেজি ১০০ টাকা হয়ে গেছে। সকালবেলা আমি বাজারে পাঠিয়েছি, আমার এলাকার বাজারে পেঁয়াজ কিনেছে ৭৫ টাকা কেজি। আলুর দামও কিন্তু ৫৫-৬০ টাকা। এখন এটা হওয়া উচিত ছিল কি না- এটাই বড় প্রশ্ন। কেন এটি হচ্ছে, সেটা আমরা সবাই জানি। আমাদের এখানে প্রতি পদে পদে অতি মুনাফার বিষয়টি ছড়িয়ে গেছে। পাশাপাশি আমাদের নিত্যপণ্যের ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১৫ শতাংশ। এটাই বাস্তবতা। সেই বাস্তবতা থেকে ভোক্তা অধিদপ্তর বা ক্যাবের খুব বেশি কিছু করার সুযোগ আছে বলে এই মুহূর্তে আমার মনে হয় না।
এখন আলুর মৌসুম চলছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এখন কেন আলুর দাম ৬০ টাকা হবে? একইভাবে আমাদের পেঁয়াজের মৌসুমের প্রথম সময় চলছে। সাধারণত আমাদের আগস্ট বা অক্টোবর-নভেম্বরে দাম বাড়ে। সেখানে এখন কেন এত অস্থিরতা। এই জায়গাগুলোতে আমরা কাজ করতে গিয়ে যেটা দেখলাম, কৃষক থেকে শুরু করে প্রতিটি ধাপে ধাপে পণ্যের দাম বাড়ে। এটি তো হওয়া উচিত ছিল না।
নকল পণ্যে বাজার ভরে গেছে মন্তব্য করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আরও বলেন, গতকালই কারওয়ান বাজারে অভিযান পরিচালনা করে দেখা গেছে নকল কফি বিক্রি হচ্ছে। পচা মিষ্টির মধ্যে ময়দা মিশিয়ে কাঁচাগোল্লা বানাচ্ছে। বাজারে পাকা কাঁঠাল, আম চলে এসেছে। সেগুলো কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো হচ্ছে। ডায়াবেটিসের স্ট্রিপ থেকে শুরু করে হার্টের বাল্বও নকল হচ্ছে। একদিকে দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাচ্ছে, আবার যে জিনিসটা কিনছি সেটি কতটুকু নিরাপদ? আমাদের প্রতিটি স্তরে প্রতিটি ব্যক্তি যারা এগুলোর সঙ্গে জড়িত, তারা সুযোগ পেলে অতি মুনাফার লোভে এই কাজগুলো করছে।
ভোক্তাদের এই অবস্থার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা যদি ভোক্তাদের জাগিয়ে তুলতে পারি, তাহলেই তাদের অধিকার আদায় সম্ভব।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে কিছু দুর্বলতা ও জনবল সংকট রয়েছে জানিয়ে সফিকুজ্জামান আরও বলেন, ১৭টি জেলায় অধিদপ্তরের কোনো কর্মকর্তা নেই। তারপরও সারাদেশে প্রতিদিন অধিদপ্তরের ৪০-৫০টি টিম দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন সংশোধনের কাজ চলমান।
ক্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি জামিল চৌধুরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক (কার্যক্রম ও গবেষণাগার) ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন, ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. হুমায়ুন কবীর ভূঁইয়া প্রমুখ।
বিবার্তা/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]