টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার চলতে থাকার সময়ই ভারতের সাবেক সংসদ (রাজ্যসভা) সদস্য আতিক আহমেদ ও তার ভাই আশরাফকে পুলিশের সামনেই গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার (১৫ এপ্রিল) ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের প্রয়াগরাজ শহরে এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, হত্যা ও হামলার একটি মামলায় বৃহস্পতিবার গ্রেফতারের পর আতিক আহমেদকে শনিবার রাতে শারীরিক পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সেময় পুলিশ তার পাহারায় নিয়োজিত ছিল।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রিজন ভ্যান থেকে নামতেই হাসপাতালের সামনে আতিক ও তার ভাই আশরফকে ঘিরে ধরেন সাংবাদিকরা। পুলিশি এনকাউন্টারে ছেলে আসাদের মৃত্যু ও তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যেতে না পারা নিয়েই নানা প্রশ্ন করছিলেন সাংবাদিকরা। এরই একপর্যায়ে হঠাৎ এক ব্যক্তি হাত উঁচিয়ে এসে আতিকের মাথায় বন্দুক ঠেকান এবং ট্রিগারে চাপ দেন। আতিক মাটিতে লুটিয়ে পড়ার পরও আরও কিছুক্ষণ এলোপাথাড়ি গুলি চালানো হয়।
পরে পাশে থাকা তার ভাই আশরাফকেও গুলি করে হত্যা করেন অস্ত্রধারীরা, এবং দুইজনকে খুন করার পরে আত্মসমর্পণও করেন, পুলিশ তাদের নিয়ে যায় হেফাজতে।
কয়েকদিন আগেই পুলিশের গুলিতে নিহত হয় আতিক আহমেদের ছেলে আসাদ। কিছুদিন আগেই এই সংসদ সদস্য বলেছিলেন, পুলিশি হেফাজতে থাকলেও তার প্রাণনাশের আশঙ্কা আছে।
এদিকে, পুলিশের সামনেই খুব কাছ থেকে গুলি করে দুই অপরাধীকে খুনের ঘটনায় গোটা উত্তর প্রদেশে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে হামলাকারী তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শান্তি বজায় রাখতে উত্তর প্রদেশের সব জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, সন্দেহভাজন ৩ জনকে ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে, হামলাকারীরা সাংবাদিক সেজে ভিড়ের মধ্যেই অবস্থান করছিলেন। আতিক প্রিজন ভ্যান থেকে নামেতেই সাংবাদিকদের মতোই কথা বলার অজুহাতে পুলিশকে টপকে একদম পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জে পৌঁছে যান হামলাকারীরা।
এ ঘটনার পরই রাতারাতি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। অশান্তি রুখতে উত্তর প্রদেশের সব জেলায় ১৪৪ ধারা জারির ঘোষণা দেন।
বিবিসি বলছে, গত মাসে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট আতিক আহমেদের আবেদনের শুনানি করতে অস্বীকার করে। ওই আবেদনে তিনি পুলিশের কাছ থেকে তার জীবনের হুমকি রয়েছে বলে অভিযোগ করেন। বিরোধী দলগুলো এ হত্যাকাণ্ডকে নিরাপত্তার ত্রুটি বলে সমালোচনা করেছে।
গত ছয় বছরে উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে পুলিশের হাতে বিভিন্ন অভিযোগের সম্মুখীন ১৮০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছেন। এসব ঘটনার মাধ্যমে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও দাবি করছে বিরোধী দলগুলো। এছাড়া মানবাধিকার কর্মীরাও উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের পুলিশের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ এনেছেন। তবে রাজ্য সরকার এসব অভিযোগ স্বীকার করেনি।
বিবার্তা/নিলয়
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]