ভারতের ঝাড়খণ্ডে চার বছর আগে এক মুসলিম ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ১০ জন আসামিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। যদিও একইসঙ্গে বিচারক অমিত শেখর বলেছেন, আসামিদের সরাসরি খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য যথেষ্ঠ প্রমাণ নেই।
পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খণ্ডে ১৯ জুন ২০১৯ সালে হওয়া সে ঘটনায় ২৪ বছর বয়সি তাবরেজ আনসারিকে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগ তুলে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পিটিয়েছিল। এ ঘটনার কয়েক দিন পর তার মৃত্যু হয়।
প্রাথমিকভাবে এ ঘটনায় পুলিশ খুনের অভিযোগ না নেয়ার জন্য সমালোচিত হয়েছিল। পরে তারা একটি সম্পূরক চার্জশিটের মাধ্যমে আসামিদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনে।
সে সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়া এক ভিডিওতে তাবরেজ আনসারিকে পিটুনি থেকে বাঁচার জন্য কাকুতি-মিনতি করতে দেখা যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, আতঙ্কিত আনসারিকে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে, উপস্থিত জনতা তাকে আঘাত করছিল এবং তার মুখ দিয়ে রক্ত ও চোখ দিয়ে অশ্রু ঝড়ছিল।
সে সময় আনসারিকে হিন্দু দেবতাদের গুণগান গাইতেও বাধ্য করা হয়, যা ভারতজুড়ে সমালোচনার ঝড় তোলে।
আনসারি পরে জানায়, তাকে সারা রাত ধরেই আঘাত করা হয় এবং পরদিন তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে ঘটনার তিন দিন পর ২২ জুন তার বমি ও বুকে ব্যথার কারণে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তার পরিবারের পক্ষ থেকে সে সময় অভিযোগ করা হয়, আহত হওয়ার পরেও পুলিশের পক্ষ থেকে চিকিৎসার জন্য যথাযথ কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এমনকি আটকের পর তার সঙ্গে পরিবারকে দেখাও করতে দেয়া হয়নি। যদিও রাজ্য পুলিশ গাফিলতির কথা অস্বীকার করেছে।
আনসারির এ ঘটনাকে কংগ্রেস দলের সিনিয়র নেতা রাহুল গান্ধী ‘মানবতার কলঙ্ক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন।
সমালোচক ও বিরোধী নেতারা দাবি করে আসছেন, ২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর দেশটিতে মুসলিমবিরোধী সহিংসতা বেড়েছে। তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের হামলার দ্রুত ও জোরালো নিন্দা করা থেকে বিরত থাকেন।
যদিও আনসারির ঘটনায় মোদি বলেছিলেন, তার হৃদয় ব্যথিত। এর আগেও তিনি বলেছিলেন, গরুর নামে মানুষ হত্যা অগ্রহণযোগ্য। সূত্র: বিবিসি
বিবার্তা/কেআর
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]