শিশু নির্যাতনের কারণে জাতিসংঘের কালো তালিকায় ইসরায়েল
প্রকাশ : ০৮ জুন ২০২৪, ২০:৩০
শিশু নির্যাতনের কারণে জাতিসংঘের কালো তালিকায় ইসরায়েল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

গাজায় সশস্ত্র সংঘাতে শিশুদের ওপর হামলা ও নির্যাতনের কারণে ইসরায়েলকে ‘কালো তালিকায়’ যুক্ত করছে জাতিসংঘ।


একজন ইসরায়েলি কূটনীতিক দেশটির কালো তালিকায় যুক্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।


৮ জুন, শনিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।


মূলত যে দেশগুলো সশস্ত্র সংঘাতে শিশুদের ওপর নির্যাতন করে তাদের এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে সংস্থাটি। টানা আট মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন চলছে এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অব্যাহত হামলায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে।


শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান বলেছেন, ইসরায়েলের সেনাবাহিনীকে ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করার বিষয়ে তিনি জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সিদ্ধান্তের আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি পেয়েছেন।


এরদান দাবি করেন, ‘এটি সম্পূর্ণভাবে আপত্তিজনক এবং ভুল। আমি লজ্জাজনক এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় বলেছি- আমাদের সেনাবাহিনী বিশ্বের সবচেয়ে নৈতিক। ইসরায়েলকে কালো তালিকাভুক্ত করেছেন একমাত্র মহাসচিব, যিনি সন্ত্রাসবাদকে উৎসাহিত করেন এবং ইসরায়েলের প্রতি ঘৃণার মাধ্যমে পরিচালিত হন।’


এদিকে এ বিষয়ে ফোনকলের ভিডিও এক্সে তিনি প্রকাশ করায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক। জাতিসংঘের ওই সিদ্ধান্তের কথা জানাতে গিলাদ এরদানকে ফোন করেছিলেন বৈশ্বিক এই সংস্থাটির এক কর্মকর্তা। গিলাদ ফোনকলে তার প্রতিক্রিয়া জানান এবং এর অংশবিশেষই পরে এক্সে পোস্ট করেন।


ডুজারিক বলেন, বার্ষিক ‘সশস্ত্র সংঘাতে শিশু’ প্রতিবেদনে সংযোজিত নতুন তালিকাভুক্ত দেশগুলোর কথা জানাতেই জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা ইসরায়েলি দূতকে ফোন করেছিলেন।


প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের মহাসচিব প্রতি বছর নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রতিবেদন পাঠান যেখানে বিশ্বব্যাপী সংঘাতে ‘শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও নিপীড়নে সম্পৃক্ত পক্ষগুলোর’ তালিকা দেওয়া হয়। এতে শিশুদেরকে হতাহত করাসহ নিপীড়নের প্রমাণ এবং যৌন সহিংসতার তথ্য থাকে।


জাতিসংঘ মহাসচিবের চলতি বছরের এই প্রতিবেদনটি আগামী ১৪ জুন নিরাপত্তা পরিষদে উপস্থাপন করা হবে। তবে তার আগেই ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত এরদানকে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।


জাতিসংঘের এমন পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিন। উপত্যকাটির সিনিয়র কর্মকর্তা রিয়াদ মালিকি বলেন, "বর্তমানে গাজার বিপর্যয় বিশ্ব খোলা চোখে দেখছে। যেখানে বিশেষ করে নারী ও শিশুদের লক্ষ্য করে গণহত্যা চালানো হচ্ছে। জাতিসংঘের মহাসচিব ইসরায়েলকে 'কালো তালিকায়' না রাখার আর কোনো অজুহাত নেই।"


এদিকে ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৬,৭০০ জন নিহত হয়েছে। যাদের মধ্যে ১৫,৫৭১ জন শিশু।


জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা জানান, গাজায় খাদ্য, পানি, ওষুধ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহে ইসরায়েলের বিধিনিষেধ আরোপ মানবিক সংকট তৈরি করেছে। উপকূলীয় অঞ্চলের কিছু অংশ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে হয়েছে।


সম্প্রতি ইউনিসেফ জানায়, গাজায় প্রতি ১০ জন ফিলিস্তিনি শিশুর মধ্যে নয়জন গুরুতর খাদ্য সংকটের মধ্যে বেঁচে আছে। ২০২০ সালেও যে পরিমাণ ছিল ১৩ ভাগ।


বিবার্তা/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com