দেশে প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর পাশাপাশি সমতাও বাড়ানো সম্ভব। সমতার ভিত্তিতে প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় জাতীয় কৌশল এবং সম্পদও আমাদের রয়েছে। আর এর ওপর ভিত্তি করেই আমরা একটি মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হব বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
সম্প্রতি চট্টগ্রামে হোটেল রেডিসন ব্লুতে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন আয়োজিত সিম্পোজিয়ামে অতিদারিদ্র্য বিষয়ক অধিবেশনে তিনি এ কথা বলেন। অধিবেশনে অতিদারিদ্র্য পরিমাপের পদ্ধতি বিষয়ে মূল নিবন্ধন উপস্থাপন করেন বিশ্বব্যাংকের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. ইসমাইল সেরাগেল্ডিন।
সাবেক গভর্নর বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির সবচেয়ে বড় অর্জনগুলোর অন্যতম হলো উল্লেখযোগ্য মাত্রায় অতিদারিদ্র্য কমিয়ে আনা। তবে এখনও দেশের ১২.৯ শতাংশ মানুষ (প্রায় দুই কোটি মানুষ) দারিদ্র্যের নিম্ন সীমার নিচে বসবাস করছেন। আর তাই সরকারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় গৃহীত উদ্যোগগুলোর পেছনের অন্যতম মূলনীতি হিসেবে রয়েছে অতিদারিদ্র্য বিমোচন।
২০২১ সালের মধ্যে দেশের অতিদারিদ্র্যের হার ৪ শতাংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারিত হয়েছে। নগরাঞ্চলে অতিদারিদ্র্য কমানো, তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সামাজিক নিরাপত্তার উদ্যোগগুলোর দক্ষ ও কার্যকর বাস্তবায়নকে অতিদারিদ্র্য মুক্তির পথে প্রধানতম চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন ড. আতিউর। তাঁর মতে এ জন্য দাতা সাহায্য ও বিচ্ছিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ওপর নির্ভলশীলতা থেকে সরে এসে সকল খাতের জন্য নিজস্ব সম্পদ ও পরিকল্পনার ভিত্তিতে মূলধারার প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি বলেন, অতিদিরদ্র পরিবারগুলোর ভাগ্যোন্নয়নের জন্য দক্ষ ও কার্যকর সরকারি বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি অতিদরিদ্র পরিবারের পেছনে গড়ে মাত্র ৫০০ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করলেই পরিবারটি উঠে আসতে পারে। মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস, দরিদ্র-বান্ধব ব্যাংকিংয়ের মতো বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে বাংলাদেশে আর্থিক অন্তর্ভূক্তির সুফল ইতোমধ্যেই দৃশ্যমান। এছাড়াও কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং তরুণ কর্মী বাহিনীকে যথাযথভাবে কাজে লাগানোর জন্য কারিগরী শিক্ষারও ব্যাপক প্রসার ঘটানো প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
ড. আতিউর রহমান বলেন, সরকার ও বেসরকারি খাতের যৌথ উদ্যোগে অতিদারিদ্র্য মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার এখনই সময়। কারণ, একদিকে সরকার ‘কাউকে পেছনে না ফেলে এগিয়ে যাওয়া’র দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে, অন্য দিকে বেসরকারি খাত যথেষ্ট পরিণত হওয়ার ফলে বাজার পরিস্থিতিও এখন আমাদের অনুকূলে।
বিবার্তা/বিজ্ঞপ্তি/মৌসুমী
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]