আদানি পরিবারের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ, গোপনে কিনছে নিজেদের শেয়ার
প্রকাশ : ৩১ আগস্ট ২০২৩, ১৮:২৭
আদানি পরিবারের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ, গোপনে কিনছে নিজেদের শেয়ার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

‘জালিয়াতি’ করে নিজেদের সংস্থার শেয়ার দর বাড়িয়েছে দেশের অন্যতম ধনী ব্যক্তি গৌতম আদানির গোষ্ঠী! আমেরিকার লগ্নি সংক্রান্ত গবেষণাকারী সংস্থা ‘হিন্ডেনবার্গ রিসার্চে’র রিপোর্টে এমন দাবির পর শোরগোল পড়ে গিয়েছে। রাতারাতি মুখ থুবড়ে পড়ছে আদানি গোষ্ঠীর সংস্থাগুলির শেয়ার। হুড়মুড় করে নেমেছে সেনসেক্সও।


গোপন নথির বরাত দিয়ে গার্ডিয়ান জানিয়েছে, আদানি পরিবারের সহযোগীরা বিগত কয়েক বছর ধরেই বিচক্ষণতার সঙ্গে নিজদের প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কিনে নেওয়ার কাজটি করে যাচ্ছে। বিশেষ করে আদানি গ্রুপ যখন উল্কার বেগে বর্ধিত হচ্ছিল, তখন থেকেই এই প্রবণতা বেড়ে যায়।


গৌতম আদানির উত্থান এতটাই দ্রুততর ছিল যে, ২০২২ সাল নাগাদ তিনি ভারতের শীর্ষ ধনী এবং বিশ্বের তৃতীয় ধনী ব্যক্তিতে পরিণত হন। সে বছর তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ১২ হাজার কোটি ডলার। পরে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে নিউইয়র্কভিত্তিক আর্থিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ আদানি গ্রুপকে ‘করপোরেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জালিয়াতির’ অভিযোগে অভিযুক্ত করে।


হিন্ডেনবার্গ অভিযোগ করে, আদানি গ্রুপ ‘নির্লজ্জভাবে স্টক ম্যানিপুলেশন করে এবং আর্থিক বিবরণী জালিয়াতি করেছে। এর উদ্দেশ্য ছিল ছদ্মবেশী বিদেশি প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে নিজ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কিনে নেওয়া। আদানি পরিবারের এমন কর্মকাণ্ডের ফলে আদানি গ্রুপের শেয়ারের মূল্য আকাশচুম্বী হয়ে যায়। ২০২২ সালে একপর্যায়ে আদানি গ্রুপের মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৮ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। পরে অবশ্য হিন্ডেনবার্গের প্রতিবেদন প্রকাশের পর আদানি গ্রুপ ১০ হাজার কোটি ডলার সম্পদ হারায়।


তবে আদানি গ্রুপ সব সময়ই হিন্ডেনবার্গের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে, ‘শর্ট-সেলারের স্টক ম্যানিপুলেশনের অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই এবং এসব অভিযোগ ভারতীয় আইনের অজ্ঞতা থেকে উদ্ভূত।’ প্রতিষ্ঠানটি এও বলেছে যে, এটি ভারতের ওপর পরিকল্পিত আক্রমণ। এমনকি এটি ভারতের প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা সততা ও মানের ওপর হামলা।


এদিকে, অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্টের (ওসিসিআরপি) প্রকাশ করা নতুন নথি যা গার্ডিয়ান ও ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের হাতে এসেছে তাতে প্রথমবারের মতো মরিশাসে একটি অপ্রকাশিত ও জটিল অফশোর কোম্পানির বিবরণ প্রকাশ করা হয়েছে, যা আপাতদৃষ্টিতে আদানি পরিবারের সহযোগীদের দ্বারা পরিচালিত। এই প্রতিষ্ঠানকে ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আদানি গ্রুপের শেয়ারের দাম বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।


উল্লেখ্য, মরিশাসের সেই অফশোর প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে জানার চেষ্টা করা হলেও এখনো সে বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।


নথিতে আরও বলা হয়েছে, এসব গোপন অফশোর কোম্পানি পরিচালনায় আদানির বড় ভাই বিনোদের সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে। তবে আদানি গ্রুপ জানিয়েছে, আদানি গ্রুপের দৈনন্দিন বিষয়ে বিনোদ আদানির কোনো অংশগ্রহণ নেই।


নথিতে এসব অফশোর কোম্পানি থেকে বিনোদ আদানির দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগীর লাভবান হওয়ার প্রমাণও রয়েছে। এ ছাড়া একাধিক আর্থিক বিবরণী এবং বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে দেখা গেছে, মরিশাসের দুটি অফশোর প্রতিষ্ঠান থেকে আদানির শেয়ার কেনায় বিনিয়োগ করা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠান দুটিকে আবার দেখাশোনা করে দুবাইভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান, যেটি পরিচালনা করে থাকেন বিনোদন আদানির কর্মকর্তারা।


বিবার্তা/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com