অক্টোবর থেকেই চিনি রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা ভারতের
প্রকাশ : ২৪ আগস্ট ২০২৩, ১৪:০৩
অক্টোবর থেকেই চিনি রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা ভারতের
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ চিনি উৎপাদনকারী দেশ ভারত এবার চিনি রপ্তানি বন্ধ করতে যাচ্ছে। ২৩ আগস্ট, বুধবার তিনটি সরকারি সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া নতুন মৌসুম থেকে চিনি উৎপাদনকারী কারখানাগুলোকে রপ্তানি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হতে পারে।


বৃষ্টির অভাবে আখের ফলন কম হওয়ায় আগামী মৌসুমে অক্টোবর থেকে এই উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে দেশটি। সাত বছর পর এই প্রথমবারের মতো চিনি রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছে ভারত।


ভারতের নিষেধাজ্ঞা এরই মধ্যে চড়তে থাকা বিশ্ব বাজারেও বড় ধরনের প্রভাবের আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
খবরে বলা হয়েছে, খরায় উৎপাদনে বড় ধরনের ধাক্কায় নিজেদের বাজার সামলাতে চিনি রপ্তানি বন্ধ করতে যাচ্ছে ভারত।


সব থেকে বেশি চিনি উৎপাদনকারী ভারত ভোক্তা হিসেবেও দ্বিতীয় অবস্থানে। আর রপ্তানিতে ব্রাজিলের পরই রয়েছে দেশটি।


অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম স্থিতিশীল রাখতে চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা এবং পেঁয়াজে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের পর চিনি নিয়ে এ সিদ্ধান্ত আসতে যাচ্ছে ভারত।


রয়টার্স বলেছে, ভারতের বাজারে খুচরায় চিনির দাম গত সপ্তাহে দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। দাম সহনীয় রাখতে সরকার আগস্টে চিনি উৎপাদনকারী কারখানাগুলোকে অতিরিক্ত দুই লাখ টন বিক্রির অনুমতি দিয়েছে।


জুলাই ও আগস্টের বড় সময়জুড়ে বৃষ্টি না হওয়ায় চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে।মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকে ভারতে মোট আখের অর্ধেকের বেশি উৎপাদন হয়। এ বছর এখন পর্যন্ত এসব রাজ্যের শীর্ষ আখ উৎপাদনকারী জেলাগুলোতে গড় পরিমাণের চেয়ে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কম বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তরের তথ্যে জানা গেছে।


বর্তমান মৌসুমের জন্য আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কারখানাগুলোকে কেবল ৬১ লাখ মেট্রিক টন চিনি রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে ভারত সরকার। এর আগে গত মৌসুমে এক কোটি ১১ লাখ মেট্রিক টন চিনি রপ্তানির অনুমোদন পেয়েছিল এসব কারখানা।


এ শিল্পসংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেছেন, বৃষ্টি কম হওয়ায় আগামী ২০২৩/২৪ মৌসুমে আখের ফলন কমে যাবে এবং ২০২৪/২৫ মৌসুমে আখচাষের পরিমাণ হ্রাস পাবে।


ভারতে এ সপ্তাহে স্থানীয় বাজারে চিনির দাম বেড়ে গত দুবছরে সর্বোচ্চ হয়েছে। ফলে সরকার কারখানাগুলোকে আগস্ট মাসে বাড়তি দুই লাখ মেট্রিক টন চিনি বিক্রির অনুমতি দিয়েছে।


দেশটিতে ২০২৩/২৪ মৌসুমে চিনির উৎপাদন ৩ দশমিক ৩ শতাংশ হ্রাস পেয়ে তিন কোটি ১৭ লাখে নেমে আসতে পারে।


গত মাসে হঠাৎ করে ভারত বাসমতি ছাড়া সব ধরনের চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করে। এছাড়া গত সপ্তাহে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নয়াদিল্লি ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে।


এ বছরের শেষ দিকের সাধারণ নির্বাচনের আগে পণ্যমূল্যের দাম স্থিতিশীল রাখার চেষ্টার অংশ হিসেবে নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক আরোপের মাধ্যমে রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ করতে চায় দেশটির সরকার।


বাংলাদেশে বছরে ২১ লাখ মেট্রিক টন চিনির চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে এক লাখ টনের মতো চিনি দেশে উৎপাদিত হয়। বাকি চিনি ভারত, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা থেকে আমদানি করা হয়।


সিটি, মেঘনা, এস আলম, দেশবন্ধু ও আবদুল মোনেম লিমিটেডের মতো কম্পানিগুলো অপরিশোধিত চিনি আমদানি করে কারখানায় পরিশোধনের পর বাজারজাত করে। সরাসরি পরিশোধিত চিনি আমদানি করে খাদ্যপণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। বছরে কমবেশি ২১ লাখ টন চিনি আমদানি হয়।


গত এক বছরে বাংলাদেশে চিনির দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। ২০২২ সালের জুন মাসে চিনির দাম ছিল প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৮৪ টাকা। বিশ্ববাজারে দাম কিছুটা কমায় সম্প্রতি পরিশোধিত খোলা চিনি প্রতি কেজিতে পাঁচ টাকা কমিয়ে ১৩০ টাকা এবং পরিশোধিত প্যাকেট চিনি পাঁচ টাকা কমিয়ে ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসআরএ)।


বিবার্তা/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com