পালিয়ে আসা সেনাদের নিতে কক্সবাজারের পথে মিয়ানমারের সামরিক জাহাজ
প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:৫৮
পালিয়ে আসা সেনাদের নিতে কক্সবাজারের পথে মিয়ানমারের সামরিক জাহাজ
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে চলমান সংঘাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা দেশটির বিভিন্ন বাহিনীর ৩৩০ জন সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে নৌবাহিনীর একটি জাহাজ পাঠাচ্ছে দেশটির জান্তা সরকার। সবকিছু ঠিক থাকলে বর্তমানে সমুদ্রপথে অবস্থানকারী জাহাজটি শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজার উপকূলে পৌঁছাবে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ইতিমধ্যে কূটনৈতিক পত্রের মাধ্যমে শনিবার জাহাজ এসে পৌঁছাবে বলে মিয়ানমার আমাদের জানিয়েছে।


বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা দেশটির বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যসহ মোট ৩৩০ নাগরিককে টেকনাফের দুটি স্কুলে রাখা হয়েছে।


মিয়ানমারের এই নাগরিকরা কবে নাগাদ দেশে ফিরে যাবেন, জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মকর্তা বলেন, প্রথমে সব মিয়ানমার নাগরিকদের কক্সবাজার আনতে হবে। এছাড়া জাহাজটি বড় হওয়ার কারণে একদম উপকূলের কাছে আসতে পারবে না। ফলে ছোট ছোট নৌকা বা ট্রলারে করে তাদের বড় জাহাজে তুলতে যতটুকু সময় লাগে। এটি কয়েক ঘণ্টা লাগতে পারে।


বর্তমান অবস্থা :
রাখাইন সীমান্তে মিয়ানমার সরকারি বাহিনী বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সঙ্গে যুদ্ধে বেকায়দায় পড়লে প্রায় দুই ব্যাটালিয়ানের অফিসার, সৈনিক, মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ এবং কয়েকজন পরিবারের সদস্য বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। প্রথমে বাংলাদেশ তাদের বিমানে পাঠাতে চাইলেও মিয়ানমার রাজি হয়নি। এরপর সিদ্ধান্ত হয় সুমদ্রপথে তাদের ফেরত পাঠানো হবে।


এ বিষয়ে একজন কর্মকর্তা বলেন, মিয়ানমার বাহিনীর সদস্যরা গত কয়েকদিন ধরে সীমান্ত অতিক্রম করছে। তাদের অস্ত্রগুলো বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের কাছে গচ্ছিত আছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তারা যখন ফেরত যাবে, ওই অস্ত্রগুলো ফেরত দিতে হবে।


আহত ১৫ জনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাদেরও একই জাহাজে ফেরত পাঠানো হবে।’


মিয়ানমার নৌ বাহিনীর জাহাজ:
অন্যদেশের সমুদ্র সীমানায় নৌবাহিনীর জাহাজ ঢোকার সময় ‘নোট ভার্বাল’ পাঠিয়ে অনুমতি নিতে হয়। ইতিমধ্যে মিয়ানমার ওই ‘নোট ভার্বাল’ পাঠিয়েছে। ওই কূটনৈতিক পত্রে জাহাজের নাম কী, ধরন, কতজন ক্রু আছেন ইত্যাদি থাকতে হয়।


এ বিষয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, এটি একটি ট্রুপ ক্যারিয়ার। এই জাহাজে করে বিভিন্ন জায়গায় সৈন্য পাঠানো হয়। সাধারণভাবে এই জাহাজের সক্ষমতা হচ্ছে প্রায় ৫০০ জন। ফলে বাংলাদেশে যারা অবস্থান করছে, তাদের সবাইকে এই জাহাজে পাঠানো সম্ভব।


এরপর কী:
মিয়ানমার এবং বিশেষ করে রাখাইনে চলমান ঘটনার আলোকে বলা যায়, অভ্যন্তরীণ ওই যুদ্ধ আগামী বেশ কিছুদিন চলবে। সেক্ষেত্রে দেশটির বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য আবারও বাংলাদেশ সীমান্তে এসে আশ্রয় নিতে পারে। এ বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা প্রয়োজন বলে হতে পারে বলে মনে করেন সাবেক কূটনীতিকরা।


এ বিষয়ে এক কূটনীতিক বলেন, রোহিঙ্গা এবং সরকারি বাহিনীর সদস্য এক বিষয় নয়। আমাদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করার দরকার আছে। যদি সীমান্তে সংঘাত চলতেই থাকে তবে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে। ফলে আমাদের আগে থেকে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা থাকলে পরিস্থিতি সামাল দেয়া সহজ হবে।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com