মানসিক উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কী করবেন?
প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:৪৩
মানসিক উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কী করবেন?
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

সারাক্ষণ দুশ্চিন্তায় থাকা, ঘুম কমে যাওয়া, হৃদ্‌স্পন্দন বেড়ে যাওয়া, হাত-পা কাঁপা, হাঁপানো, কারও কারও ক্ষেত্রে পেটের সমস্যা বা বমি হওয়ার মতো লক্ষণ দীর্ঘ দিন ধরে চলতে থাকলে, তা মনের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। ভবিষ্যতে মনের কোনও গভীর রোগে আক্রান্ত হওয়াও অস্বাভাবিক নয়।


কোনো কিছু নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়াটা একেবারেই স্বাভাবিক। এটা মানসিক চাপ বা ভয়ের প্রতি মানুষের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। উদ্বেগ হল যখন কেউ কিছু নিয়ে উদ্বিগ্ন বোধ করে, উদাহরণস্বরূপ, একটি পরীক্ষা, কারও স্বাস্থ্য, কাজের সাথে সম্পর্কিত সমস্যা, ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং অন্যান্য অনেক বিষয়ে উদ্বিগ্ন বোধ করা।


কিন্তু উদ্বেগ একটি মানসিক ব্যাধিতে পরিণত হতে পারে যখন আপনি ক্রমাগত একটি ভয় বা চাপের মধ্যে থাকেন। মানসিক চাপের মাত্রা এতটাই অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে যে এটি আপনার দৈনন্দিন জীবনকে ব্যাহত করে।


মানসিক চাপ থেকেই অনেকে নানা রোগে আক্রান্ত হন। তবে এ থেকে মুক্তির উপায় আছে। এমন কিছু বিষয় আছে যেগুলো অভ্যাসে পরিণত করতে পারলে উদ্বেগজনিত ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনা যায়।


মানসিক উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কী করবেন?


১) প্রথমেই খুঁজে বার করতে হবে ঠিক কোন জায়গা থেকে এই ভয় বা আতঙ্কের উদ্রেক হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে মন খুলে কারও সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন। পরিবারে যাকে বেশি ভরসা করেন বা যিনি সবচেয়ে কাছের বন্ধু, তাঁর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করুন। যদি তেমন কেউ না থাকেন, অবশ্যই মনোবিদের পরামর্শ নিতে হবে।


২) প্রতিদিন দশ থেকে পনের মিনিট মেডিটেশন করুন। দেখবেন সপ্তাহখানেক পর থেকে অনেকটাই ফল পাচ্ছেন। টেনশন কমছে, আত্মবিশ্বাস ফিরে পাচ্ছেন। সকাল, সন্ধ্যা বা রাত্রে যে কোনও সময় আপনি মেডিটেশন করতে পারেন। যে সময় আপনার চারপাশের পরিবেশ শান্ত থাকে সেই সময়টা মেডিটেশনের জন্য বেছে নিন।


৩) প্রতিদিন প্রাণায়মের অভ্যাস আপনাকে অনেকটাই টেনশনমুক্ত রাখতে পারে। প্রাণায়াম শ্বাসের আদান-প্রদানকে নিয়ন্ত্রণে রেখে নানা ঘটনায় মনকে শান্ত থাকার পাঠ শেখায়।


৪) অনেকের প্রবল টেনশনের সময় ঘুম পায়। কেউ বা দু’চোখের পাতা এক করতে পারেন না। যদি নিরিবিলিতে ঘুমানোর অভ্যাস রপ্ত করতে পারেন, তাহলে তার মতো ভাল উপায় আর হতেই পারে না। টেনশন গ্রাস করছে দেখলে বা অনেকটা মানসিক চাপ পড়লে সময় বের করে একটু ঘুমিয়ে নিন।


৫) স্বাস্থ্যকর মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট ও পটাশিয়াম জাতীয় খাবার খান। অ্যাভোকাডো জাতীয় ফল রাখুন ডায়েটে। এটি টেনশন কমিয়ে ব্লাড প্রেশারকে নিয়ন্ত্রণে রাখে।


৬) খুব টেনশনের সময় এমন কোনও মানুষের সঙ্গ বেছে নিন, যিনি কাছে থাকলে অনেকটা চাপমুক্ত থাকতে পারেন কিংবা এমন কেউ যাকে নিজের সব সমস্যার কথা বলতে পারেন। প্রিয় মানুষের সঙ্গ মনের চাপকে অনেকটাই কমিয়ে দেয় বলে মত মনোবিদদের।


৭) গান শুনতে ভালবাসলে দিনের মধ্যে কিছুটা সময় গান নিয়ে কাটান। মনের উপর চাপ পড়া রুখতে পারে গান।


৮) গল্পের বই পড়া হোক বা পছন্দের কোনও শখ, টেনশন কমাতে সাহায্য নিন তাদের। মনকে যত অন্য দিকে রাখবেন, ততই টেনশন কমবে। যদি পার্লারে গিয়ে সময় কাটাতে বা শপিং করতে ভালবাসেন, তা হলে তা-ই করুন। এতেও টেনশনের চাপ কমে অনেকটা।


৯) প্রতিদিনের ঝক্কি-ঝামেলা থেকে মাঝে মাঝে ছুটি নিলে আপনার মস্তিষ্ক থেকে আবর্জনা দূর হয়। মস্তিষ্কসহ শরীরের যেসব কোষ ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে পড়ে সেগুলো আবার সবল হওয়ার সুযোগ পায়।


১০) উদ্বেগের জন্য যদি রাতে ঘুম না আসে, সে ক্ষেত্রে ধূমপান বা মদ্যপান কিন্তু সমাধান হতে পারে না।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com