
যতটা স্বার্থপরের মত রাস্তা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিলাম, ততটা স্বার্থপর নই আমি। আমরা কেউই নই। ইচ্ছে করে রাস্তার সব রিকশাওয়ালাকে ডেকে হাতে কয়েক হাজার করে টাকা গুঁজে দিই। ইচ্ছে করে রাস্তার টং দোকানিকে বাসায় ডেকে পেট ভরে খাইয়ে দিই। ইচ্ছে করে রাস্তার, ট্রাফিক সিগন্যালের ভিক্ষুককে, হকারকে অনেক চাল, ডাল কিনে দিই। কিন্তু এই মহানগরে আমার এই ইচ্ছাটাই সব নয়।
ফেসবুক পোস্ট তো লাইক পাওয়ার বাহানা মাত্র। আমি জানি এতে কারো একটা চুলও ছিঁড়া যাবে না। এমন এক চাকরি করি, আরো কয়েক মাস অফিসে না গেলেও বেতন চলে আসবে ব্যাংকে। সবাই তো আমার মত ভাগ্যবান না। একজন রিকশাওয়ালার কীভাবে সংসার চলছে। কীভাবে চলছে একজন মুচির সংসার। সিগারেট বিক্রেতা, চাওয়ালা, পান বিক্রেতা, এমনকি একজন পকেটমারের? ছুটা বুয়া, পত্রিকাওয়ালা, দুধওয়ালা কী করবেন এখন? কত দোকান বন্ধ থাকবে, কতদিন বন্ধ থাকবে কেউ জানে না।
এই লকডাউন আমি চেয়েছিলাম, আমরা চেয়েছিলাম। উপায় ছিল না। করোনা আমাদের করুণা করবে না। তাই সব কিছু বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলাম। এই মানুষগুলোর এখন কী হবে? আমরা তো এত আরামে আছি যে পহেলা বৈশাখের ভাতা পর্যন্ত ব্যাংকে চলে এসেছে। এবার পহেলা বৈশাখের বিলাসিতা নিশ্চয় দেখাবেন না কেউ। তাহলে চলুন পহেলা বৈশাখের ভাতার টাকাটা আমরা সব সরকারি চাকরিজীবীরা সাধারণ গরীব মানুষের কল্যাণে খরচ করি।
প্রিয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি তত্ত্বাবধানে কোনো জরুরী তহবিল হলে, যেখান থেকে নেত্রীর তত্ত্বাবধানে গরীব মানুষগুলোকে খাবার দেয়া হবে সেখানে আমি আমার পহেলা বৈশাখের ভাতা ফেরত দিতে রাজি আছি। সরকার নিজে থেকে কেটে রাখলেই ভালো হত। কিন্তু আমার মত অনেকের বেতন হয়ে গেছে। ব্যক্তিগতভাবে কিছু টাকা দিলে কোন আছর পরবে না। সমাজের কোটি কোটি টাকার মালিকরা যখন নিজেদের অর্ডার বাতিল নিয়ে জনমত তৈরিতে ব্যস্ত তখন আমাদের মত সীমিত আয়ের মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে।
শেখ আদনান ফাহাদের ফেসবুক থেকে...
বিবার্তা/জহির
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]