
অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা আর খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যর্থ বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংককে (বিডিবিএল) একীভূত করছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক। পদ্মা-এক্সিমের পর আনুষ্ঠানিকভাবে এ নিয়ে চুক্তি করেছে রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক দুটি।
১২ মে, রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই চুক্তি সই হয়। এসময় সোনালী ব্যাংক ও বিডিবিএলের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। এই চুক্তির ফলে এখন ব্যাংক দুটির সম্পদ ও দায় পর্যালোচনা করা হবে। এরপরই নানা প্রক্রিয়া শেষে একীভূত হবে ব্যাংক দুটি।
বিডিবিএল সূত্র জানায়, মার্জারের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা ছিল বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের পর্ষদ অনুমোদন দিয়েছে। গত বুধবার বিষয়টি অনুমোদন হয়েছে সোনালী ব্যাংকের পর্ষদ সভায়।
দুটো সরকারি ব্যাংক একমত হওয়ায় মার্জ (একীভূত) হবে। ব্যাংক দুটির বোর্ডের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করার পরে আজ চুক্তি হলো। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী মার্জার প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপ শুরু হবে।
চুক্তি স্বাক্ষর শেষে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম জানান, এই মুহূর্তে তার ব্যাংকের আমানত ১ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। অপর দিকে বিডিবিএলের আছে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা, যা প্রায় ৫০ ভাগের ১ ভাগ। একই অবস্থা ঋণের ক্ষেত্রেও। কাজেই এটার খুব বেশি প্রভাব সোনালী ব্যাংকের ওপর পড়বে না।
আফজাল করিম আরও বলেন, বিডিবিএলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শঙ্কিত বা আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমাদের প্রায় আট হাজার কর্মী আছেন, তারপরও অনেক লোকবল প্রয়োজন। আর বিডিবিএলের ছয় শর মতো কর্মী আছেন। এ জন্য তাঁদের শঙ্কার কিছু নেই। ব্যাংকটি আরও সবল হবে; অডিট ফার্ম নিয়োগ নিয়ে পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী বলেন, অনেক চিন্তাভাবনা করেই আমরা বিডিবিএলকে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা কোনো চাপের মুখে না, নিজেরাই আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের দুই ব্যাংকের দুই ধরনের অভিজ্ঞতা আছে। সেগুলো কাজে লাগিয়ে আমরা এগিয়ে যাব।
বিডিবিএলের চেয়ারম্যান শামিমা নার্গিস বলেন, বিডিবিএলের চার সূচকের মধ্যে শুধু খেলাপি ঋণ আদায়ে দুর্বলতা আছে। যা আগে ছিল ৪১ শতাংশ। এক বছরে তা কমিয়ে আমি ৩৪ শতাংশে নিয়ে এসেছি। ছয় মাসে আবার খেলাপি ঋণের হার ৩৪ থেকে ৫-১০ বা ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব না। সময় পাওয়া গেলে এই সমস্যাও কাটিয়ে ওঠা যেত; তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে একীভূত হতে হচ্ছে।
বিডিবিএলের কর্মীরা একীভূত না হতে ইতিমধ্যে খোলাচিঠি দিয়েছেন। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নার্গিস বলেন, এখানে দুই ব্যাংকের পর্ষদ মিলে একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা অনেক কিছু বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেটা ভালো হয়, সেটাই করা হয়েছে।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]