রোজ কাঁচা হলুদ খাচ্ছেন, যে ক্ষতি হতে পারে
প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০২৩, ১০:৩১
রোজ কাঁচা হলুদ খাচ্ছেন, যে ক্ষতি হতে পারে
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

কাঁচা হলুদ বাঙালির জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিয়ের শুভ অনুষ্ঠান থেকে রোজকারের খাওয়াদাওয়ায়, আমাদের সুস্থ থাকার চাবিকাঠি হল কাঁচা হলুদ।


কিন্তু এটি প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেলে, দীর্ঘদিন খেয়ে চললে শরীরে উপকারের চেয়ে অপকার হয় বেশি। এবং সেটা বাচ্চা-বুড়ো সবার ক্ষেত্রেই।


ঘনঘন সর্দি-কাশিতে ভোগা বাচ্চার হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হচ্ছে? কোনও বড়র শরীরে আচমকা রক্তাপ্লতা ধরা পড়েছে? অথবা কিডনিতে স্টোন অর্থাৎ বৃক্কে পাথর হয়েছে? মাত্রাতিরিক্ত কাঁচা হলুদ রোজ খাচ্ছে না তো এরা?


কাঁচা হলুদ একটি ভেষজ উপাদান এবং এর ভেতর কারকিউমিনের মতো ভাল পলিফেনল আছে যেমন, তেমনই আবার অক্জালেট, ফাইটেডের মতো খারাপ পদার্থও থাকে। এখন কথা হল, আমরা রোজকারের খাওয়াদাওয়ার মাধ্যমে আয়রন, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামের মতো যে খনিজ লবণগুলি শরীরে নিই এবং তাতে আমাদের সার্বিক সুস্থতা অটুট থাকে, সেই উপকারী সব খনিজ লবণ দেহের বেশি পরিমাণের কাঁচা হলুদ শোষণ করে নেয়। ফলে শরীরে খনিজ লবণের গুণাগুণ কমে যায়। তার জেরে আমাদের দেহে রক্তাপ্লতার প্রবণতা দেখা দিতে পারে। কিডনিতে স্টোন হতে পারে। বেশি কাঁচা হলুদ খেলে গুরুতর পেটের গোলমাল বা, ক্রনিক ডায়েরিয়া হতে পারে। বাচ্চাদের ঘনঘন সর্দি-কাশি এড়াতে রোজ তাদের দুধে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ানোর একটা প্রবণতা আছে মায়েদের। কিন্তু বড়দের মতোই বাচ্চাদেরও বেশি কাঁচা হলুদ খাওয়ালে শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সুতরাং সাধু সাবধান!


তবে পরিমিত হারে কাঁচা হলুদ খাওয়া অবশ্যই ভাল। প্রথমত, এর ভেতরের কারকিউমিনের মতো ভাল পলিফেনল আমাদের শরীরের নানাবিধ ব্যথা-বেদনা কমায়, পোকামাকড়ের কামড়ে ঘায়ের মতো হলে তার উপশম ঘটায়। কাঁচা হলুদের সবচেয়ে আয়ুর্বেদিক ব্যবহার হল রোজ অল্প মধু দিয়ে হলুদ খাওয়া, কাঁচা হলুদ মুখে লাগানো। এতে মুখের লাবণ্য বজায় থাকে‌, লাবণ্য বাড়েও।


ঋতু পরিবর্তনের সময়, বিশেষ করে গরম থেকে শীত বা শীত থেকে গরম পড়ার সময় অল্প মধু বা গুড় দিয়ে পরিমিত হারে কাঁচা হলুদ খেলে সেটা আমাদের সর্দি-কাশির অ্যান্টিসেপটিকের কাজ করে, প্রতিরোধ গড়ে তোলে। বসন্ত পার্বণ বা সরস্বতী পুজোয় মহিলাদের মুখে কাঁচা হলুদ লাগানোর কারণও ওই একই।


সাধারণ পেটের গোলমালে হাল্কা করে কাঁচা হলুদের ব্যবহার পেটের সমস্যার উপশম ঘটায়।


টাইফয়েড, ম্যালেরিয়া জ্বরে এমনকী কোভিড-১৯, অ্যামিনো ভাইরাসে রোগীর শরীরের অন্দরের সেল-এর ক্ষতি হয়। কাঁচা হলুদ খেলে তুলনায় দ্রুত সেই ক্ষতিপূরণ হয়।


জন্ডিসের রোগীর খাবারে হলুদ দিতেই অনেকে বারণ করেন। কিন্তু একমাত্র জন্ডিসের দিন ক'টা ছাড়া রোগীকে অল্প গুড় দিয়ে কাঁচা হলুদ খাওয়ালে তার বরং উপকার হয়‌। গুড়ের ভেতরে থাকা আয়রন লিভার বা যকৃতের জন্ডিস হওয়ার হেতু ঘটা ক্ষতি পূরণ করে। আর কাঁচা হলুদের হাইড্রোকেমিক্যালস লিভার বা যকৃতে আলসার বা ঘায়ের প্রবণতা থাকলে তার প্রতিরোধ করে।


অর্থাৎ জীবনের বেশিরভাগ জিনিসের মতো কাঁচা হলুদেরও ভালো-খারাপ দুটো দিকই আছে।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com