
প্রশিক্ষণ ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠান প্রাণী উদ্ধারের কাজ করতে পারবে না বলে নির্দেশন দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে টিয়া পাখি উদ্ধার করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত ‘রবিনহুড-দ্য অ্যানিমেল রেসকিউয়ার’ এর স্বেচ্ছাসেবক আতিফ ইসলামকে কেন পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছেন আদালত।
বুধবার (১৩ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও মোহাম্মদ আতাবুল্লার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
রিটকারীর আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ১১ মার্চ এ বিষয়ে শুনানি শেষ হয়েছে। তারপর আদেশ দেওয়ার জন্য আজ বুধবার (১৩ মার্চ) দিন ঠিক করেন হাইকোর্ট।
এর আগে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিট করা হয়। রিট আবেদনে বলা হয়, কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ ও নিবন্ধন ছাড়াই ‘রবিনহুড-দ্য অ্যানিমেল রেসকিউয়ার’ এবং ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এর আগে গত ২২ ডিসেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘‘টিয়া পাখি উদ্ধারে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ‘রবিনহুডের’ স্বেচ্ছাসেবীর মৃত্যু” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদন করা হয়।
এর আগে গত ২১ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র আতিফ ইসলাম। তার মায়ের দাবি, কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ না থাকার পরও জোর করে আতিফকে সেদিন পাখি উদ্ধার করতে বলা হয়েছিল সংগঠনটির পক্ষ থেকে।
প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, বিদ্যুতের তারে আটকে পড়েছিল টিয়া পাখি। সেই টিয়া পাখি উদ্ধার করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘রবিনহুড-দ্য অ্যানিমেল রেসকিউয়ার’ এর তিন স্বেচ্ছাসেবী। পরে তাদের একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় ২১ ডিসেম্বর বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত রবিনহুডের স্বেচ্ছাসেবী আতিফ ইসলাম (৩০) ওই রাত ২টার দিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার শরীরের ৮৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। তার বাসা লালবাগ এলাকায়। তার বাবার নাম বাবলা ইসলাম। এ ঘটনায় শফিকুর রহমানের (৪৫) শরীরের ২০ শতাংশ দগ্ধ হয়। আরেক স্বেচ্ছাসেবক রুপ (২৫) সামান্য আহত হন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, টিয়া পাখিটি বিদ্যুতের তারে আটকে থাকার খবর পেয়ে রবিনহুডের স্বেচ্ছাসেবীরা উদ্ধার করতে যান। পাখিটি তারের সঙ্গে লেগে থাকা ঘুড়ির সুতায় জড়িয়ে ছিল। যেখানে টিয়া পাখিটি আটকে ছিল, সেখানে গিয়ে একটি তিনতলা ভবনের ছাদে যান স্বেচ্ছাসেবীরা। ছাদ থেকে একটি পাইপ দিয়ে সুতা ছিঁড়ে টিয়া পাখিটি ছাড়ানোর চেষ্টা করেন আতিফ। তখন আতিফ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। সঙ্গে থাকা গাড়িচালক শফিকুরও দগ্ধ হন। তারা দুজন রুপকের ওপর পড়লে তিনি সামান্য আহত হন।
আদালতে ওইদিন শুনানিতে রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এবিএম শাহজাহান আকন্দ মাসুম। এসময় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা যাওয়া আতিফ ইসলামের মা তানজিনা রহমান টুম্পা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
বিবার্তা/মাসুম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]