জাতীয়
শেষ মুহূর্তে দেবী গড়তে ব্যস্ত প্রতিমা শিল্পীরা
প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৩, ১০:১৬
শেষ মুহূর্তে দেবী গড়তে ব্যস্ত প্রতিমা শিল্পীরা
রাজবাড়ী থেকে মিঠুন কুমার গোস্বামী
প্রিন্ট অ-অ+

বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। আর এই শারদীয় দুর্গোৎসবের আগমনী বার্তায় প্রতিমা গড়তে ব্যস্ত সময় পার করছে রাজবাড়ীর শিল্পীরা। এখন যেন দম ফেলার সময় নেই তাদের।


আগামী ১৪ অক্টোবর (২৬ আশ্বিন) মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হবে বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দেবী দুর্গার আগমনী বার্তা।


জানা যায়, দুর্গাপূজার দিন গণনা শুরু হয় মহালয়ার দিন থেকেই। তবে আগামী ২০ অক্টোবর (২ কার্তিক) মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে সূচনা এবং ২৪ অক্টোবর(৬ কার্তিক) বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে শারদীয় দুর্গোৎসব।


দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে রাজবাড়ী জেলার প্রতিমা শিল্পীরা কল্পনায় দেবী দুর্গার অনিন্দ্যসুন্দর রূপ দিতে রাতভর প্রতিমা গড়ার কাজ করছেন। দক্ষ হাতের নিখুঁত কারুকার্য দিয়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে আয়োজন। পূজার দিন যতই ঘনিয়ে আসছে- ততই ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন প্রতিমা শিল্পীরা। জেলার বিভিন্ন মণ্ডপে ঘুরে দেখা যায়, প্রতিমা তৈরির কারিগররা তাদের নিখুঁত হাতের কারুকার্যে বাঁশ, কাঠ, সুতা, খড়, কাদামাটিসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে তৈরি করছে প্রতিমা। মন্দিরগুলোতে দেবী দুর্গার প্রতিমা ছাড়াও কার্তিক, গনেশ, লক্ষ্মী ও সরস্বতীসহ অন্যান্য প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন এই শিল্পীরা।


প্রতিমা শিল্পী বিনয় মণ্ডল বিবার্তাকে বলেন, আমি দীর্ঘ ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই পেশার সাথে জড়িত। সারা বছর কাজ না থাকলেও বছরের এই সময় ২০ টিরও বেশি প্রতিমা তৈরি করি। ফলে ৪/৫ জন সহযোগীও নিতে হয়। সময়ের সাথে সাথে প্রতিমার আকার ও ডিজাইনে ভিন্নতা এসেছে। আমাদের মাটির কাজ শেষ। এখন প্রতিমা শুকানোর জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে। পূজা শুরুর কয়েকদিন আগে রঙের কাজ শেষ করে কমিটির লোকজনের কাছে প্রতিমা বুঝিয়ে দেওয়া হবে। পূজোর অল্প কিছুদিন বাকি থাকায় চাপ অনেক বেশি। তিনি বলেন প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম অনেক বেশি। খরচা গিয়ে লাভ থাকে না।


কালুখালীর ভিটি দুর্গাপূজা কমিটির সভাপতি ঠাকুর দাস বিবার্তাকে বলেন, গতবছরে তুলনায় এবছর বাজেট অনেক বাড়াতে হয়েছে। গত বছর থেকে এ বছর প্রতিমা তৈরির খরচও প্রায় দ্বিগুণের কাছাকাছি লাগছে।


তিনি আরো জানান, মন্দির ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পূজা মণ্ডপ সিসি টিভি ক্যামেরার আওতায় রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।


রাজবাড়ী হরিতলা মন্দির পূজা কমিটির সভাপতি বিবার্তাকে জানান, নিত্যপণ্যের দাম আকাশচুম্বী। প্রতিটা জিনিসের দাম বৃদ্ধি পাওয়াতে আমাদের বাজেট বাড়াতে হয়েছে। মন্দির ও দর্শনার্থীর নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সর্বক্ষণ সিসি টিভিতে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।


তিনি আরো বলেন, পূজোর দিন ঘনিয়ে আসায় মন্দির কমিটির সকলেই ব্যস্ত সময় পার করছি।


রাজবাড়ী শহরের বাসিন্দা সুজন বিষ্ণু বিবার্তাকে বলেন, দুর্গা পূজা আমাদের সবচেয়ে বড় পূজা। চার দিন ব্যাপী পূজোর প্রতিদিনই ঘুরতে যাই ও মজা করি। সবকিছু ঠিক থাকলে এবছরও ঘুরব মজা করব।


রাজবাড়ী সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ডা. সমির কুমার দাস বিবার্তাকে জানান, এ বছর জেলায় মোট ৪৪২টি মন্দিরে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। যার মধ্যে সদর উপজেলায় ১০২টি মন্দিরে পূজোর প্রস্তুতি চলছে।


তিনি বলেন, এটি নির্বাচনের বছর। তাই আইন শৃঙ্খলার বিষয়টি কিছুটা ভাবাচ্ছে। আগামীকাল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে মিটিং আছে। সেখানে নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।


তিনি আরো বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটলেও আমাদের জেলায় এখনো কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আশা করছি শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গোৎসব শেষ হবে।


বিবার্তা/মিঠুন/এমজে/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com