হার্ট অ্যাটাকে বাবার মৃত্যু, একাকী বাড়িতে ক্ষুধায় প্রাণ গেল ২ বছরের শিশুর
প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ২১:১২
হার্ট অ্যাটাকে বাবার মৃত্যু, একাকী বাড়িতে ক্ষুধায় প্রাণ গেল ২ বছরের শিশুর
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

দুই বছরের শিশু সন্তান ব্রনসন ব্যাটার্সবিকে নিয়ে বাড়িতে একা থাকতেন ৬০ বছর বয়সী কেনেথ। একদিন হার্ট অ্যাটাকে বাড়িতেই মারা যান বাবা কেনেথ। তার অবর্তমানে বাড়িতে কেউ না থাকায় খাবার না পেয়ে ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় মারা যায় শিশুটিও। বাবার মরদেহের পাশেই পাওয়া যায় শিশুটির মরদেহ। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের লিঙ্কনশায়ারে হৃদয়বিদারক এই ঘটনা ঘটেছে। কাউন্টি কাউন্সিল এই শিশুর মৃত্যু নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।


বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত ৯ জানুয়ারি লিঙ্কনশায়ারে ওই দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ দুজনকে গত ২৬ ডিসেম্বর সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল। এর দুই সপ্তাহ আগে কেনেথ হার্ট অ্যাটাক করেছিলেন।


ধারণা করা হচ্ছে, ২৯ ডিসেম্বর আবারও হার্ট অ্যাটাক করে মৃত্যু হয় তার। বাড়িতে অন্য কেউ না থাকায় শিশু ব্রনসন ব্যাটার্সবি একাকী হয়ে যায়। তাঁকে খাবার খাইয়ে দেওয়ার মতো কেউ না থাকায়- অনাহারে তার মৃত্যু হয়েছে।


এই শিশুটি অরক্ষিত থাকায় প্রতি মাসে একবার শিশু পরিষেবা সংস্থার কর্মীরা তাকে দেখে যেতেন। তারই অংশ হিসেবে গত ২ জানুয়ারি এক সমাজকর্মী শিশুটির বাড়িতে যান। এর আগে ২৭ ডিসেম্বর তার বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন তিনি। ২ জানুয়ারি বাড়িতে আসলেও কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে তিনি অন্যান্য জায়গায় খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করেন- যেখানে শিশুটি থাকতে পারে। এরপর দুই দিন পর তিনি আবারও শিশুটির খোঁজে বাড়িতে আসেন; তখনো কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে পুলিশকে অবহিত করেন।


কিন্তু কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে না পেরে ওই বাড়ির মালিকের কাছ থেকে চাবি নিয়ে ঘরে ঢুকে তিনি দেখতে পান বাবার পাশে শিশুটি মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। খাবার ও পানি না পাওয়ায় তার শরীর কুঁকড়ে গিয়েছিল।


বিবিসি জানিয়েছে, শিশুটি অরক্ষিত থাকায় প্রতি মাসে একবার করে শিশুসেবা সংস্থার কর্মীরা তাকে দেখে যেতেন। তারই অংশ হিসেবে গত ২ জানুয়ারি এক সমাজকর্মী কেনেথের বাড়িতে যান। এর আগে ২৭ ডিসেম্বর কেনেথের বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন ওই সমাজকর্মী।


কিন্তু সেদিন বাড়িতে গিয়ে কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে শিশুসেবা সংস্থার ওই কর্মী অন্যান্য জায়গায় খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করেন, যেখানে শিশুটি থাকতে পারে। পরে কাউকে না পেয়ে তিনি চলে আসেন। এর দুই দিন পর তিনি আবারও শিশুটির খোঁজে ওই বাড়িতে যান। সেদিনও বাড়িতে কারও সাড়া-শব্দ না পেয়ে পুলিশকে খবর দেন ওই কর্মী।


কিন্তু পাঁচ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও পুলিশের কাছ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে বাড়ির মালিকের কাছ থেকে চাবি নিয়ে তালা খুলে ভেতরে ঢোকেন ওই সমাজকর্মী। ঘরে ঢুকে তিনি দেখতে পান, বাবার মরদেহের পাশে ব্রনসনও মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। খাবার-পানি না পাওয়ায় তার শরীর কুঁকড়ে গিয়েছিল।


শিশুটির মা সারাহ পিসি (৪৩) জানিয়েছেন, বড়দিনের আগে সন্তানের সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি। এরপর আর বাচ্চাকে দেখতে যাননি তিনি। কেনেথের সঙ্গে ঝামেলা থাকায় তিনি আলাদা থাকতেন। তার দাবি, শিশুসেবা সংস্থার কর্মীরা একাধিকবার তার সন্তানকে বাঁচানো সুযোগ পেয়েও এড়িয়ে গেছেন।


লিঙ্কনশায়ার পুলিশের এক মুখপাত্র বলেছেন, পুলিশ গত ৯ জানুয়ারি বেলা ৩টা ২৫ মিনিটে স্কেগনেসের এই ঘটনার বিষয়ে অবগত হয়। ঘটনার তদন্ত শেষ হয়েছে এবং এই মৃত্যুকে সন্দেহজনক হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে না। এরপরেও জড়িত সংস্থাগুলোর কার্যকলাপ বিশ্লেষণ করা হবে। এর বেশি কিছু এখনই বলা যাচ্ছে না।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com