মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্যাসোলিন মজুত বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের চাহিদা নিয়ে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ। এতে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কমে ৬ মাসে ঠেকেছে সর্বনিম্নে।
আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তথ্য বলছে, মার্কিন গ্যাসোলিনের মজুত প্রত্যাশার তুলনায় অনেক বেশি বেড়ে গেছে। এটি বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের চাহিদা নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। ফলে বুধবার (৬ ডিসেম্বর) অপরিশোধিত তেলের দাম প্রায় ৪ শতাংশ পড়ে গেছে। এতে চলতি বছরের জুন মাসের পর সর্বনিম্নে নেমেছে দাম।
এদিন ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ২.৯০ ডলার বা ৩.৮ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি নেমেছে ৭৪.৩০ ডলারে। অন্যদিকে ইউএস ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুডের দাম কমে নেমে গেছে ৭০ ডলারের নিচে। বুধবার ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ২.৯৪ ডলার বা ৪.১ শতাংশ কমে প্রতি ব্যারেল ঠেকেছে ৬৯.৩৮ ডলারে।
এদিকে, বিওকে ফিনান্সিয়াল ট্রেডিং-এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেনিস কিসলার জানান, ‘চাহিদার প্রভাবেই জ্বালানির বাজারে এমন অবস্থা। বাজার বর্তমানে সরবরাহকেন্দ্রিকের চেয়ে বেশি চাহিদাকেন্দ্রিক।’
এদিকে, রেটিং এজেন্সি মুডিসের চীনের এ-১ রেটিং স্থিতিশীল থেকে নেতিবাচক করে দেয়ার এক দিন পর চীনের অর্থনীতি ও দেশটির বাজারে ভবিষ্যতে জ্বালানির চাহিদা নিয়েও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে বৈশ্বিক জ্বালানির বাজারমূল্যে।
এদিকে, এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বলেছে, গত সপ্তাহে ইউএসের গ্যাসোলিন মজুত বেড়েছে ৫.৪ মিলিয়ন ব্যারেল। এ হার ১ মিলিয়ন ব্যারেল হবে বলে অনুমান করছিলেন বিশ্লেষকরা। সুতরাং তা বিশ্লেষকদের অনুমানের তুলনায় অনেক বেশি। তাছাড়া বর্তমানে মার্কিন গ্যাসোলিনের দাম ২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে রয়েছে।
এ বিষয়ে অ্যাগেইন ক্যাপিটাল এলএলসির পার্টনার জন কিল্ডফ বলেছেন, ‘এটি গ্যাসোলিনের মৌসুম নয়। তাছাড়া থ্যাংকসগিভিংয়ের ছুটির কারণে গত সপ্তাহের শেষের দিকে এর চাহিদা কম ছিল।’
তাছাড়া মার্কিন ডলারের মানও বিগত দুসপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। ডলারের মান বেশি থাকলে সাধারণত অন্যান্য মুদ্রায় তেল কিনতে হলে বিভিন্ন দেশকে বেশি পরিমাণে অর্থ গুনতে হয়। ফলে তাদের জন্য ব্যয়বহুল হয়ে ওঠে জ্বালানি তেল।
উল্লেখ্য, বিশ্বের শীর্ষ তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো ‘দ্য অর্গানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম কান্ট্রিস’, যা ওপেক নামে পরিচিত। আবার ওপেকের বাইরে অন্যান্য তেল উৎপাদনকারী দেশ ও ওপেক সদস্যদের একত্রে ওপেক প্লাস নামে অভিহিত করা হয়।
গত ৩০ নভেম্বর ওপেক প্লাসের সদস্যরা সিদ্ধান্ত নেন যে, আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকে বিশ্ববাজারে দৈনিক প্রায় ২.২ মিলিয়ন ব্যারেল তেল কম সরবরাহ করা হবে। এর মধ্যে সৌদি আরব ও রাশিয়ার স্বেচ্ছায় দৈনিক ১.৩ মিলিয়ন ব্যারেল তেল কম উৎপাদনের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
কিন্তু ওপেকের সরবরাহ কমানোর সিদ্ধান্তের পরও ২৯ নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত জ্বালানি তেলের দাম কমেছে প্রায় ১১ শতাংশ।
বিবার্তা/মাসুম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]