টাঙ্গাইলে বাঁশ-বেতের তৈরি হস্তশিল্প রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে
প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৪:০৩
টাঙ্গাইলে বাঁশ-বেতের তৈরি হস্তশিল্প রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

টাঙ্গাইলে বাঁশ-বেতের তৈরি হস্তশিল্প পণ্য পরিবেশবান্ধব হওয়ায় সুনাম রয়েছে দেশ জুড়ে। দিন দিন এর চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে এসব পণ্য। অপরদিকে বাঁশ-বেতের শিল্পের আরও সম্প্রসারণ করতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে জেলার ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন।


সরেজমিনে দেখা যায় দেলদুয়ার উপজেলার ডুবাইল ইউনিয়নের বর্ণী, প্রয়াগজানী ও কোপাখী গ্রামে বাঁশের তৈরি হস্তশিল্পের কাজ বেশি হচ্ছে। সেখানে দেখা যায় প্রত্যেক বাড়িতে নারী পুরুষ বাঁশ ও বেত দিয়ে বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী তৈরি করছেন। দেখে মনে হয় পুরো গ্রামই যেন কুটির শিল্পের কারখানা।


এ শিল্পের প্রধান উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করছেন আন্তর্জাতিক কারু শিল্পী নূরুন্নবী। এই নূরনবী বর্ণী দক্ষিণ পাড়ায় ‌‘ব্যাম্বো ক্রাফট’ নামে একটি কারখানাও গড়ে তুলেছেন। সেখানে প্রায় ৬০/৭০ জন নারী পুরুষ প্রতিদিন কাজ করেন।


স্থানীয় কারুশিল্পরা বলেন, আমাদের এলাকায় প্রত্যক বাড়িতেই নারী পুরুষরা এ কাজ করে থাকেন। নারীরা তাদের বাড়ির কাজের পাশাপাশি শিল্পের কাজ করেন। তাতে প্রায় মাসে নারীরাই চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা বাড়তি টাকা উর্পাজন করে থাকেন।


কারুশিল্পের সিরাজ মিয়া বলেন, আমি এই শিল্পের সাথে জড়িত অনেক বছর যাবত। এই কাজ করে ছেলে মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়েছি। তারা এখন চাকরি করে। আমার বয়স হয়েছে ছেলে মেয়েরা কাজ করতে বারণ করে। আমার কাছে সব জানাশোনা থাকাতে এ পেশা ছাড়তে মন চায় না। আগে পণ্য তৈরি করে বিক্রির জন্য দৌড়াদৌড়ি করতে হত । এখন পাশেই ‘ব্যাম্বো ক্রাফট’ নামে একটি কারখানাও গড়ে উঠেছে। সেখানেই পণ্যগুলো বিক্রি করতে পারছে এলাকার সবাই। এটি বিক্রি করাও একটি জটিল কাজ ছিল।


এবিষয়ে কারু শিল্পী নূরুন্নবী জানান, ১৯৯০ সাল থেকে তিনি হস্তশিল্পের কাজ করছেন। ২০০৪ সালে তিনি এই কারখানাটি গড়ে তুলেন। বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন ধরনের বাস্কেট, টেবিল ল্যাম্প, প্লেস ম্যাট, বিভিন্ন ধরনের ট্রে, মোড়া, ফলের ঝুড়ি, টিস্যু বক্স, গয়নার বাক্স, জানালার পর্দা, ওয়েস্ট পেপার ঝুড়ি, ড্রিংকস বোতলের ঝাড়সহ নানা ধরনের সৌখিন পণ্য তৈরি করছেন।


এসব পণ্য রাজধানী ঢাকার বড় বড় শপিং মলগুলোতে বিক্রি করে থাকি। এছাড়াও বিভিন্ন রপ্তানিকারকদের মাধ্যমে প্রায় দশ থেকে বারটি দেশে তার বাঁশ বেতের তৈরি হস্তশিল্প রপ্তানি হচ্ছে।


তিনি আরো বলেন সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা পেলে এ শিল্পকে আরও এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে পাশাপাশি বেকারত্ব দূর হবে বলে মনে করেন। এই এলাকার মানুষ এখন বেকার হয়ে বসে থাকে না। প্রায় সবাই এখন বাশঁ-বেতের কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন। হচ্ছেন আর্থিকভাবে সাবলম্বী।


এনিয়ে জেলার ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. জামিল হুসাইন বলেন, টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী বাঁশ-বেতের শিল্পের আরও সম্প্রসারণ করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন যদি কোন ব্যাক্তি এবিষয় ঋনের জন্য প্রয়োজন মনে করেন তাকে সহজ শর্তে ঋন দেওযারও ব্যবস্থা করবেন।


বিবার্তা/ইমরুল/জবা

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

পদ্মা লাইফ টাওয়ার (লেভেল -১১)

১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,

বাংলামোটর, ঢাকা- ১০০০

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com