
মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীকে বেসামরিক লোকজনের ওপর হামলা করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ৯ সদস্যরাষ্ট্র।
৬ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক শেষে এ সংক্রান্ত একটি যৌথ বিবৃতি দেয় নিরাপত্তা পরিষদ, যেখানে নিরাপত্তা পরিষদের ৯ সদস্য রাষ্ট্রের স্বাক্ষর ছিল। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, স্লোভেনিয়া, সুইজারল্যান্ড, ইকুয়েডর এবং মাল্টা। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা থেকে বিরত ছিল দুই স্থায়ী সদস্য চীন এবং রাশিয়াসহ ৭ সদস্যরাষ্ট্র।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা মিয়ানমারের বেসামরিক লোকজনের প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ২ হাজার ৬৬৯ ধারা অনুযায়ী, মিয়ানমারের সরকারকে বেসামরিকদের ওপর হামলা-গোলাবর্ষণ, ইচ্ছেমতো গ্রেপ্তার ও বন্দি করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট এবং স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ সব রাজনৈতিক মুক্তির অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’
জাতিসংঘে নিযুক্ত মিয়ানমারের দূত ইউ কিয়াও মোয়ে তুন নিরাপত্তা পরিষদের এই বিবৃতিকে স্বাগত জানিয়ে পৃথক এক বিবৃতিতে বলেছেন, মিয়ানমারের সাধারণ জনগণের পক্ষ থেকে এই বিবৃতির জন্য নিরাপত্তা পরিষদকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এর আগে ২০২২ সালেও ২৬৬৯ ধারা মেনে মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তাকে সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছিল নিরাপত্তা পরিষদ; কিন্তু যেহেতু এই আহ্বান বাস্তবায়নের জন্য শক্তি প্রয়োগের এখতিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের নেই, তাই জান্তা তাতে কর্ণপাত করেনি।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের সাধারণ জনগণ মনে করে, নিরাপত্তা পরিষদের ক্ষমতা আরও বাড়ানো প্রয়োজন; যেন যে কোনো আহ্বান বাস্তবায়ন করার মতো শক্তি পরিষদের থাকে। আজ যদি নিরাপত্তা পরিষদের সেই ক্ষমতা থাকত, তাহলে মিয়ানমারের সাধারণ জনগণের জীবন রক্ষা পেতো।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থী নেত্র অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন এনএলডি সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং এ অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন।
সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করার পরপরই ফুঁসে উঠেছিল মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী জনতা। গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু করেন তারা। কিন্তু মিয়ানমারের পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভ দমনে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা শুরু করার পর ২০২২ সালের দিকে গণতন্ত্রপন্থিদের একাংশ জান্তাবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোতে যোগ দেওয়া শুরু করে।
বিবার্তা/এমজে
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]