
বাজারে এখন কাঁচা আমের পাশাপাশি পাকা আমও উঠতে শুরু করেছে। তবে প্রাকৃতিকভাবে পাকা আম বাজারে ওঠার সময় এখনো হয়নি। তার মানে বাজারে এখন যেসব আম পাওয়া যাচ্ছে তা কৃত্রিমভাবে পাকানো। মৌসুম শুরুর আগেই আম এনে ক্রেতার কাছে বেশি দামে বিক্রির জন্য কৃত্রিমভাবে পাকানো হচ্ছে আম।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আম পাকাতে ‘ক্যালশিয়াম কার্বাইড’ নামক রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। ক্যালসিয়াম কার্বাইড ছাড়াও অ্যাসিটিলিন গ্যাস, কার্বন-মনোক্সাইডের মতো রাসায়নিকগুলো ব্যবহার করে কাঁচা আম ও অন্যান্য কাঁচা ফল পাকানো হয়। এসব রাসায়নিক মানবদেহে গেলে মারাত্মক সব ক্ষতি হতে পারে।
১. রাসায়নিকগুলো এতটাই ক্ষতিকারক যে, ফলের মাধ্যমে তা শরীরে গেলে ত্বকের ক্যানসার, কোলন ক্যানসার ও জরায়ুর ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়।
২. বিশেষ করে হাইপোথাইরয়েড, পিসিওএস, ডায়াবেটিস ইত্যাদির মতো হরমোনজনিত রোগের সংখ্যা বাড়ায় আমে দেওয়া সেসব রাসায়নিক।
৩. মস্তিষ্কের ক্ষতির মতো মারাত্মক রোগ হওয়ার ঝুঁকি দেখা যায়। এমনকি পারকিনসনের ঝুঁকিও বাড়ায়।
৪. লিভার ও কিডনির সমস্যা হয়।
কিন্তু কীভাবে বুঝবেন কোন আম কৃত্রিম ভাবে পাকানো? কৃত্রিমভাবে পাকানো আম ও প্রাকৃতিক উপায়ে পাওয়া আম পার্থক্য করতে জানতে হবে টেকনিক, আসুন জেনে নেই কীভাবে তা সম্ভব।
★ আমের মৌসুমে যখন প্রচুর পরিমাণে পাকা আম পাওয়া যায় তখন প্রাকৃতিকভাবে পাকা আম সহজেই পাওয়া যায়। তাই যে মৌসুমের ফল তখনই খাওয়া উচিত।
★ কৃত্রিমভাবে পাকানো আমের চেহারা হবে উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয়, গায়ে সবুজ ছোপ থাকে। বিশেষ করে যদি আমের খোসা হলুদ হয় তবে এই ছোপ স্পষ্টভাবে বোঝা যায়। আবার কৃত্রিমভাবে পাকানো আম সাধারণ আমের তুলনায় বেশি উজ্জ্বল হলুদ রঙের হয়।
★ প্রাকৃতিকভাবে পাকা আমের শাঁস উজ্জ্বল লালচে-হলুদ রঙের হয়। তবে কৃত্রিমভাবে পাকা আম যেহেতু বাইরে থেকে পাকা মনে হলেও ভেতর থেকে পুরোপুরি পাকে না তাই শাঁসের হলুদ রঙে উজ্জ্বল ভাব থাকে না।
★ কৃত্রিমভাবে পাকানো আমের শাঁস তুলনামূলকভাবে বেশি শক্ত হয়। পাশাপাশি আম খাওয়ার সময়ে মুখে হালকা জ্বালা অনুভব হতে পারে। কৃত্রিমভাবে পাকানো আমের মিষ্টত্বও কম হয়।
★ প্রাকৃতিকভাবে পাকা ফলের চামড়ার ওপর এক ফোঁটা আয়োডিন দিলে তা গাঢ় নীল অথবা কালো বর্ণের হয়ে যাবে। কিন্তু ক্যামিকেল দ্বারা পাকানো ফলে আয়োডিনের রং অপরিবর্তিত থাকে।
★ প্রাকৃতিকভাবে পাকা আম অনেক রসালো ও মিষ্টি প্রকৃতির হয়। অন্যদিকে কৃত্রিমভাবে পাকা আমের ক্ষেত্রে রস ও মিষ্টিভাব দুটোই কম থাকে।
★ রাসায়নিক দিয়ে পাকানো আমের সবদিকটাই সমানভাবে পাকবে কিন্তু গাছ পাকা ফলের সবদিক কখনোই সমানভাবে পাকে না।
★ প্রাকৃতিকভাবে পাকা ফলের চামড়ার ওপর এক ফোঁটা আয়োডিন দিলে তা গাঢ় নীল অথবা কালো বর্ণের হয়ে যাবে। কিন্তু ক্যামিকেল দ্বারা পাকানো ফলে আয়োডিনের রং অপরিবর্তিত থাকে।
★ আমসহ যে-কোনো ফল কেনার পর তা ঘণ্টাখানেক পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর ভালোভাবে ধুয়ে নিন। আমের ক্ষেত্রে অবশ্যই খোসা ছাড়িয়ে খেতে হবে। তবে আম খাওয়ার সময় মুখে জ্বলা অনুভব করলে তা খাবেন না। অবশ্যই সঠিক মৌসুমেই আম খান।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
পদ্মা লাইফ টাওয়ার (লেভেল -১১)
১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
বাংলামোটর, ঢাকা- ১০০০
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]