দেড়শো গ্রাহকের ১৫ লাখ টাকা ফেরত দিলো ইভ্যালি
প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮:৫১
দেড়শো গ্রাহকের ১৫ লাখ টাকা ফেরত দিলো ইভ্যালি
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

নতুনভাবে ব্যবসা শুরুর আগে গ্রাহকদের পাওনা টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি করেছিলেন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, গ্রাহকের পাওনা টাকা ফেরত দিতে শুরু করেছে দেশের শীর্ষ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটি।


৪ ফেব্রুয়ারি, রবিবার সকালে টিসিবি ভবনে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠানে দেড়শ গ্রাহককে ১৫ লাখ টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। বাকি টাকাও ফেরত দেয়ার ঘোষণা এসেছে।


অধিদফতরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামানের উপস্থিতিতে ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল গ্রাহকদের হাতে পাওনা টাকা তুলে দেন।


তিনি বলেন, ইভ্যালি ব্যবসা করতে পারলে টাকাও ফেরত দিতে পারবে। জেলে আটকে রাখলে টাকা পাওয়া সম্ভব না। ইভ্যালিকে ব্যবসা চালাতে হলে আমাদের অভিযোগ নিষ্পত্তি চলমান প্রক্রিয়াতে শেষ করতে হবে।


ইভ্যালি নতুন করে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরুর পর তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আনুষ্ঠানিকভাবে ভোক্তা অধিকারে থাকা অভিযোগ নিষ্পত্তি শুরু করলো। এসব অভিযোগ নিষ্পত্তির আগে ভোক্তা-অধিকারে ইভ্যালির বিরুদ্ধে ৬ হাজার ৫৯৬টি অভিযোগ ছিল।


গ্রাহকের টাকা ফেরত দেয়ার বিষয়ে ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মাদ রাসেল বলেন, আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ভোক্তা-অধিকারে থাকা অভিযোগগুলো নিষ্পত্তি শুরু করলাম। প্রতি মাসে ব্যবসায়িক মুনাফার অংশ থেকে নির্দিষ্ট সংখ্যক অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হবে। আমরা এখন যে পদ্ধতিতে ব্যবসা করছি এতে করে খুব দ্রুতই সকলের টাকা পরিশোধ করা সম্ভব হবে।


তিনি আরও বলেন, যারা অভিযোগ করেছে শুধু তাদের নয়; যারা টাকা পাবেন এমন সবার টাকাই পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করা হবে। এ জন্য আমরা ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব), বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সঙ্গে আলাপ করে শিগগির ঘোষণা দেবো।


অনুষ্ঠানে জাতীয় ভোক্তা অধিকার পরিচালক (কার্যক্রম ও গবেষণাগার) ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন, কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরসহ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।


২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ব্যবসায় নেমে বিশাল ছাড় দেওয়ার চমক দেখাতে গিয়ে আড়াই বছরেই ক্রেতা ও পণ্য সরবরাহকারীদের কাছে ৫৪৩ কোটি টাকার দায়ে পড়ে ইভ্যালি।


তবে সেই হিসাবে আস্থা না পাওয়ার কথা জানিয়ে বিভিন্ন সংস্থার তথ্যের বরাত দিয়ে কোম্পানিটি এক হাজার কোটি টাকারও বেশি দায়দেনায় পড়েছে বলে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তখন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন। তবে নানা জটিলতার কারণে এসব বিষয়ে কোনো পক্ষই চূড়ান্ত কোনো তথ্য হাজির করতে পারেনি।


রাসেল গ্রেফতার হওয়ার এক মাসের মধ্যে ইভ্যালির প্রধান সার্ভারটিও বন্ধ হয়ে যায়। এরপর দায়দেনার হিসাব আর সামনে এগোনো যায়নি।


এক গ্রাহকের করা মামলায় ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেফতার করেছিল র‍্যাব। এরপর তাদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।


ইভ্যালির পুনর্গঠন হিসাব-নিকাশের সুবিধার্থে তার স্ত্রী শামীমাকে এক বছরের মাথায় শর্ত সাপেক্ষে জামিন দিয়েছিল আদালত। আর রাসেল মুক্তি পান গত ১৯ ডিসেম্বর।


গ্রেফতার হওয়ার আগে ও পরে এই দম্পতির বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতি ও অন্যান্য প্রতারণার দায়ে দেশে সাড়ে ৩০০ এর অধিক মামলা হয়েছিল। এসব মামলার মধ্যে বেশ কয়েকটিতে রাসেলকে গ্রেফতার দেখানো হয়।


রাসেল মুক্তি পাওয়ার আগে থেকেই ইভ্যালি ব্যবসা শুরু করে। তবে এখন আর অগ্রিম টাকা নিয়ে নয়, ক্যাশ অন ডেলিভারিতে পণ্য বিক্রি করছে তারা।


রাসেলের ভাষ্য অনুযায়ী, বন্ধ হওয়ার আগে রমরমা পরিস্থিতিতে ইভ্যালির ইউনিক কাস্টমার ছিল ৪২ লাখ। নতুন পদ্ধতিতে ইউনিক গ্রাহকের সংখ্যা ২ লাখ ৭৪ হাজারে পৌঁছেছে।


বর্তমানে ১২০ জন লোকবল নিয়ে চলছে ইভ্যালি। তাতে মাসে ৪০ লাখ টাকা খরচ গুনেও মাস ছয়েক ধরে আয়-ব্যয় সমান সমান (‘ব্রেক ইভেনে’) পর্যায়ে রয়েছে কোম্পানিটি। পরে মুনাফার মুখও দেখে।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com