যুদ্ধ চাই না, আমরা শান্তি চাই: প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০২৩, ১৩:২৮
যুদ্ধ চাই না, আমরা শান্তি চাই: প্রধানমন্ত্রী
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

অস্ত্র বানানোর টাকা বিশ্বের উন্নয়নের ব্যয় হোক, আমরা চাই মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুদ্ধ চাই না, কারণ যুদ্ধ ধ্বংস করে। আমরা শান্তি চাই।


বুধবার (১৮ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘শেখ রাসেল ও স্মার্ট বাংলাদেশ পদক প্রদান এবং শেখ রাসেল দিবস ২০২৩’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ বিশ্বে একের পর এক যুদ্ধ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এখন আবার প্যালেস্টাইনের ওপর আক্রমণ করছে ইসরাইল। দুই পক্ষেরই শিশু নিহত হয়েছে। গতকাল দেখলাম হাসপাতালে আক্রমণ হয়েছে। সেখানেও শিশু মারা গেছে। আমি বিশ্বনেতাদের বলবো, এই যুদ্ধ বন্ধ করুন। অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বন্ধ করেন। যুদ্ধ মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে আনে না। এই যুদ্ধের ফলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় নারী ও শিশু। আমরা সেটা জানি। যুদ্ধের ফলে শিশু হারায় বাবা-মা, বাবা-মা হারায় সন্তানদের। ১৯৭১ ও ১৯৭৫ এ আমরা এই ভয়াবহতা দেখেছি। আজকে আমাদের এখানে তাপস আছে, তার শিশু বয়সেই বাবা-মা হারিয়েছে।


শেখ হাসিনা বলেন, আমার ছোট্ট রাসেলের মতো আর যেন কাউকে জীবন না দিতে হয়, এটাই আমি চাই। এসময় কবি সুকান্তের কবিতাও আবৃত্তি করেন প্রধানমন্ত্রী।


তিনি বলেন, শিশুদের স্বাধীন দেশের উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে শিশু-কিশোরদের নিয়ে এই সংগঠন। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ সব মানুষকে মানুষের দৃষ্টিতে দেখা এবং অটিস্টিক বা পিছিয়েপড়াদের আরও এগিয়ে নিতে হবে, এটাই এই সংগঠনের লক্ষ্য।


৭১ সালের বন্দিজীবনের স্মৃতিচারণ করে সরকারপ্রধান বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা যখন বন্দি ছিলাম, একবার চেষ্টা করেছে ভেতরে এসে আমাদের ওপর হামলা করতে। একটা ছোট্ট তার আমাদের বাঁচিয়ে দেয়। একটা কাপড় ঝোলানো তারের সঙ্গে লেগে সে অফিসার পড়ে যায়, পরে সে ফিরে যায়। পরে কর্নেল অশোক আসে। সেদিনটি ছিল ১৮ তারিখ।


তিনি বলেন, ছোট্ট শিশুরা দ্রুত শিখে ফেলে। আমাদের বুড়োদের হয়তো দেরি হয়। এসময় প্রধানমন্ত্রী নিজের নাতির স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমাদের এই শিশুরাই আগামী স্মার্ট বাংলাদেশের দক্ষ সৈনিক হবে।


শিশুদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, আজ তোমরা যারা শিশু এখানে আছো, বাবা-মার কথা শুনবে। ঠিকমতো লেখাপড়া করবে। লেখাপড়া ছাড়া মানুষ বড় হতে পারে না। আমাদের ছেলেদেয়েদের মধ্যে এই আকাঙ্ক্ষা থাকবে, আমরা লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হবো। বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবো।


তিনি বলেন, আমরা শান্তি চাই। দেশের উন্নয়ন চাই। এজন্য ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। আগামীতে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ আমাদের টার্গেট।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার গঠন করার পর থেকে আমার প্রচেষ্টা ছিল বাংলাদেশকে আর্থসামাজিকভাবে উন্নত করবো। ছোট্ট শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত স্কুল করে দেওয়া, বই দেওয়া, খেলাধুলার ব্যবস্থা করা, এসবের মধ্যদিয়ে শিশুদের গড়ে তুলতে সহযোগিতা করেছি। ছোটবেলা থেকে যেন খেলাধুলা ও সংস্কৃতি চর্চার অভ্যাস হয়, সে ব্যবস্থা করেছি।


তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের বন্দিখানার পাশে রাসেল প্যারেড দেখেছে। গ্রামের বাড়ি গিয়ে বাচ্চাদের নিয়ে সে প্যারেড করতো। বাচ্চাদের পুরস্কারও দিতো। তার জীবনের বড় স্বপ্ন ছিল- সে বড় হয়ে আর্মি অফিসার হবে। কিন্তু তার সে স্বপ্ন তো পূরণ হতে দিলো না।


তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলকের সভাপতিত্বে ও ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন রনির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি সচিব সামসুল আরেফিন, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ শরাফাত, সাংগঠনিক সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ রতন প্রমুখ।


অনুষ্ঠানে ‘স্মরণের আবরণে শেখ রাসেল’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও অনুষ্ঠানে রাসেলের স্মৃতি নিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্নেল (অব.) অশোক কুমার তারা’র ভিডিও বার্তা প্রদর্শন করা হয়।


জাতির পিতার কনিষ্ঠ সন্তান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোটভাই শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডিতে জন্মগ্রহণ করেন। শেখ রাসেল ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের ছাত্র ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের নির্মম বুলেট থেকে রক্ষা পাননি শিশু শেখ রাসেল। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাকেও নির্মমভাবে তাকেও হত্যা করা হয়।


বিবার্তা/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com