
সাংবাদিক এ কে হিরুকে দুর্নীতি কখনো স্পর্শ করতে পারেনি। তিনি পেশাগত জীবন ও সমাজকর্মী হিসেবে বিতর্কের ঊর্ধ্বে ছিলেন। মানুষটি ছিলেন প্রচার বিমুখ। রাজনীতির ভাষায় যাকে বলে পর্দার অন্তরালের মানুষ। আবু নাসের হাসপাতালে রোগে-শোকে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন। রোগ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে চিকিৎসা নিতে তার পরিবারকে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে। সঞ্চয়ী ছিলেন না কখনো। এই নগরীতে তার মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও নেই। তার উত্তারাধিকার বলে নেই কেউ। এই ত্যাগী মানুষটি বেঁচে থাকবেন তার সৃজনশীল সৃষ্টিতে সমাজ উপকৃত হতো। তার নিঃস্বার্থ শ্রমদান আজকের প্রজন্মের কাছে উদাহরণ হয়ে থাকবে। এ ত্যাগী মানুষটির চির বিদায়ে সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হলো। তার কর্ম আমাদের কাছে আজ অম্লান হয়ে থাকবে। এভাবে বললেন গুণিজন স্মৃতি পরিষদের স্মরণ সভায় বক্তারা।
২৮ মার্চ, বৃহস্পতিবার বিএমএ মিলনায়তনে গুণীজন স্মৃতি পরিষদের আয়োজনে বীরমুক্তিযোদ্ধা, প্রথিতযশা সাংবাদিক এ কে হিরুর স্মরণ অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, সাংবাদিক এ কে হিরু তৎকালীন দৈনিক রূপালীতে খুলনার সংকট সমস্যা নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে ৬২টি প্রতিবেদন লিপিবদ্ধ করেন। বলা চলে ওই সময় এটি ছিল রেকর্ড। পেশাগত জীবনের বিভিন্ন স্তরে খুলনা প্রেসক্লাব ও খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সাংবাদিকদের পেশাগত উৎকর্ষ সাধন, সংবাদপত্রের জন্য জাতীয় নীতিমালা, সংবিধানের ৩৯ধারা মোতাবেক সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ, সাংবাদিকদের বেতন বোর্ড রোয়েদাদ বাস্তবায়ন, নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার ও সাংবাদিকদের চাকরির নিশ্চয়তার জন্য তিনি সোচ্চার ছিলেন। দীর্ঘ সময় সাংবাদিক আন্দোলনে তিনি ছিলেন নিবেদিত প্রাণ।
বক্তারা আরও বলেন, পেশাগত জীবনের পাশাপাশি তালা উপজেলার খেশরা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে ভূমিকা রেখেছেন। রাস্তাঘাট, স্কুলকলেজ নির্মাণ ও সংস্কারে তিনি ছিলেন নিবেদিত কর্মী। ভূমিহীনদের জন্য নদীর চরে ১শ’ বিঘা জমি বরাদ্দ করতে সক্ষম হয়েছেন। এক্ষেত্রে দুর্নীতি তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। তার কর্ম আমাদের আছে আজ অম্লান হয়ে থাকবে। শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয় এবং তার আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদক করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন গুণীজন স্মৃতি পরিষদের সভাপতি এ্যাড. শামীমা সুলতানা শীলু। এ কে হিরুর কর্মময় জীবন নিয়ে প্রবন্ধ পাঠ সিনিয়র সাংবাদিক কাজী মোতাহার রহমান বাবু। প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন বিএমএ এর সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম, গুণীজন স্মৃতি পরিষদের উপদেষ্টা শ্যামল সিংহ রায়, এ কে হিরুর পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন শেখ আহসান হাবীব টিপু, সাংবাদিক শেখ দিদারুল আলম, এনটিভির ব্যুরো প্রধান সাংবাদিক মুহাম্মদ আবু তৈয়ব, ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগর কমিটির সভাপতি মফিদুল ইসলাম, দেলোয়ার উদ্দিন দিলু, গবেষক মীর মো. কবির হোসেন, আয়কর আইনজীবীর সাবেক সভাপতি এস এম শাহনওয়াজ আলী, ইঞ্জিনিয়ার রুহুল আমিন হাওলাদার, ডা. সৈয়দ মোসাদ্দেক হোসেন বাবলু, সরদার আবু তাহের, পরিবর্তন খুলনার পরিচালক নাজমুল হক ডেভিড, শাহ মামুনুর রহমান তুহিন, সাংবাদিক ওয়াহেদ -উজ-জামান বুলু, সাংবাদিক সুনীল দাস, সাংবাদিক রাশিদুল ইসলাম, এশিয়ান টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান বাবুল আকতার, কবি সৈয়দ আলী হাকিম, টিআইবি এর মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিধান চন্দ্র রায়, নূরুন নাহার হিরা, সাংবাদিক তাহমিনা আক্তার শিপন, সাংবাদিক দেবব্রত রায় দেবু, সাংবাদিক শিপলু, সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম, প্রবাহের পিংকী সাহানারা, নারী উদ্যোক্তা মুক্তা জামান রাখী, কৃষ্ণা দাশ, ছাত্রনেতা জয় বৈদ্য, দুর্জয় হালদার, গুণীজন স্মৃতি পরিষদের সহ- সাধারণ সম্পাদক রিপন বিশ্বাস প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক মহেন্দ্রনাথ সেন।
বিবার্তা/তুরান/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]