শিরোনাম
অগোছালো চোখের চাওয়া...
প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০১৯, ১৩:৪৩
অগোছালো চোখের চাওয়া...
মডেল: আমির পারভেজ ও জাকিয়া ইমি
শাহনাজ শারমিন
প্রিন্ট অ-অ+

আয়না তোর বন্ধু হই, এই কদিন কম ঘুমোই, আয় মনে তুই দিনে রাতে ... চাই দিতে মনটা তোর হাতে ..ওই অগোছালো চোখের চাওয়া আর এলোমেলো মনের হাওয়া সাড়া দেয় .. একলা সাগর আমি নীল রঙা জল সেই জলে ঢেউ হতে তুই সঙ্গে চল ... এমনি করে কি একসঙ্গে চলতে চান আপনার প্রিয় মানুষটির সাথে?


ঠিক এই রকম করে বাসতে চান তাকে ভালো? শুধু যদি ভালোইবাসেন তাহলে তো ক্রোধ ঈর্ষার মিশ্রণ কখনই হতে পারে না। তবে হ্যাঁ, যেখানে ভালোবাসা আছে সেখানে ঈর্ষা-সন্দেহ থাকাটা নেহাতই স্বাভাবিক।


জীবনের সব কষ্ট সুখে পরিণত হয়, যখন প্রিয়জন পাশে থাকে, তখন কষ্ট বলে কিছু থাকেনা যখন ভালবাসার মানুষটি বলে আমি তোমার ভালোবাসা ছাড়া আর কিছুই চাইনা।


তবে ভালোবাসা কিন্তু যা চাওয়া ছিলো তা পাওয়ার জন্যই হয় না। কি পাওয়া যাবে তা ভেবে কিন্তু ভালোবাসা যায় না। থাকে হাজারো ত্যাগ তিতিক্ষা। কাঙ্ক্ষিত মানষটিকে না পাওয়ার মাঝেও একটু সুখ রয়ে যায়। ভালোবাসায় হেরে যাওয়া মানে হারা নয়...।


অনেক সময় মনে হয় সময়টা যেনো থমকে আছে ঠিক পাথরের মতো। যা মনকে বোঝানো যায় না। যদি বোঝানো যেতো তাহলে ভালোই হতো। ঠিক সে সময়ে মনের আকাশে শুধুই কষ্টের আকড়া। যেনো সবই বদলে গেছে...বদলে গেছে সম্পর্কের মানুষটি। শুধু ওই দু’চোখের দুষ্টিতে যেনো মায়া মুছে না। দু’জনের সাজানো ভুবনের দেয় সব কথাই যেনো আজ ফিকে হয়ে গেছে। অন্ধকারে অতলে ডুবে যায় যেনো সব। ভালোবেসে তো আর কখনো ভুল হয় না। আর ভুল করেও তো কখনো ভালোবাসা হয় না..তাই নয় কি!


ভালবাসা একটি টস করা পয়সার মতো, যার একদিকে থাকে প্রেম আর একদিকে থাকে ঘৃণা। যখন কাউকে ভালোবাসে তখন পয়সাটি ঘুরতে থাকে... যখন এই ঘূর্ণন থামবে তখন সামনে আসবে – হয় প্রেম, নয়তো ঘৃণা।


মানুষের বিচিত্র মন নানা ধরনের ক্রোধ, ভালোবাসা, আনন্দ কিংবা ঈর্ষার মিশ্রণ। আর এটি মূলত বেড়ে যায় দম্পতি প্রেমিক-প্রেমিকাদের মাঝে। কিন্তু যেকোনো সম্পর্কের জন্যই ঈর্ষা বিষয়টি খুব অস্বস্তিকর। অনেক সময় ঈর্ষা এতটাই সীমা ছাড়িয়ে যায় যে সম্পর্কের ভিত্তিই নড়বড় হয়ে যায়। এর জন্য ভেঙ্গে যায় অনেক সম্পর্ক। কিন্তু এই ঈর্ষাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় সহজেই।আসুন আজ জেনে নেয়া যাক সেই কৌশলগুলো।


পদ্ধতি অবলম্বন


আপনার সঙ্গীর সাথে কথা বলুন। তাকে নিয়ে আপনার আবেগ, অবস্থান তুলে ধরুন। নিজের সীমাবদ্ধতাগুলোও জানান। তাহলে তিনি আপনার প্রতিশ্রুতির মর্ম বুঝতে পারবেন। অন্যের প্রতি সঙ্গীর আবেগ নিয়ে চিন্তিত হওয়ার চেয়ে বরং নিজেকে কিছুটা নতুন রূপে তুলে ধরুন। তার মনোযোগ ফিরিয়ে আনুন আপনার প্রতি। শারীরিক সম্পর্ক, আকর্ষণ প্রকাশ সম্পর্কের গভীরতা ফিরিয়ে আনে আবার। এটাই হবে সবচেয়ে কার্যকরী চেষ্টা।


নিজের মুখোমুখি হোন


নিজের থেকে পালিয়ে বেড়াবেন না। নিজের ভেতরে লুকিয়ে থাকা ভয়কে মোকাবেলা করুন। রাগ প্রকাশ করুন। কষ্টগুলো ভাগাভাগি করে নিন আপনার সঙ্গীর সঙ্গে। মনের ভেতর এসব লুকিয়ে রেখে আপনি যদি দূরত্ব আরও বাড়িয়ে ফেলেন তাহলে হিতে বিপরীত হতে পারে। হারিয়ে যেতে পারে আপনার কাছের মানুষটি।


নিজেকে নিয়োগ করুন


আপনার ঈর্ষাকে নিয়ন্ত্রণ করতে উদ্যোগী হোন। ভালো করে বোঝার চেষ্টা করুন আপনার সঙ্গীকে, তার চাহিদাকে। আপনি যে তার প্রতি দূরত্ব অনুভব করছেন তার কারণ খুঁজে বের করুন।


প্রত্যেকের স্বভাবের, চিন্তার এবং কাজের ধরণের পার্থক্য থাকবে। এসব পার্থক্য দূরত্বের কারণ হয় না কখনো। খেয়াল করুন আপনি কি এমন কোনো বিষয় নিয়ে চিন্তিত বা সেটাকে কারণ মনে করে এগোচ্ছেন যা আসলে কারণ নয়? সঠিক কারণ খুঁজে বের করুন। তারপর শুধরে নিতে পারবেন শুধু স্বদিচ্ছা থাকলেই।


সাহায্য নিন


ঈর্ষা অবশ্যই একটি যন্ত্রণাদায়ক। একে বাড়তে দিলে আপনি সন্দেহবাতিকগ্রস্থ হয়ে পড়তে পারেন। তার চেয়ে বরং আপনার সঙ্গীর সাহায্য নিন। তাকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে খেতে যান মাঝে মধ্যেই। বেড়িয়ে আসুন দূরে কোথাও। তার সঙ্গ, সাহচার্য আপনাকে অনেক শান্তি দেবে। আর অনেক বেশি কথা বলুন, গল্প করুন। তার কথা শুনুন। তাকে অনুভব করতে দিন, আপনার কাছে তার গুরুত্ব কতখানি। এতেও কাজ না হলে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন।


উদ্বেগ প্রকাশ


আপনার সঙ্গীকে নিয়ে অনিরাপদ বোধ করলে তখন তাকে বুঝতে এই উপায় অবলম্বন করতে পারেন। কিছু কার্ড তৈরি করুন, সেখানে লিখুন আপনার কী কী সমস্যা আছে বলে আপনি মনে করেন। শারীরিক অক্ষমতা, ঘনিষ্ঠতা তৈরিতে ভয় বা আর যা কিছু আপনি অনুভব করেন তার সবই তুলে ধরুন। এবং আপনার সঙ্গীকে বলুন কার্ডের বিপরীত দিকে আপনাকে নিয়ে তার ভাবনা তুলে ধরতে।


কেন সে আপনাকে ভালোবাসে, কেন সে আপনার সঙ্গে থাকতে চায় তার সবই তুলে ধরতে বলুন। এরপর যখনই আপনার খারাপ লাগবে, ঈর্শাকাতর বোধ করবেন তখনই উল্টে দেখুন কার্ডগুলো। আপনার সঙ্গীর ভালোবাসামাখা কথাগুলো নিশ্চিতভাবে প্রভাবিত করবে আপনাকে।


সত্যিকারের ভালোবাসা কষ্ট দেয়ার জন্য নয়। তবে সত্যিকারভাবে ভালোবাসলে কষ্ট পেতে হয়, আর কিছু মানুষ ভালোবাসা নিয়ে করে অভিনয় যে কারণে ভেঙ্গে যায় সত্যিকারের ভালোবাসার হৃদয়!


কাউকে দুর থেকে ভালোবাসাই সব থেকে পবিত্র ভালবাসা। এমন ভালোবাসায় কোনো রকম অপবিত্রতা থাকে না, কোনো শারিরীক চাহিদা থাকে না... শুধু নীরব কিছু অভিমান থাকে, যা কখনো কেউ ভাঙায় না। কিছু অশ্রু বিন্দু থাকে যা কেউ কখনো মুছতে আসে না। মনের মতো করে স্বপ্নের একটা ভুবন তৈরী করা যায়। যেখানে কিনা শুধু রাজা রানীর বসবাস।


আপনার সম্পর্কটি রক্ষা করতে কিছু কথা বলুন সমসময়ই।


তাকে "ভালবাসি" বলুন


ভালবাসি কথাটি অনেক কিছুই বহন করে। এর ওজন অনেক বেশি, কিন্তু মুখে বলা খুব সহজ। ভালোবাসার মানুষটিকে প্রতিদিন বলুন যে আপনি তাকে ভালবাসেন। বারবার বলায় কোন লজ্জা নেই কিংবা কোন বারণ নেই। তাই বলুন যতবার ইচ্ছে ততবার।


তোমার সাথে চিরকাল থাকতে চাই


চিরকাল একসাথে থাকার জন্যই নিশ্চয়ই ভালবেসেছেন। সম্পর্ক কখনোই খুব সহজে তৈরি হয়না। একটি ভালো সুন্দর সম্পর্ক তৈরি করতে এবং তা টিকিয়ে রাখতেও লাগে অনেক ধৈর্য। তাই সবসময় পাশাপাশি থাকুন। তাকে আপনার উপর ভরসা করতে সহায়তা করুন, বলুন একসাথে পুরো জীবনটাই পার করে দিতে চান আর ছেড়ে যাবেন না কখনোই।


তোমাকে দেখতে সুন্দর লাগছে


একটি ভালবাসাময় সম্পর্কে কিছু প্রশংসা থাকা প্রয়োজন, যা সম্পর্ককে আরও বেশি মজবুত করে। কোথাও ঘুরতে যাচ্ছেন? সঙ্গীকে বলুন তোমাকে সুন্দর লাগছে কিংবা একসাথে শপিং করুন পরস্পরের পছন্দে। কী পরলে, কী করলে সঙ্গীকে আপনার চোখে সবচেয়ে সুন্দর দেখাবে তা নিয়ে নিজেরা কথা বলুন। তার মনের মত ভাবে নিজেকে উপস্থাপনও করুন।


তোমাকে শ্রদ্ধা করি


সম্পর্কে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল সম্মান। একে অপরকে সম্মান করলে সেখানে কোন সমস্যা হবে না কখনোই। তাকে বলুন আমি তোমাকে বিশ্বাস করি, শ্রদ্ধা করি। এই কথাগুলো বলা একটি সম্পর্কের জন্য খুব জরুরী এবং শুধু জরুরীই নয় ভালবাসার মজবুত সেতু তৈরি করে কথাগুলো।


তুমি আমার সবকিছু


এই কথাটি বলা মানেই সঙ্গীর উপর প্রচণ্ড ভাবে ভরসা করা। দাম্পত্য জীবন হোক কিংবা প্রেমের সম্পর্ক সবসময় একসাথে থাকা ও তাকে নিজের সবকিছু মনে করা এই কথাটি মুখ ফুটে বলুন। আপনার প্রতি তার বিশ্বাস ও ভরসা আরও বেশি শক্ত হবে।
ভালোবাসা মানে পরস্পরকে বুঝতে পারা। এই শব্দটির সাথে জড়িয়ে আছে অনেক মায়া, আশা-ভরসা, বিশ্বাস। জীবনে চলতে গিয়ে যখন কাউকে ভালোবেসে ফেলবেন চেষ্টা করুন তাকে ধরে রাখতে। কারণ সুন্দর একটি সম্পর্ক কিন্তু বারবার তৈরি হয়না। তাই যখন আপনার পছন্দের মানুষটির সাথে আপনার সব কিছুই মিলে যাবে, তখন তাকে আপনার ভালবাসায় এমনভাবে আবদ্ধ করুন যেন সে চাইলেও আপনাকে ছেড়ে চলে যেতে না পারে।


এমন কাউকে খুঁজুন এবং তাকেই বেছে নিন যে কিনা আপনাকে পেয়ে গর্ব বোধ করবে... আপনাকে হারানোর ভয়ে সবসময় ভীত থাকবে... আপনার ইচ্ছেগুলোকে পূরণ করার প্রচেষ্টায় থাকবে... আপনাকে সম্মান করে আপনার যথেষ্ট খেয়াল রাখবে অথবা যত্ন করবে। আপনি কিছু বলার আগেই সে অনেক কিছুই বুঝে নিবে... ছোট ছোট কারণে রাগ অভিমান আর ঝগড়া করবে... আপনার গুণ, ভালো, মন্দ লক্ষ্য করে ভালো কে ভালো এবং খারাপ কে খারাপ-নির্দ্বিধায় বলে ফেলবে... কারণ সত্যিকার অর্থেই সে আপনাকে ভালোবাসে এবং আপনাকে সে যে কোনো মূল্যে সুখী দেখতে চায়।


বিবার্তা/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com