জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ সরকারের অনুদানে নির্মিত পূ্র্ণদৈর্ঘ্য প্রথম শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘মাইক’ এর মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম ইতিহাস জানতে পারবে। এর আগে মহান মুক্তিযুদ্ধের উপর অনেক সিনেমা তৈরি হলেও ’৭৫ পরবর্তী দুঃসময় নিয়ে তেমন সিনেমা হয়নি। অনেক দিন পর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হলেও এই ধরনের সিনেমা তৈরি হয়েছে। নির্মাতারা মাইকে’র মাধ্যমে বাস্তবভিত্তিক ইতিহাস তুলে ধরেছেন। ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চের ভাষণ বাঙালির আবেগের জায়গা সেই বিষয়টি এই সিনেমায় ফুটে উঠেছে।
মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে এ চলচ্চিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করি। একইসাথে মাইক চলচ্চিত্র মাইকের মত করে চারিদিকে ছড়িয়ে যাক, এই প্রত্যাশা রইলো।
কথাগুলো বলেছেন বিভিন্ন পর্যায়ের বিশিষ্টজনেরা। শুক্রবার (১১ আগস্ট) বেলা ২ টায় ঢাকার স্টার সিনেপ্লেক্সের বসুন্ধরা শাখায় ‘মাইক’ চলচ্চিত্রটি দেখে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তারা এসব কথা বলেন।
মাইক চলচ্চিত্রটি দেখে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন,মাইক মুক্তিযুদ্ধের উপর ভিত্তি করে নির্মিত চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটি দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি।কাজেই আশা করছি, এ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসসহ জাতির জনকের বিশ্ব কাঁপানো ভাষণ সম্পর্কে জানতে পারবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অবঃ) মফিজুল হক সরকার বলেন,মাইক চলচ্চিত্রটি বাঙালি জাতির সম্পদে পরিণত হবে। সীমান্ত ছাড়িয়ে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে। এই চলচ্চিত্রটি যে বিষয়টি নিয়ে তৈরি হয়েছে সেটি খুবই যুগোপযোগী। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে কম চলচ্চিত্র হয়েছে। অথচ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাংলাদেশের মানুষের কাছে সবচাইতে মূল্যবান। ১৯৭১ সালে চাপিয়ে দেয়া অসম পশু শক্তির বিরুদ্ধে কৃষক, শ্রমিক ছাত্ররা যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। ৩০ লাখ মানুষ রক্ত দিয়েছে, মা-বোনেরা সম্ভ্রম দিয়েছিল। এই অর্জন আমাদের কাছে সম্পদ।
প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব গুলশাহানা ঊর্মি বলেন, পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যারা ক্ষমতায় এসেছিলে তারা ছিল মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী। তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করেনি, দেশকে ভালোবাসেনি। তারা বঙ্গবন্ধু, বাঙালি ও মুক্তিযুদ্ধকে সামনে নিয়ে আসতে ভয় পেয়েছিল। কারণ তাদের ভেতর বোধশক্তি ছিল না। শুধু তাই নয়, তারা বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ মুছে ফেলতে চেয়েছিল। অথচ এই ভাষণের উপর ভিত্তি করে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণকে কেন্দ্র করে মাইক চলচ্চিত্রটি অনবদ্য সৃষ্টি।
গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তাহমিদুর রহমান অর্ণব বলেন, একসময় জয় বাংলা, ৭ই মার্চের ভাষণ সবই মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সম্ভব হয়নি। জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার পর আমরা পুনরায় আবার সেই হারানো অধিকার ফিরে পাই। চলচ্চিত্রের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা স্বচ্ছ হয়ে উঠার প্রয়াসে মাইক চলচ্চিত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
মাইক চলচ্চিত্রে অভিনয় করা শিশুশিল্পী আলী আবদুল্লাহ দাইয়ান ভূঁইয়া বলেন, এই সিনেমায় অভিনয় করতে পেরে আমি গর্বিত। এটা আমার জীবনে স্মৃতি হয়ে থাকবে।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণকে উপজীব্য করে নির্মিত প্রথম শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘মাইক’ সারাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে শুক্রবার (১১ আগস্ট)।
এরই মধ্যে সারা ফেলেছে সিনেমাটির পোস্টার, ট্রেলার, টিজার ও গান। লেখক, কলামিস্ট ও সংগঠক এফ এম শাহীনের প্রযোজনায় চলচ্চিত্রটি যৌথভাবে পরিচালনা করছেন এফ এম শাহীন ও হাসান জাফরুল বিপুল।
গত ২৯ মে চলচ্চিত্রটি আনকাট সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছিল। ‘মাইক’ চলচ্চিত্রটি দেখে সেন্সরবোর্ডের সদস্যরা ভূয়সী প্রশংসা করেন।ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে কেন্দ্র করে এ ধরনের সিনেমা নির্মাণকে তারা সাধুবাদ জানিয়েছেন। গত ২৮ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) অডিটোরিয়ামে চলচ্চিত্রটির বিশেষ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
‘মাইক’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন বিশিষ্ট অভিনেতা তারিক আনাম খান, চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ ও অভিনেত্রী তানভীন সুইটি, অভিনেতা নাদের চৌধুরী, ঝুনা চৌধুরী, জয়িতা মহলানবিশ, সংগীতা চৌধুরী, রহিম সুমন, ইকবাল হোসাইন, শিশুশিল্পী সানজিদ রহমান খান, আলী আবদুল্লাহ দাইয়ান ভূঁইয়া, খোন্দকার মেঘদূত জলিল, মীর্জা ত্বাবীব ওয়াসিত প্রমুখ।
যে সকল সিনেমা হলে দেখা যাবে:
★ স্টার সিনেপ্লেক্স, বসুন্ধরা, ঢাকা। প্রতিদিন দুইটি শো। ফাস্ট শো দুপুর ২টা ও সেকেন্ড শো ৭.৩৫ মিনিটে
★ ব্লক বাষ্টার সিনেমা, যমুনা ফিউচার পার্ক, ঢাকা
★ লায়ন সিনেমা (জয় সিনেমাস), কেরাণীগঞ্জ
★ রুট সিনেপ্লেক্স, সিরাজগঞ্জ
★ আনন্দ সিনেপ্লেক্স, গুরুদাসপুর, নাটোর
★ সিলভার স্কিন, চট্টগ্রাম
★ ফ্যান্টাসি, দিয়াবাড়ি, উত্তরা
★ আজাদ, জনসন রোড, নয়াবাজার
★গ্রান্ড সিলেট মুভি থিয়েটার, সিলেট।
বিবার্তা/রাসেল/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]