সকালে উঠে স্কুলের তাড়া নেই, সাঁতার, আঁকা, নাচ ,গান বা টেবিল টেনিস খেলাও বন্ধ, নেই টিউশন যাওয়ার জন্য রেডি হওয়া। অতিমারির যুগে সকলের সঙ্গে ছোটদের জীবনও আমূল বদলে গিয়েছে। এই সময়টাতে বাড়িতেই থাকা হচ্ছে বেশিটা সময় তাই হাতে আগের থেকে বেশি সময় যাচ্ছে। ছোটদের সুষম খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলার এই হল ঠিক সময়।
বেশ কিছু বাচ্চার সারা বছর পেটের গোলমাল, কোষ্ঠকাঠিন্য, সর্দি, হাঁচি, স্কিন র্যাশের মত সমস্যা লেগেই থাকে। ছোট থেকে সঠিক খাবারের অভ্যাস না করলে একদিকে বেড়ে উঠতে অসুবিধা হয়, অন্যদিকে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার ঘাটতি থেকে যায়। পাঁচ বছর বয়স থেকে বয়ঃসন্ধি পর্যন্ত (১১ বছর থেকে ১৮ বছর) বাচ্চাদের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন পুষ্টিকর খাবার।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের ক্যালোরির চাহিদাও বাড়ে। এই বয়সে রোজকার ডায়েটে পর্যাপ্ত প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, ডি এবং সি থাকা দরকার। বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের চাহিদা মেটাতে রোজকার ডায়েটে সব রকম মৌসুমি ফল ও সবজি থাকা দরকার। শাক, সবজিদ ও ফলে থাকা ফাইবারও শরীরের জন্যে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। অনেক মা বাবা বাচ্চাদের হেলথ ড্রিঙ্ক খাওয়ান। বাজারচলতি তথাকথিত নামী দামি হেলথ ড্রিঙ্কের পরিবর্তে বিভিন্ন বাদাম, ডাল, ফল, ডিম, চিকেন থেকে অনেক বেশি পুষ্টি পাওয়া যায়।
বাচ্চাদের ডাল ভাত মাছের ঝোলের পাশাপাশি মুখরোচক খাবার দেওয়া যেতে পারে বলে মনে করেন অনেক পুষ্টিবিদ। একটু ধৈর্য নিয়ে খাবার তৈরি করে দিলে একদিকে যেমন খেতে ভাল লাগবে অন্যদিকে বাইরের খাবারের জন্যে হা-হুতাশও কমবে।
মাঝে মাঝে চিকেনের স্টু বা মাছের ঝোল ভাতের পরিবর্তে চিকেনের ছোট টুকরো, লেবু, নুন মাখিয়ে অল্প তেলে ভেজে ক্যাপসিকাম, গাজর, বিনস দিয়ে চিকেন রাইস বানিয়ে দিলে মনের আনন্দে খাবে। এছাড়া মাঝের ঝোলের বদলে সাধারণ রুই বা কাতলা মাছের চপ ভেজে দিলেও মাছ খাওয়া নিয়ে ঝামেলা করবে না।
এছাড়া বিভিন্ন ফলের টুকরোতে মধু ও অল্প ক্রিম দিয়ে ফ্রুট স্যালাড বানিয়ে দিলে মনের আনন্দে খাবে। বাইরের খাবারের জন্য বায়না করবে না। দুধ, ঘোল বা লস্যি, বাড়িতে তৈরি সুপ, ডাবের জল, ফল বা ফলের রস, পাতিলেবু চিনির সরবত, মধুর জল ইত্যাদি শরীরের জলের চাহিদা মেটাবে। নুডলস বা পিৎজা কিংবা বেশি তেল দিয়ে হাক্কা নুডলসের বদলে গাজর, বিনস, বরবটি, ক্যাপসিকাম ও টোম্যাটো দিয়ে ভেজিটেবল নুডলস যথেষ্ট পুষ্টিকর।
মায়েরা ছোটদের রান্নায় সাহায্য করতে বলতে পারেন। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বিভিন্ন খাবার খেলে একদিকে যেমন পুষ্টির ঘাটতি হবে না, তেমন খাবার খেতে একঘেয়েও লাগবে না। মেয়েদের ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সে আর ছেলেদের ১২ থেকে ১৬ বছর বয়সে বাড়তি পুষ্টি প্রয়োজন। বয়ঃসন্ধির এই সময়টায় বাড়তি আয়রন, ক্যালসিয়াম-সহ বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবারের অভাবে সঠিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। তাই এই বয়সে ডায়েটের উপর বিশেষ নজর রাখা দরকার। যথাযথ ডায়েট না করার জন্যে এই বয়সের ছেলে মেয়েদের মধ্যে আয়রন ও ক্যালসিয়ামের অভাব জনিত সমস্যা দেখা যায়।
বিবার্তা/এসএ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]