শিরোনাম
দেশের জনগনকে বঙ্গবন্ধুর মতো কেউ ভালোবাসেনি
প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২০, ২০:০৬
দেশের জনগনকে বঙ্গবন্ধুর মতো কেউ ভালোবাসেনি
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

আজন্ম চিন্তা চেতনায় লালিত মহান আদর্শ,বাংলাদেশের আরেক নাম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।জগৎ বিখ্যাত কত নেতা দার্শনিক আমাকে মুগ্ধ করেন,টানেন কিন্তু বঙ্গবন্ধুর মতোন কেউ হৃদয়ে আসন নিতে পারেননা।এই দেশ তিনি স্বাধীনই করেননি,এই দেশের তিনি জাতির পিতাই নন,দেশের জন্য তিনি জীবনই দেননি,এই দেশের মাটি ও জনগনকে তার মতোন কেউ ভালো বাসেননি।এমন উদার গনতান্ত্রীক অসাম্প্রদায়িক কোমল মনের দেশপ্রেমিক, মোহনীয় ব্যক্তিত্বের নির্লোভ সৎ ত্যাগী,নিরাভরন সাদামাটা জীবনের দূর্ধর্ষ সাহসী সুপুরুষ তেজস্বী নেতা আর কখনো আসেননি, আসবেন ও না।তার মতোন একদিকে কর্মী দরদী অন্যদিকে নানা মত পথের মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় দেবার মতোন বিশাল হৃদয়ের নেতা বিশ্ব রাজনীতিতে বিরল।


তার মতোন একাধারে সাংগঠনিক দক্ষতা ও জনগনকে বাগ্মিতায় চুম্বকের মতোন টানার যাদুকরি ক্ষমতার রাজনীতির কবিও ও নজিরবিহীন। অতুলনীয় ব্যবহারে সবাইকে আপন করে নেবার ক্ষমতা ছিলো তার।তিনি একদিকে আওয়ামীলীগকে শক্তিশালী ও জনপ্রিয় দলে যেমন পরিনত করেন,তেমনি সেনাশাসক ইয়াহিয়া খানের অধীনে নির্বাচনে নিজের ইমেজে দলকে জয়ীই করেননি,একাত্তরের ৭মার্চের ভাষনে গোটা জাতিকে এক মোহনায় মিলিত করে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে টেনে আনেন।জীবনের ১৩বছর জেল খাটা আদর্শের প্রশ্নে আপসহীন, আমাদের ইতিহাসের মহানায়ক শেখ মুজিবুর রহমান।


আগষ্ট কেবল অশ্রু বেদনার মাসই নয়,কেবল শোককে শক্তিতে পরিনত করার ই নয়,কঠিন অভিজ্ঞতায় শিক্ষা নেবার মাস।যাক, যে গভীর শূন্যতা আগষ্টের কালোরাত জাতির জীবনে এনেছিলো,তা কখনোই আর পূরন হয়নি, হবেও না।বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসে১৯৭৫ সালের ১৫আগষ্ঠ ঘটে যাওয়া এমন নৃশংস হত্যাকান্ডের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস আর কখনো পৃথিবীতে নামেনি। সদ্য ভূমিষ্ট স্বাধীন একটি জাতির পিতাকে তার স্বাধীন করা দেশের সেনাবাহিনীর বিপথগামী সদস্যরা ঘুমের মধ্যে এসে শিশু, নারী সহ গোটা পরিবারকে বুলেট বিদ্ধ করে হত্যা করেছে!


সশস্ত্র খুনিদের কেউ ছিলো সদ্য সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত কেউ ছিলো জুনিয়র অফিসার ও জোয়ান। তাদের ট্যাংকে গোলাবারুদ ছিলোনা, তারা সেনাবাহিনীর অস্ত্র নিয়ে একটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষঢ়যন্ত্রের ব্লু প্রিন্টের বাস্তবায়নই ঘটায়নি, অসাংবিধানিক অবৈধ খুনি সরকার গঠন করেছিলো।সেই অভিশপ্ত কালো রাতের হত্যাকান্ড তিনবাহিনীর প্রধানরা প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছেন।তাই নয়,সকালে পিতার রক্তমাখা খুনিদের জঘন্য বেপরোয়া কর্মকান্ডও রুখতে পারেননি।উল্টো তিনবাহিনী সহ সকল সামরিক বেসামরিক বাহিনীর প্রধানরাও খুনিদের নেতৃত্বে বেতারভবনে গেছেন।ষঢ়যন্ত্রের আরেক চরিত্র তাহের উদ্দিন ঠাকুরের স্ক্রিপ্টে খুনিদের প্রতি আনুগত্যও প্রকাশ করেছেন।


বিকেলে প্রাসাদ ষঢ়যন্ত্রের ক্ষমতালোভী মীরজাফর খোন্দকার মোশতাককে খুনিরা প্রেসিডেন্ট বানিয়ে সরকার গঠন করলে বঙ্গভবনের সেই শপথ অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছেন।অথচ তখনো ধানমন্ডির বাড়িতে বঙ্গবন্ধুর রক্তাক্ত দেহ পড়েছিলো! খুনিদের বলা মীরজাফরের সূর্যসন্তান উপাধি শুনেছেন।অথচ তারা মুক্তিযুদ্ধে বীরোত্তম খেতাব প্রাপ্ত সেক্টর কমান্ডার থেকে উপসেনাপতিও!মুক্তিযুদ্ধের সেনাপতি জেনারেল ওসমানী যেখানে বাকশাল প্রশ্নে বঙ্গবন্ধুকে ছাড়লেন সেখানে অবৈধ খুনি মোশতাকের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা হলেন!রক্তাক্ত ঘাতকের হাত করমর্দন শলাপরামর্শ করলেন!হায়রে নিয়তি!


এই হত্যাকান্ড ছিলো একটি সদ্যস্বাধীন দেশের জাতিকে এতিম করে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ থেকে বিচ্যুত করার জাতীয় ও আন্তার্জাতিক ষঢ়যন্ত্রের সফল বাস্তবায়ন।সেদিন ছিলো একাত্তরের বিজয়ী শক্তির পরাজয়ের ক্রন্দন ,আর পরাজিত শক্তির বিজয় উল্লাসের পৈচাশিক আনন্দলাভের অশুভ সকাল।সেই কালোরাতে মুক্তিযুদ্ধের অর্জিত আদর্শ ও বিজয়কে পরাজিত করে ৭১'র হেরে যাওয়া শক্তির গ্লানিমুছে দেয়া হয়।বঙ্গবন্ধু নয় রাষ্ট্রের আত্নাকেই তারা হত্যা করে।সামরিক শক্তির পাশাপাশি রাজনৈতিক বা দলীয় শক্তিও প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছিলো।


এতো নেতা,এতো কর্মি,এতোবড় দল তবু নয়।বঙ্গবন্ধুর বেশীরভাগ মন্ত্রী অধিকাংশ প্রানের ভয়ে,কেউ লোভে, কেউ ষঢ়যন্ত্রে খুনি মোশতাকের মন্ত্রী সভায় যোগ দিলেন।১৫আগষ্ঠের সকাল হতে না হতেই এক খবরে দেশ শোকে স্তব্ধ। সেদিন খুনিরা তাদের প্রেসিডেন্ট বিশ্বাসঘাতক মোশতাককে দিয়ে এই হত্যাকান্ডের বিচার হবেনা বলে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিলো।আর সেনাশাসক জিয়াউর রহমান আইনে পরিনত করেছিলেন।৭৫পরবর্তী দীর্ঘ সময় ছিলো বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মিদের জন্য বড় দু:সময়ের কাল।অবশেষে মুজিব কন্যার নেতৃত্বে বিজয় এলে কালো আইন মুছে খুনিদের বিচার ও ফাঁসি হয়েছে।হয়নি কেবল হারিয়ে যাওয়া মুক্তিযুদ্ধের অর্জিত আদর্শ ফিরে পাওয়া।আর হয়নি বিশ্বের শোষিত মানুষের মহান নেতার শূন্যস্হান পূরন।জাতীয় শোক দিবসে আজ কত দল কত মানুষ শোকার্ত।আর যত দিন যায় জাতির পিতা আপন মহিমায় চীর সত্যের মতোন উদ্ভাসিত।


(পীর হাবিবুর রহমানের ফেসবুক থেকে)


বিবার্তা/আবদাল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com