ঘূর্ণিঝড় মোখা: উপকূলে ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাস
প্রকাশ : ১২ মে ২০২৩, ০৯:৩৫
ঘূর্ণিঝড় মোখা: উপকূলে ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাস
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

ঘূর্ণিঝড় মোখা ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২০৪ কিলোমিটার বেগে অতিক্রম করতে পারে। আমেরিকার নৌবাহিনী পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার এ পূর্বাভাস দিয়েছে।


শুক্রবার (১২ মে) সকালে কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন।


আরেক পোস্টে তিনি বলেছেন, মোখার কারণে বাংলাদেশের সব উপকূলীয় এলাকা ১০ থেকে ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের হুমকির সম্মুখীন।


ঘূর্ণিঝড় মোখা কক্সবাজার ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ওপর দিয়ে আঘাত করলেও পুরো বাংলাদেশের সব উপকূলীয় জেলা ব্যাপক জলোচ্ছ্বাসের সম্মুখীন হবে। ঘূর্ণিঝড়টির যাত্রাপথ ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার ভৌগোলিক অবস্থান ও আকৃতির কারণে এ জলোচ্ছ্বাস হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।


তিনি আরও জানান, মোখা যখন সেন্টমার্টিন দ্বীপ অতিক্রম করবে তখন দ্বীপের প্রতি ইঞ্চি মাটি সমুদ্রের পানির নিচে থাকার আশঙ্কা ৯০ শতাংশেরও বেশি।


এদিকে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে (১১ মে) দেয়া আবহাওয়া দফতরের সবশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, বাংলাদেশ উপকূলের আরও কাছে চলে এসেছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা। এটি আরও শক্তিশালী হয়ে বঙ্গোপসাগরের উত্তর ও উত্তর-পূর্বদিকে অগ্রসর হচ্ছে।


ঘূর্ণিঝড় মোখা দুভাগে ভাগ হয়ে একটি অংশ কক্সবাজার দিয়ে বাংলাদেশ অতিক্রম করবে। সবচেয়ে শক্তিশালী অংশ মিয়ানমারের ওপর দিয়ে অতিক্রম করবে। কক্সবাজার, বরগুনা, নোয়াখালীসহ উপকূলীয় এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আগামী রোববার ভোর ৬টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে মোখা বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করবে।
ঘূর্ণিঝড়ের নাম যেভাবে হলো মোখা
আলোচনার কেন্দ্রে এখন ঘূর্ণিঝড় মোখা। আশঙ্কা করা হচ্ছে, প্রবল গতি নিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজার ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড়টি। তবে কীভাবে এর নাম মোখা হলো, তা নিয়েও কৌতূহল রয়েছে অনেকের।
জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের তথ্যানুসারে, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সামুদ্রিক ঝড়ের ক্ষেত্রে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬৩ কিলোমিটারের বেশি হলে সেটি ‘সাইক্লোন’ আর বাতাসের গতি এর কম থাকলে বলা হয় ‘নিম্নচাপ’। সেই হিসাবে, বর্তমান গভীর নিম্নচাপটি শক্তি সঞ্চয় করে সাইক্লোনে পরিণত হওয়ার পর এর নাম হবে মোখা।


এ নামটি দিয়েছে ইয়েমেন। মূলত ইয়েমেনের লোহিত সাগর উপকূলে অবস্থিত একটি বন্দর শহরের নাম মোখা।
উত্তর ভারত মহাসাগর তথা বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করে এ অঞ্চলের ১৩টি দেশ। জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের প্যানেল সদস্যদেশগুলো ২০২০ সালের এপ্রিলে নামগুলো গ্রহণ করে।
দেশগুলো হলো: বাংলাদেশ, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইয়েমেন। এ দেশগুলোর নামের আদ্যক্ষর অনুযায়ী তৈরি তালিকা থেকে পর্যায়ক্রমে ঘূর্ণিঝড়গুলোর নামকরণ হয়।
তালিকা অনুযায়ী পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে ‘বিপর্যয়’। এ নামটি বাংলাদেশের দেয়া। এর পরবর্তী পাঁচটি ঘূর্ণিঝড়ের নাম হবে যথাক্রমে তেজ (ভারত), হামুন (ইরান), মিধিলি (মালদ্বীপ), মিগজাউম (মিয়ানমার) ও রিমাল (ওমান)।
ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের প্রচলন হয় ২০০০ সালে। এ সম্পর্কে ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, একটি ঘূর্ণিঝড় এক সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এ সময়ের মধ্যেই একই অঞ্চলে আরও ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়া অসম্ভব কোনো ব্যাপার নয়। এ কারণে ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়া হলে সম্ভাব্য বিভ্রান্তি এড়ানো সহজ হয়।


বিবার্তা/মাসুম

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com